‘মেয়েদের জন্য আইন রয়েছে কিন্তু সবাই তার কাছে পৌঁছতে পারে না’, আক্ষেপ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সোমবার রাজা রামমোহন রায়ের (Raja Ram Mohan Roy) ২৫১ বছরের জন্মদিন। তার আগে শনিবার উত্তর কলকাতার রামমোহন গ্রন্থাগারে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Ganguly)। রামমোহন রায় স্মারক বক্তৃতা দিতে গিয়ে এদিন মেয়েদের জন্য আইন নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করলেন বিচারপতি। মেয়েদের জন্য আইন আছে কিন্তু সব মেয়ে সে আইনের কাছে পৌঁছতে পারেন না, এই নিয়ে আক্ষেপ শোনা গেল জাস্টিস গাঙ্গুলির গলায়।

এদিন ভারতীয় সংবিধান ও মেয়েদের অধিকার নিয়ে বক্তব্য রাখেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেই প্রসঙ্গেই ১৯৬১-র মাতৃত্ব কল্যাণ আইন কার্যকর করা প্রসঙ্গে আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘১৯৫০-এ সংবিধান চালু হলেও গর্ভাবস্থার ছুটির কথা ভাবা শুরু করতেই আমাদের দেশে আরও ১১ বছর লেগেছিল। কিন্তু সবাই এ ছুটি পান না। কারণ দারিদ্র। নীচের মহলে এই অন্যায় চলতেই থাকে।’’

বিচারপতি বলেন, ‘‘আইনকে সকল মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়াই বিচার বিভাগের পরীক্ষা।’’ পাশাপাশি গৃহহিংসা সুরক্ষা আইন চালু হতে এ দেশে ২০০৫ পর্যন্ত এবং কর্মক্ষেত্রে হেনস্থা প্রতিরোধ আইন চালু হতে ২০১৩ অপেক্ষা করতে হয়।

এই প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দেশে মেয়েদের মর্যাদার বিষয়টি অনেকেই বোঝেন না। মানসিক নির্যাতন নিয়েও সচেতনতার অভাব। কোনও মেয়েকে ব্যক্তিগত বিষয়ে খোঁটা দিয়ে কথা বলা বা হুমকি দেওয়াও নির্যাতনের শামিল। এ সব ক্ষেত্রে মেয়েরা পুলিশের মাধ্যমে নারী সুরক্ষা অফিসারের কাছে যেতে পারেন।’’

justice ganguly simple

বিচারপতির অভিমত, ইউরোপ, আমেরিকায় মেয়েদের মানসিক নির্যাতন নিয়ে আইন প্রয়োগের কার্যকারিতা কিছুটা হলেও বেশি। পাশাপাশি জাস্টিস গাঙ্গুলি বলেন, কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্থার বিষয়টিতে সব অফিসেরই অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটি গড়ার দায়িত্ব রয়েছে। তবে তিনি এও বলেন, ‘‘কর্মক্ষেত্রে মুখ খুলতে অনেকেই ইতস্তত করেন। আবার কিছুক্ষেত্রে মেয়েরা আইনের অপপ্রয়োগও করে থাকেন।’’

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর