বাংলাহান্ট ডেস্ক : একটু একটু করে বড় হয়ে উঠছিল ঘনা। আদালত চত্বরে রীতিমতো ঘাঁটি গেড়ে বসে পড়েছিল। তার ওপর বিচারক,আইনজীবীদের আদর আপ্যায়নও কোন অংশে কম ছিল না। আদালত চত্বরে আসা যাওয়া করেন এমন সব মানুষই ঘনাকে পরম স্নেহে আগলে রাখতেন। কিন্তু সেই ঘনায় হঠাৎই বছর চারেক আগে একদিন সকলের চোখের সামনে থেকে উধাও হয়ে গেল। প্রাথমিক পর্যায়ে বিস্তর খোঁজাখুঁজির পরেও ঘনার কোন হদিশ না মেলায় আদালতে মামলা হল। কিন্তু তারপরেই অভিযোগ উঠে যে, পুলিশের তরফ থেকে বিশেষ কোনো গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না। তাই এবার ফের মামলা দায়ের হল হাইকোর্টে। বিচারপতি শম্পা সরকারের এজলাসে মামলা শুনানি হবে বলেই জানা গিয়েছে।
কিন্তু এখন প্রশ্ন হল এই ঘনা আসলে কে? শুনতে অবাক লাগলে একথা সত্যিই যে, এই ঘনা হল আসলে এটি শুয়োরের ছোট্ট বাচ্চা। ছোটবেলা থেকেই সে কল্যাণী আদালত চত্বরেই বড় হয়ে উঠছিল। কিন্তু, হঠাৎ করেই একদিন ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ আদালত চত্বরে একটি সাদা গাড়ি আসে। তারপর সেই গাড়ি থেকে ৪ জন নেমে এসে ঘনাকে নিয়ে পালিয়ে যায়। সেই ছবি সিসিটিভির ফুটেজে ধরাও পড়েছে।
ঘনার হারিয়ে যাওয়ার খবর চাউর হতেই আইনজীবী অনুমিতা ভদ্র কল্যাণী থানায় অভিযোগ জানান। আশানুরূপ ফল না পাওয়ায় কল্যাণী এজিএম আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি। বিচারকের তরফে নির্দেশ আসে, যেভাবেই হোক ঘনাকে খুঁজে বার করতে হবে। কিন্তু দীর্ঘদিন কেটে গেলেও ঘনার হদিশ না মেলায় এবার মামলা দায়ের হল হাইকোর্টে।
জানা গিয়েছে, ঘনাকে ফেরানোর দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেছেন আইনজীবী অতসী চক্রবর্তী-সহ ৬ জন। তাদের বক্তব্য, দীর্ঘদিন আগে অভিযোগ জানানো হলেও পুলিশের তরফে কোনরকম তৎপরতা দেখা যায়নি। এখনও পর্যন্ত তারা ঘনাকে খুঁজে দিতে পারেনি। পুলিস কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না বলেও তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এর পাশাপাশি, চতুর্দিক থেকে ঘেরা কল্যাণী আদালত থেকে কীভাবে একটি গাড়ি প্রবেশ করার পর সেখান থেকে ঘনাকে নিয়ে বেরিয়েও গেল, তার নিয়ে রহস্য দানা বাঁধছে। একইসঙ্গে কল্যাণী আদালতের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। ছয় আইনজীবীর দাবি, আদালত উপযুক্ত নির্দেশিকা জারি করুক যাতে পুলিস ওই অভিযোগের ভিত্তিতে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করে। ফলে, বাচ্চা সত্যি কে খুঁজে পাওয়ার জন্য রীতিমতো তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। ঘনাকে খুঁজে না পাওয়া অব্দি কেউই যে স্বস্তির শ্বাস ফেলতে পারছেন না একথা বলাই বাহুল্য।