বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) ফের ধাক্কা খেল রাজ্য (Governmet of West Bengal)। আদালতের পর্যবেক্ষণ, পুরবোর্ড যেভাবে ভাঙা হয়েছে সেটা ‘আইন বিরুদ্ধে’। এভাবে বোর্ড ভেঙে দেওয়া যায় না। রাজ্যের এক পুরসভায় প্রশাসক নিয়োগ বিষয়ক মামলায় এই পর্যবেক্ষণ বিচারপতি কৌশিক চন্দের (Justice Kausik Chanda)।
আর কী বলল হাইকোর্ট (Calcutta High Court)?
জানা যাচ্ছে, তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর পুরসভায় মোট ১৩ জন কাউন্সিলর রয়েছেন। এর মধ্যে জোড়াফুল শিবিরের ৬ জন ও কংগ্রেসের ১ জন কাউন্সিলর গত এপ্রিল মাসে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ঘোষণা করেন। পুর আইন অনুসারে, অনাস্থা প্রস্তাব যদি আনা হয় তাহলে চেয়ারম্যানকে তলবি সভা ডাকতে হয়।
তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রঘুনাথপুর পুরসভার চেয়ারম্যান সেই তলবি সভা ডাকেননি। ভাইস চেয়ারম্যানও তা ডাকেননি বলে খবর। এরপর পুর নিয়ম অনুসারে অনাস্থা প্রস্তাবে স্বাক্ষরকারী তিনজন প্রতিনিধি তলবি সভা ডাকার সিদ্ধান্ত নেন।
আরও পড়ুনঃ ২৬,০০০ চাকরি বাতিল, শুরু হয়েছে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া! এর মাঝেই SSC নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভার
তবে এই সভা ডাকার আগেই ১৯ মে পুরবোর্ড ভেঙে দেওয়া হয়। রাজ্যে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের তরফ থেকে একটি নির্দেশিকা জারি করে সেকথা জানানো হয়। এরপর প্রশাসক হিসেবে মহকুমা শাসক দায়িত্ব নেন। এরপর সেই নির্দেশের বিরোধিতা করে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন দীনেশ শুক্ল নামের এক বিজেপি (BJP) কাউন্সিলর।
আদালত সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছে, সোমবার এই মামলার শুনানিতে বারবার কাউন্সিলরদের দুর্নীতির বিষয়টিকে তুলে ধরছিলেন সরকারের তরফের আইনজীবী। মা ক্যান্টিন, স্বচ্ছ ভারত অভিযান থেকে শুরু করে রাস্তার আলো লাগানোর নামে কয়েক লক্ষ টাকা তছরুপ করেছেন কাউন্সিলররা। সেই জন্য এহেন ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ কাউন্সিলরদের হাতে যাতে কিছুতেই ক্ষমতা না ফেরানো হয়, সেই বিষয়ে সরকার পক্ষের আইনজীবীরা সওয়াল করেন। যদিও তাতে মান্যতা দেননি বিচারপতি চন্দ।
রাজ্যের প্রশাসক নিয়োগ বিষয়ক নির্দেশিকাকে এদিন নাকচ করে দেয় হাইকোর্ট। সেই সঙ্গেই পুরসভার কাউন্সিলরদেরই সর্বোচ্চ ক্ষমতা দেওয়া হয়। আদালত স্পষ্ট জানায়, পুর আইন মেনে আবার চেয়ারম্যান নির্বাচন করতে হবে।
একইসঙ্গে জাস্টিস চন্দ জানান, রঘুনাথপুর পুরসভার কাউন্সিলররা যদি কোনও অন্যায় করে থাকেন, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে নির্দিষ্ট নিয়ম আছে। সেটা মেনে পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। তবে জনপ্রতিনিধিদের কোনও রকম শোকজ না করে সরাসরি বোর্ড ভেঙে দেওয়া যায় না।
উল্লেখ্য, রঘুনাথপুর পুরসভার বোর্ড ভেঙে দেওয়া নিয়ে বেশ কিছু সময় ধরে টানাপড়েন চলছে। ইতিমধ্যেই জল গড়িয়েছে হাইকোর্ট (Calcutta High Court) অবধি। এবার তাতেই বড় নির্দেশ দিয়ে দিল আদালত।