অগ্নিগর্ভ মুর্শিদাবাদ! শুভেন্দুর মামলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট

Published On:

বাংলাহান্ট ডেস্ক : ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠছে রাজ্যের একাধিক জায়গায়। বিগত কয়েক দিন ধরে মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে। অশান্তি থামিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তৎপর রাজ্য প্রশাসন (Calcutta High Court)। শুক্রবার সামশেরগঞ্জে অশান্তি সামলাতে নামাতে হয় বিএসএফ। এবার কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়ে হাইকোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি নিয়ে হাইকোর্টে (Calcutta High Court) শুভেন্দু

শনিবার বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি রাজা বসু চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চে (Calcutta High Court) চলছে শুভেন্দু অধিকারীর আবেদনের শুনানি। এদিন বিচারপতি প্রশ্ন করেন, মুর্শিদাবাদ ছাড়া কোন কোন জেলা স্পর্শকাতর? রাজ্যের আইনজীবীদের তরফে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় ১১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিচারপতি মন্তব্য করেন, অনেক অশান্তি হয়েছে। পুলিশ পারেনি বলেই তো বিএসএফ ডেকেছে। পালটা রাজ্যের তরফে দাবি করা হয়, এখন পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক। রাজ্যের অফিসাররাও যোগ্য।

Calcutta high court orders for central force in murshidabad

কী বলা হল শুনানিতে: শুভেন্দুর আইনজীবী পালটা দাবি করেন, পুলিশ পরিস্থিতি সামলাতে পারছে না। ধুলিয়ানে বোমাবাজি হয়েছে। বিএসএফ মোতায়েন করা উচিত। এরপরেই বিচারপতি (Calcutta High Court) প্রশ্ন করেছেন, পরিস্থিতি সামলাতে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য যদি রাজ্যকে সাহায্যের জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয় তবে রাজ্যের মত কী? ৩০ মিনিটের মধ্যে রাজ্যের কাছে রিপোর্ট জমা করার কথা বলেছে হাইকোর্ট।

আরো পড়ুন : WAQF-প্রতিবাদে রেল স্টেশনে তাণ্ডব! NIA তদন্ত চেয়ে রেলমন্ত্রীকে চিঠি শুভেন্দুর

শুনানির দ্বিতীয় পর্বে বলা হয়, আর্টিকেল ৩৫৫ ধারা অনুযায়ী রাজ্যের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলিতে যদি সমস্যা হয় তবে কেন্দ্র হস্তক্ষেপ করতে পারে। নাগরিকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা দরকার। পালটা রাজ্যের তরফে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিএসএফ, এডিজি, আইজি, ডিআইজি উপস্থিত রয়েছেন ঘটনাস্থলে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজন নেই। তিনি আরো কটাক্ষ শানিয়ে বলেন, রাজনৈতিক স্বার্থ চরিত্রে করতে মামলা করেছেন বিরোধী দলনেতা। প্যারা মিলিটারি ফোর্স মোতায়েন হলে রাজ্যের কোনো সমস্যা নেই, কিন্তু পুরোটাই রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন কল্যাণ।

আরও পড়ুন : অশান্তি-বিক্ষোভের আবহেই ব্যতিক্রমী চিত্র! বাংলার এই পড়শি রাজ্যে শুরু ওয়াকফ সম্পত্তির সমীক্ষা

যদিও শেষমেষ শুভেন্দুর দাবিই বহাল থাকল। মুর্শিদাবাদে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিল হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। হাইকোর্টের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং শান্তি বজায় রাখতে মুর্শিদাবাদে সিএপিএফ কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। রাজ্যের অন্যত্র অশান্তি হলেও মমোতায়েন করতে হবে বাহিনী। রাজ্য পুলিশের সঙ্গে শান্তিরক্ষায় একসঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সৌমেন সেন। তিনি আরো বলেন, এই ধরণের অভিযোগ যখন ওঠে তখন আদালত চোখ বন্ধ করে থাকতে পারে না। প্রকৃত অপরাধী যারা তাদের দ্রুত শনাক্ত করে কড়া পদক্ষেপ করার জন্যও বলেছেন তিনি। কোথায় কত বাহিনী এবং পুলিশ মোতায়েন থাকবে তা দুই নোডাল অফিসার এডিজি আইন-শৃঙ্খলা ও এডিজি সিআইএসএফ যৌথভাবে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন। ১৭ তারিখ পৃথকভাবে আদালতে রিপোর্ট জমা দিতে হবে রাজ্য ও কেন্দ্রকে।

Niranjana Nag

নীরাজনা নাগ, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। নারুলা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে স্নাতক পাশ করার পর সাংবাদিকতার সফর শুরু। বিগত ৫ বছর ধরে সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত।

X