বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি (Primary Recruitment Scam) নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সরগরম বাংলা। গ্রেফতার হয়েছেন একাধিক হেভিওয়েট। এখনও দুর্নীতির শিকড় খুঁজতে ব্যস্ত সিবিআই (CBI)। এই আবহে এবার আদালতে রিপোর্ট দিয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। চাকরি দেওয়ার নামে ভুয়ো ওয়েবসাইট বানিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতানো হয়েছে। এবার এমনটাই দাবি করলেন গোয়েন্দারা।
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে (Primary Recruitment Scam) বিস্ফোরক রিপোর্ট সিবিআইয়ের!
২০১৪ সালের নিয়োগ নিয়ে সম্প্রতি প্রশ্ন তুলেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি রাজশেখর মান্থা। দরকার পড়লে ৪২,০০০ চাকরিপ্রার্থীর নিয়োগ বাতিলের হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন। সেই সঙ্গেই সিবিআইয়ের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, এখনও অবধি তারা কী তদন্ত করেছে। এবার সেই রিপোর্টই পেশ করা হল।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, অকৃতকার্য, অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের থেকে কয়েক লক্ষ টাকা নিয়ে তাঁদের নিয়োগ করা হয়েছে। ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হননি, পরীক্ষায় সাদা খাতা জমা দিয়ে অবৈধভাবে চাকরি (Primary Recruitment Scam) পেয়েছেন, এমন প্রার্থীর কথাও কেন্দ্রীয় এজেন্সির রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ‘সরকারের বিবেচনা করা উচিত’! আমজনতার সুবিধার্থে বড় নির্দেশ দিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট! কোন মামলায়?
সিবিআই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের নামে অতিরিক্ত প্যানেল বানিয়েও অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের জায়গা দেওয়া হয়েছে। তদন্তকারীরা দাবি করেছেন, কুন্তল ঘোষ (Kuntal Ghosh) এবং তাপস মণ্ডল মিলে অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের থেকে মোটা টাকা তুলেছিলেন। বিনিময়ে তাঁদের চাকরির বন্দোবস্ত করে দেন।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, ২০১৬ সাল থেকে ২০২২ অবধি, এই ৬ বছরে ১৪১ জন চাকরিপ্রার্থীর থেকে প্রায় ৪ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা তুলেছিলেন কুন্তলরা। এজেন্ট মারফৎ সেই টাকা তোলা হয়। চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ৩ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা তুলেছিলেন কুন্তল ঘোষ। সিবিআই দাবি করেছে, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের (WBBPE) নামে বেশ কয়েকটি ওয়েবসাইট বানিয়েছিলেন তিনি। চাকরিপ্রার্থীদের থেকে তোলা টাকা এজেন্ট মারফৎ কুন্তলের কাছে পৌঁছে যেত।
কেন্দ্রীয় এজেন্সির রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, ২০১৫ সালের টেট পরীক্ষায় পাশ করতে পারেননি এমন প্রার্থীদের উত্তীর্ণ দেখানো হয়েছে। ৪২ হাজারের অধিক নিয়োগ হয়েছিল। এর মধ্যে ইচ্ছা করে ৭৫২ জন চাকরিপ্রার্থীর ফল প্রকাশ না করে তা আটকে রাখা হয়েছিল। পরবর্তীতে দেখা যায়, তাঁরা ভুয়ো প্রার্থী।
এদের মধ্যে আবার ৩০০ জনের বেশি চাকরিপ্রার্থীকে নিয়োগপত্র (Primary Recruitment Scam) দেওয়া হয়েছিল। এখানেই শেষ নয়! ২০১৫ সালের ওএমআর প্রস্তুতকারী সংস্থা এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানি কোনও রকম নির্দেশ ছাড়া চাকরিপ্রার্থীদের ভীষণ জরুরি নথি ও ওএমআর শিট নষ্ট করে দেয়। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআইয়ের দেওয়া রিপোর্টে এমনটাই দাবি করা হয়েছে।