বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত ৪ জুন সম্পন্ন হয়েছে ২০২৪ লোকসভা নির্বাচন। তবে তারপরেও রাজ্যের নানান প্রান্তে বিক্ষিপ্ত হিংসা চলছে। রাজ্য বিজেপির তরফ থেকে এমন অভিযোগ এনে দাবি করা হয়েছে, অন্তত দুর্গাপুজো অবধি পশ্চিমবঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকুক। এদিকে আবার কেন্দ্রীয় বাহিনী যদি অতদিন রাজ্যে থাকে, তাহলে তাঁদের থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্ত কোথায় হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠল কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta High Court)।
লোকসভা নির্বাচনের পর শিরোনামে উঠে এসেছে বাংলার ভোট পরবর্তী হিংসা (Post Poll Violence)। যদিও সেই পরিস্থিতি রুখতে এই মুহূর্তে রাজ্যে ৪০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী রয়েছে। নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে প্রথমে এই মঙ্গলবার অবধি বাংলায় বাহিনী রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে পরবর্তীতে হাই কোর্ট নির্দেশ দেয়, আগামী ২১ জুন অবধি রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী (Central Force) থাকবে।
এই পরিস্থিতিতে এই রাজ্যের বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় বাহিনী ‘দখল করে রেখেছে’ এই অভিযোগ তুলে উচ্চ আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাকারীর দাবি, রাজ্যের বহু বিদ্যালয়, কলেজে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যে কারণে পড়াশোনা শুরু করা যাচ্ছে না।
আরও পড়ুনঃ এই শেষ, আর নয়! ভোটে জিতেই ‘অবসর’ ঘোষণা TMC-র এই হেভিওয়েট সাংসদের!
কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবী কুমারজ্যোতি তিওয়ারি এই নিয়ে বলেন, এখন কেন্দ্রীয় বাহিনীকে রাখার দায়িত্ব রাজ্যের। বর্তমানে ২৩২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাহিনী রয়েছে। ৪০০ কোম্পানি বাহিনীর বেশিরভাগকেই অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত আবার পাল্টা দাবি করেন, ‘আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি তো উঠে গিয়েছে। তাহলে এখন কেন রাজ্য বাহিনী রাখার দায়িত্ব নেবে? কেন্দ্রের তাদের কোনও জায়গায় বাহিনী রাখা উচিত’।
মঙ্গলবার দুই পক্ষের যুক্তি, পাল্টা যুক্তি শোনে হাই কোর্টের বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। এরপর জাস্টিস ট্যান্ডন বলেন, ‘কেন্দ্র এবং রাজ্যের মতাদর্শ ভিন্ন হতে পারে। কিন্তু শিশুদের তো কোনও মতাদর্শ নেই। তাদের শিক্ষ্র কথা আগে ভাবতে হবে। এই ভাবে একে অপরের বিরুদ্ধে দায় না ঠেলে দিয়ে দু’জনকেই সদর্থক ভূমিকা নিতে হবে। বাহিনী রাখার কোনও বিকল্প স্থান খুঁজতে হবে’।
এই প্রেক্ষিতে কেন্দ্র এবং রাজ্য উভয়ের কাছেই রিপোর্ট তলব করেছে হাই কোর্ট। বিদ্যালয়ের পরিবর্তে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে কোথায় রাখা যায় তা জানতে চেয়েছে আদালত। আগামী তিনদিনের মধ্যে কেন্দ্র এবং রাজ্যকে এই প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে। আগামী ২১ জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।