বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির সম্মুখীন হন বহু মহিলা। দক্ষিণেশ্বরের হীরালাল মজুমদার মেমোরিয়াল কলেজ ফর উইমেনের এক অধ্যাপিকাকেও (Professor) এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল। এবার সেই মামলাতেই কড়া নির্দেশ দিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। কার্যত ‘ডেডলাইন’ বেঁধে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
কী নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)?
মামলার বয়ান অনুসারে, ২০১৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর ওই কলেজের ইংরেজি বিভাগের এক অধ্যাপিকা কর্মক্ষেত্রে নারীদের যৌন হয়রানির অভিযোগে সরব হয়েছিল। এক সহকর্মীর দ্বারা যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন। এরপর তিনি কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ আইনের আওতায় ওই সহকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। শুরু হয় তদন্ত।
কলেজের অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটি ওই অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছিল। তবে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য একটি প্রস্তাব গ্রহণ করে ওই কমিটি। দাবি করা হয়, ওই ঘটনা অভিযোগকারিণীর বাড়িতে ঘটেছিল, কর্মক্ষেত্রে ঘটেনি। সেই কারণে তাঁর সেই অভিযোগ বাতিল করে দেওয়া হয়। এছাড়া ওই অধ্যাপিকা ৬ বছর ধরে এই যৌন হয়রানির বিষয়টি উত্থাপন করেননি।
আরও পড়ুনঃ চক্রান্ত ছাড়া অসম্ভব! স্যালাইন কাণ্ডে বিস্ফোরক দাবি মমতার! তোলপাড় রাজ্য
এদিকে অভিযোগকারিণীর দাবি, তিনি একাধিকবার কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়েছিলেন। তবে কোনও সুরাহা হয়নি। এমনকি পুলিশও তাঁর অভিযোগের ক্ষেত্রে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ। এদিকে কমিটির তরফ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর অভিযুক্ত ব্যক্তি উল্টে নির্যাতিতার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সেই মামলায় অভিযুক্তের আবেদন খারিজ করে দেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। সেই সঙ্গেই কমিটির সিদ্ধান্তও বাতিল করে দেওয়া হয়। বিচারপতি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হয় না যে আবেদনকারীকে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল কিংবা নিষ্পত্তির প্রশ্নে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কারণ ক্ষমা চাওয়ার চিঠিতে তিনি অসম্মতি জানিয়েছেন’।
কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির এই ঘটনার কলেজের অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটির ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। উচ্চ আদালতের তরফ থেকে বলা হয়, এই ধরণের ঘটনার তদন্তকারী অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটি অভিযোগকারীদের কথা না শুনে সেটা বাতিল করতে পারে না। এরপরেই এই মামলায় ফের তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি সেনগুপ্ত। তাঁর নির্দেশ, ইনস্টিটিউট ও কমিটি ১২ সপ্তাহের মধ্যে সব পক্ষের কথা শুনে তদন্ত শেষ করবে।