বাংলা হান্ট ডেস্কঃ টাকা পয়সা জমানোর জন্য অনেকের কাছই অত্যন্ত বিশ্বস্ত একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান হল পোস্ট অফিস। বছরের পর বছর ধরে এই প্রতিষ্ঠানে টাকা জমিয়ে থাকেন বহু মানুষ। কিন্তু এবার এই পোস্ট অফিসে টাকা জমিয়েই বিপাকে পড়লেন এক গ্রাহক। বর্ধমানের জামালপুরের পোস্ট অফিসে টাকা লোপাঠের মামলা আগেই গড়িয়েছে হাইকোর্টে (Calcutta High Court)। এবার এই মামলায় সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
পোস্ট অফিস কাণ্ডে বিরাট নির্দেশ হাইকোর্টের (Calcutta High Court)
প্রথমদিকে এই মামলার তদন্ত করছিল পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ। বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে। আদালতে (Calcutta High Court) পুলিশের তদন্ত রিপোর্ট ও কেস ডায়েরি দেখার পর তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন জাস্টিস ঘোষ। এরপরেই এই মামলার তদন্তভার এডিজি সিআইডিকে হস্তান্তর করে দিয়েছেন তিনি।
আদালত (Calcutta High Court) এদিন আরও নির্দেশ দিয়েছে, এই মামলায় আগের দায়িত্বে থাকা দুই আইওকে সিআইডি এডিজিকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। ওই দুই অফিসার এই তদন্তে কি কি পদক্ষেপ করেছেন সেই ব্যাপারে তাদের থেকে ব্যাখ্যা নিতে হবে। সময় বেঁধে দিয়ে আদালতের তরফে এদিন নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আগামী ৬ মাসের মধ্যে এই তদন্ত শেষ করতে হবে। একইসাথে এদিন স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে,এই মামলার তদন্তের জন্য একজন অ্যান্টি করাপশন বিভাগের দক্ষ অফিসারকে নিয়োগ করতে হবে।
আরও পড়ুন: মমতার গড়েই মমতাকে হারানোর ছক? আগে থেকেই পরিকল্পনা, বিরাট ঘোষণা শুভেন্দুর
ঠিক কি ঘটেছিল?
জানা গিয়েছে, বর্ধমানের জামালপুরের বাসিন্দা আবেদনকারী সুরজিৎ পেশায় ফল বিক্রেতা। তাঁর বাবা রণজিৎ পেশায় একজন পাল মৃৎশিল্পী। ২০২১ সালে পোস্ট অফিসে তাঁরা দুজনে ১২ লক্ষ টাকা জমা করেছিলেন। এরপর সুরজিৎ বাবু ২০২২ সালে তাঁর মায়ের চিকিৎসার জন্য ওই টাকা তোলার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাকে সেই টাকা তুলতে বাঁধা দেয় পোস্টমাস্টার। পোস্ট অফিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে জামালপুর থানার দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি।
অভিযোগ ওঠে পুলিশের তরফে কোনো পদক্ষেপ করা হয়নি। টাকা না পাওয়ায় অসুস্থ মায়ের চিকিৎসা করাতেও পারছেন না তিনি। এই মামলা গড়ায় হাইকোর্টে। এরপর পুলিশের রিপোর্ট তলব করে আদালত। সেই রিপোর্টের প্রেক্ষিতে এদিন আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল,’লোকের খাটনির টাকা। জমাতে টাকা রাখছে পোস্ট অফিসে, আর তা লোপাট হয়ে যাচ্ছে! পুলিশ কিছুই করছে না। এ ভাবে লোপাট হয়ে গেলে, আর পুলিশ কিছু না করলে মানুষের ভরসা উঠে যাবে।’ একইসাথে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিচারপতি এদিন বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকারি প্রতিষ্ঠানে টাকা রেখে যদি এই ভাবে মানুষ প্রতারিত হয় তাহলে মানুষ কোথায় যাবে!’