বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত শিক্ষিকার 12 দিনের বেতন কেটে নেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আর সেই অভিযোগ সামনে আসতেই তার প্রধান পদ কেড়ে নেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে বরখাস্ত করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে শিক্ষকতার পদও খোয়াতে পারেন অভিযুক্ত ব্যক্তি এমনই নির্দেশ দিয়ে গতকাল রায় প্রকাশ করেছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি।
হুগলির ভদ্রেশ্বরের মহাত্মা গান্ধী বিদ্যাপীঠে ভূগোল নিয়ে অধ্যায়ন করান শিক্ষিকা সুনীতা শর্মা। ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার কারণে সম্প্রতি চিকিৎসা করাতে ভেলোরে গিয়েছিলেন সুনীতা দেবী। এই কারণেই বিদ্যালয় থেকে 12 দিনের ছুটিও নেন তিনি। অভিযোগ, এরপরেও ছুটি দিতে অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক অজয় কুমার যাদব এবং ছুটির দিন বাবদ মহিলার বেতন থেকে 8850 টাকা কেটে নেওয়া হয়।
সুনীতা দেবী অভিযোগ করেন যে, সম্প্রতি কেমোথেরাপির জন্য তিনি ভেলোরে রওনা দেন। এই সময় বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের নিকট ছুটির আবেদন করলে তাঁর বাড়িতে লোক পাঠিয়ে যাচাইও করা হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত তাঁকে ছুটি দেওয়া হয়না উল্টে পরের মাসে তাঁর বেতন থেকে 12 দিনের অর্থ কেটে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ তোলেন মহিলা।
তিনি আরো বলেন, “এর আগেও আমি এহেন ব্যবহারের শিকার হয়েছি। আমার প্রতি প্রধান শিক্ষক অতীতেও বিরূপ মনোভাব দেখিয়েছেন। সেই কারণেই 2019 সাল থেকে আমার বেতনের বৃদ্ধিও করেননি তিনি।”
এই সকল অভিযোগের ভিত্তিতেই অজয় কুমার যাদবের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন সুনীতা দেবী। এরপরেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে মামলাটি ওঠে এবং গতকাল শুনানি চলাকালীন প্রধান শিক্ষকের কাছে পুরো ঘটনার পিছনে কারণ জানতে চাওয়া হয়।
আদালত সূত্রের খবর, প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁকে দ্রুত পদ থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে শিক্ষকতার চাকরি কেড়ে নেওয়ার ব্যাপারেও মত প্রকাশ করেন অভিজিৎ বাবু।
সুনীতা দেবীর হয়ে মামলা লড়া আইনজীবী রণজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “অসুস্থতার কারণে সব মিলিয়ে 485 দিনের ছুটির বেতন পাননি সুনীতা দেবী। সেই প্রাপ্য বেতন মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ এদিন দিয়েছেন বিচারপতি। ওই মহিলাকে যেভাবে হেনস্থা করা হয়েছে, তা বুঝতে পেরে বিচারপতি এদিন রায় দিয়েছেন, তাতেই আমরা খুশি।”