বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ১৯৯৭ সালের ঘটনা। সেই বছর ৬ ডিসেম্বর রাতে দু’জনকে খুন (Murder) করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছিল ওয়াটগঞ্জ থানার অধীন রামকমল স্ট্রিটে। সেই সঙ্গেই একজন আহত হন। এবার এই ঘটনাতেই দোষী সাব্যস্ত একজনকে জেলমুক্তির নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। মঙ্গলবার বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ (Justice Tirthankar Ghosh) এই নির্দেশ দিয়েছেন।
৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তির নির্দেশ হাইকোর্টের (Calcutta High Court)
জানা যাচ্ছে, ১৯৯৭ সালের জোড়া খুনের ঘটনায় সাজাপ্রাপ্ত ওই আসামির নাম শঙ্কর সুন্দর দত্ত ওরফে টুটি। মামলার বয়ান অনুসারে, প্রায় ২৮ বছর আগের এই ঘটনায় শঙ্কর সহ মোট ৭ জনের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ উঠেছিল। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগের পাশাপাশি বিস্ফোরক আইনের ৩ ধারায় মামলা রুজু করা হয়। জল গড়ায় আদালত অবধি।
২০০১ সালে সকল অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস করে দিয়েছিল নিম্ন আদালত। পরের বছর উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয় তৎকালীন রাজ্য সরকার (Government of West Bengal)। ২০০৬ সালে শঙ্কর ওরফে টুটি সহ সকল অভিযুক্তকে জোড়া খুনের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাবাসের নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গেই ৫০০০ টাকা জরিমানাও করা হয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ ফের SSC-র ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন! কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হল মামলা, ২৬,০০০ কাণ্ডের মাঝেই বড় খবর
হাইকোর্টের সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে পরের বছরই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন শঙ্কর সহ তিনজন। তবে তাতে কোনও লাভ হয়নি। এরপর বারবার সাজা কমানোর আর্জি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালের কাছে আবেদন জানাতে থাকেন শঙ্কর। সেনটেন্স রিভিউ বোর্ডের (Sentence Review Board) কাছেও আবেদন জানান। ২০২১ সালে তাঁর আর্জি প্রত্যাখান করে বোর্ড। এরপর উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন শঙ্কর।
মামলার আবেদনে জানানো হয়, ২০০৬ সাল থেকে তিনি জেলবন্দি। জেলে তাঁর ব্যবহার সন্তোষজনক ও এখনও অবধি মোট ১২ বার তাঁকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। জোড়া খুন কাণ্ডে জেলবন্দি ওই ব্যক্তি জানান, ২০২০ সালে রিভিউ বোর্ডের কাছে আবেদন করলেও তাঁর আর্জি খারিজ করে দেওয়া হয়। অবশেষে বোর্ড তাঁর আর্জি গ্রহণ করেছে।
শঙ্করের আবেদনের ভিত্তিতে তাঁর যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা কমিয়ে ২১ বছর করা হয়। এরপরেই ওই আসামিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তির নির্দেশ দেন হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। রাজ্য সেনটেন্স রিভিউ বোর্ডের প্রেক্ষিতে আবেদনকারী আলিপুর আদালতের বিচারকের কাছে মুক্তির জন্য আর্জি জানাবেন। এরপর নিম্ন আদালতের তরফ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আবেদনকারী শঙ্করকে মুক্তির নির্দেশ দেওয়া হবে।
জানা যাচ্ছে, ১৯৯৭ সালের জোড়া খুন কাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত ওই আসামির বাড়িতে বৃদ্ধ মা-বাবা রয়েছেন। বাবার বয়স ৮৪ ও মায়ের বয়স ৭৪ বছর। দু’জনেই অসুস্থ। শঙ্কর মা-বাবার একমাত্র সন্তান। দীর্ঘ ২১ বছর জেল খাটার পর এবার তাঁকেই জেলমুক্তির নির্দেশ দেওয়া হল। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। মঙ্গলবার এই নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি ঘোষ।