বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম জনপ্রিয় গণপরিবহণ হল বাস। বহু মানুষ আছেন যারা রোজ বাসে চেপে নিজেদের গন্তব্যে পৌঁছন। সরকারি বাসের পাশাপাশি অসংখ্য বেসরকারি বাসও চলে রাজ্য জুড়ে। তবে মাঝেমধ্যেই আবার কানে আসে মর্জিমতো ভাড়া (Bus Fare) নেওয়ার অভিযোগ। এবার তাতে লাগাম টানতে বিরাট নির্দেশ রাজ্যের। গত বছর বেসরকারি বাসের ভাড়া নিয়ে একটি মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের তরফ থেকে সম্প্রতি বাসমালিক সংগঠনগুলিকে নতুন করে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বেসরকারি বাসের (Bus) ভেতর সরকার অনুমোদিত ভাড়ার স্পষ্ট তালিকা টাঙাতে হবে। সেই সঙ্গেই যাতে সহজে অভিযোগ জানানো যায়, এমন ব্যবস্থাও রাখতে হবে। বলা হয়েছে, বাসের ভেতর ভাড়ার তালিকা এমনভাবে টাঙাতে হবে যাতে সহজেই তা সকলে দেখতে পান। কোথাও যদি নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি নেওয়া হয়, তাহলে যাত্রীদের কাছে অভিযোগ (Complaint) জানানোর ব্যবস্থাও রাখার কথা বলা হয়েছে।
এদিকে বাসমালিক সংগঠনগুলি নতুন করে জারি হওয়া এই নির্দেশের কারণে সিঁদুরে মেঘ দেখছে। ভাড়া নিয়ে সরকার যদি মাত্রাতিরিক্ত কড়াকড়ি করে তাহলে রাস্তা থেকে বাস উঠে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। উল্লেখ্য, গত বছর কলকাতা হাই কোর্টে প্রত্যুষ পাটোয়ারি একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। সেই মামলার রায়দানের সময় প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের তরফ থেকে বেসরকারি বাসে বাড়তি ভাড়া নেওয়া রুখতে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ ‘সময়ের চাকা ঘুরছে…’, শাহজাহানের হাতে খুন বাবা, উচ্চমাধ্যমিকে ৪৮৩ পাওয়া প্রীতমের পাশে শুভেন্দু
এর মধ্যে অন্যতম ছিল বাসের ভেতর ভাড়ার তালিকা টাঙানো এবং অভিযোগ জানানোর জন্য আলাদা খাতা রাখা। সেই সঙ্গেই, পরিবহণ দফতরে যাতে সহজে অভিযোগ জানানো যায়, তাই হেল্পলাইন নম্বরখোলার কথাও বলা হয়েছিল। একইসঙ্গে বলা হয়েছিল, কোনও জায়গা থেকে বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ আসলে দফতরের আধিকারিকরা যাতে সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখে অভিযুক্ত/অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে পারেন সেটার ব্যবস্থাও রাখতে হবে।
পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, পুরনো এই নির্দেশ সম্বন্ধেই ফের একবার স্মরণ করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আসলে অতিমারী পরবর্তী সময়ে জ্বালানি সহ নানান খরচ বেড়ে যাওয়ায় বেসরকারি বাসে অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হচ্ছে যাত্রীদের। সরকারিভাবে বাসের ভাড়া বৃদ্ধি না হলেও, যাত্রীদের বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে। বাসমালিক সংগঠনগুলি এই ‘লুকোচুরি’ খেলার পক্ষপাতী নয় বলে খবর।
সরকারি এই নির্দেশের প্রেক্ষিতে বাস মালিক সংগঠনের তরফ থেকে পাল্টা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে ‘অল বেঙ্গল বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, তাঁরা যে মামলা দায়ের করেছিলেন তার প্রেক্ষিতে হাই কোর্ট ভাড়ার বিষয়ে বাসমালিক সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনা করে তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলেছিল। তবে ওই মামলায় রাজ্য তাদের অবস্থান না জানানোয়, আবার আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদিকে বাসের বর্ধিত ভাড়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নানান ধরণের খরচ বাড়ার কারণে গোটা দেশে যাত্রী ও পণ্য পরিবহণের ভাড়া নির্ধারণের একটি নীতি আছে। সেটি উপেক্ষা করায় পরিষেবা ভেঙে পড়েছে। যে কারণে বাসশিল্পের সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা তো বটেই, আমজনতাও অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে।