বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় শোরগোলের মাঝেই এবার নয়া তথ্য সামনে আনল সিবিআই (CBI)। ২০২২ এর জুলাই মাসে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি (Teacher Recruitment Scam) মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তারপর থেকে বহুদিন পেরিয়ে গেলেও এখনও জেল থেকে বেরোনোর সুযোগ হয়নি তার। উল্টে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য সামনে এসেছে। শনিবার আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের মামলার শুনানি ছিল। সেখানেই তার বিরুদ্ধে মারাত্মক দাবি করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই।
এদিন আদালতে সিবিআই জানিয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ‘পিকচারে’ থাকতেন না। তার বদলে পর্দার আড়াল থেকে নাড়তেন মূল কলকাঠি। নিজে ফ্রন্টে না আসলেও কাদের নিয়োগ করা হবে, কাকে কোন পদে নিয়োগ করা হবে, কাকে কোন পদ থেকে সরানো হবে এই সমস্ত কিছু ঠিক করতেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। তবে পর্দার আড়াল থেকে।
এদিন আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে পার্থের জামিনের মামলার শুনানি ছিল। আর প্ৰতি বারের মত এবারেও প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর জামিনের বিরোধীতা করে সিবিআই। আদালতে সিবিআই জানায়, নিয়োগে দুর্নীতির সমস্ত বিষয়টার নিয়ন্ত্রণ থাকত পার্থর হাতে। তার কথা মেনেই সকলকে কাজ করতে হতো। যদি কেউ তাতে আপত্তি জানাত তাহলেই তড়িঘড়ি তাকে পদ থেকে সরিয়ে দিতেন পার্থ।
সিবিআই এর দাবি সুকৌশলে পার্থ এমনভাবে সব কাজ করতেন যাতে সব কিছুর নিয়ন্ত্রণ থাকতেও তাকে ছবিতে আসতে না হয়। এদিন পার্থর জামিনের বিরোধীতা করে সিবিআই এর আইনজীবী বলেন, ‘‘শিক্ষাই সমাজ গঠন করে। একজন চিকিৎসক কোনও ভুল করলে রোগীর ক্ষতি হয়। কিন্তু এরা যে ধরনের অযোগ্য শিক্ষকদের নিয়োগ করেছে, তাতে সমাজ কোন পথে চালিত হবে তার কোনও ঠিক নেই। বর্তমান পরিস্থিতি দেখেই সেই বিষয় স্পষ্ট হচ্ছে।’’
সিবিআইয়ের দাবি, যারা এই দুর্নীতিতে থাকতে চাইতেন না, তাদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করতেন পার্থ। এই প্রসঙ্গে চাঞ্চল্যকর দাবি করে সিবিআই জানায় ২০২০-র ৮ জানুয়ারি মাসে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে হওয়া বৈঠক থেকে এক আধিকারিককে ক্ষমতা খাটিয়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়।
আরও পড়ুন: মাস্টারস্ট্রোক! ২১ লক্ষ বঞ্চিতের অ্যাকাউন্টে ১০০ দিনের কাজের টাকা দেবে রাজ্য, বিরাট ঘোষণা মমতার
ওদিকে সিবিআই এর বিরোধিতা করে পার্থর আইনজীবী বলেন, ‘‘সিবিআইয়ের দ্বিতীয় চার্জশিটেও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম ছিল না। তৃতীয় চার্জশিটে দেখানো হয়েছে অতীতে SSC বোর্ডের চেয়ারম্যান এক মহিলাকে পার্থ বকাবকি করেছেন। কেন বকাবকি করছেন, সেই কারণও দেখানো হয়নি।’’
পার্থের আইনজীবীর আরও দাবি, এখনও এই নিয়ে সম্পূর্ণ চার্জশিট দেয়নি সংস্থা। পার্থ যাদের পদ থেকে সরিয়েছেন বলে সিবিআই দাবি করছে, পরে তাদেরই বাগ কমিটির রিপোর্টে বা খোদ সিবিআইয়ের চার্জশিটেও অভিযুক্ত হিসাবে দেখানো হয়েছে সওয়াল করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী।