বাংলা হান্ট ডেস্কঃ হাতে তিন সপ্তাহ সময়। এবার ‘ডেডলাইন’ বেঁধে কড়া নির্দেশ দিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম (Justice TS Sivagnanam) ও বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চের তরফ থেকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কোন মামলায় এই নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট (Calcutta High Court)?
প্রত্যেকের মাথার ওপর যাতে পাকা বাড়ি থাকে, সেটা সুনিশ্চিত করতে সরকারের তরফ থেকে একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চালু করা হয়েছে নানান প্রকল্প। এমনই একটি স্কিম হল প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (PM Awas Yojana)। এই স্কিমে ঘর পেতে ‘উন্নয়ন ফি’ তোলার অভিযোগে উচ্চ আদালতে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল। তার প্রেক্ষিতেই কড়া নির্দেশ দিল হাইকোর্ট।
জানা যাচ্ছে, পিএম আবাস যোজনার বাড়ির তালিকাভুক্তদের থেকে পুরসভার তরফ থেকে ২০,০০০ টাকা করে তোলা হচ্ছে। এই টাকা না দিলে তালিকা থেকে নাম বাদ দিয়ে দেওয়া হবে। এই অভিযোগে কোচবিহারের দিনহাটার সাতকুড়া গ্রাম নিবাসী এক ব্যক্তি হাইকোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হন। মামলাকারীর আইনজীবী বলেন, অডিট রিপোর্টে অসঙ্গতি ধরা পড়ার পর পুরসভার কাছ থেকে ব্যাখ্যা চাওয়া হয় ও সেই টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনঃ অপা ফেল! হাইকোর্টের এই বিচারপতির বাড়ি থেকে উদ্ধার টাকার পাহাড়, বৈঠকে বসলেন চিফ জাস্টিস
অডিট রিপোর্টে জানানো হয়, ২০১৫-২০২২ সালের মধ্যে দিনহাটা পুরসভা ৪৩৯ লক্ষ টাকা সংগ্রহ করেছে। আইনজীবী আরও অভিযোগ করেন, অতিরিক্ত টাকা দেওয়া সত্ত্বেও আবাস যোজনার (Awas Yojana) তালিকা থেকে ১৮৭ জনের নাম বাদ দেওয়া হয়। এদিকে পুরসভার আইনজীবী দাবি করেন, পুর এলাকায় রাস্তা তৈরি, খাল মেরামত সহ নানান উন্নয়নমূলক কাজের জন্য ওই টাকা ব্যবহৃত হয়েছে।
পাল্টা কেন্দ্রের আইনজীবী এই বিষয়ে বলেন, আর্থিকভাবে দুর্বল মানুষের বাড়ি তৈরির জন্য পিএম আবাস যোজনার টাকা দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। সেই টাকা দিয়ে পুরসভার রাস্তা বানানোর কোনও এক্তিয়ার নেই। এবার এই মামলাতেই দিনহাটা পুরসভাকে (Dinhata Municipality) কারণ দর্শাতে বলল কলকাতা হাইকোর্ট। ‘কেন পুরপ্রধানকে সরাবে না আদালত?’ এই প্রশ্ন রেখে কৈফিয়ত চাইল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
এই বিষয়ে প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানমের পর্যবেক্ষণ, ‘হতে পারে এই অর্থ ভালো উন্নয়নমূলক কাজে ব্যবহার হয়েছে। তবে এই টাকা বেআইনিভাবে সংগ্রহ করা হয়েছে’। এভাবে টাকা তোলা অবৈধ, স্পষ্ট জানিয়েছে উচ্চ আদালত।
হাইকোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশ, এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পুরসভাকে হলফনামা দিয়ে নিজেদের অবস্থান জানাতে হবে। অবৈধভাবে টাকা তোলার এই ঘটনায় কেন প্রাক্তন এবং বর্তমান পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে না, কেন বর্তমান পুরপ্রধানকে অপসারণ করা হবে না, সেটা আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দিয়ে আদালতকে জানানোর নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।