বাংলাহান্ট ডেস্ক: বছর আসে বছর যায়। সময়ের নদী বয়ে চলে নিজস্ব গতিতে। নতুন বছর যেমন অনেক নতুন আশা, স্বপ্ন, আনন্দ বার্তা বহন করে আনে, তেমনি প্রতি বছরই আপনজনদের ছেড়ে পরলোকের উদ্দেশে পাড়ি দেন প্রিয় মানুষেরা। ২০২২ এও বিনোদন জগৎ (Celebrities) খালি করে চিরতরে বিদায় নিয়েছেন কিছু উজ্জ্বল নক্ষত্র।
এ বছরে এমন কয়েকজন তারকাকে আমরা হারিয়েছি, যাদের স্থান কোনোদিন পূরণ হওয়ার নয়। সঙ্গীত জগৎ অন্ধকার করে বিদায় নিয়েছেন সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর (Lata Mangeshkar)। সুরের মূর্চ্ছ্বনা স্তব্ধ হয়েছে গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় (Sandhya Mukhopadhyay), ডিস্কো কিং বাপ্পি লাহিড়ীর (Bappi Lahiri) প্রয়াণে। কলকাতায় শো করতে এসে মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে নব্বইয়ের দশকের আইকন কেকে-র। এত ক্ষতি পূরণ হওয়ার নয়। বছরের শেষ লগ্নে দাঁড়িয়ে পালা আরেকবার ফিরে দেখার, আরেকবার বিনম্র শ্রদ্ধা জানানোর কিংবদন্তি, নক্ষত্রদের।
লতা মঙ্গেশকর– সরস্বতী পুজোর ঠিক পরের দিন গত ৬ ফেব্রুয়ারি প্রয়াত হন সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর। তাঁর মৃত্যুতে থমকে গিয়েছিল সঙ্গীতজগৎ। কিংবদন্তি শিল্পীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে উপচে পড়েছিল তারকা, ভক্তদের ঢল। ভারতরত্ন, পদ্মবিভূষণ, পদ্মভূষণ, দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কারের মতো বহু সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন লতা মঙ্গেশকর।
সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়– ১৫ ফেব্রুয়ারি ছিল বাংলা সঙ্গীত জগতের অন্ধকারতম দিন। কিছুদিনের অসুস্থতার পর শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালে ৯০ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। মৃত্যুর কিছুদিন আগেই কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া পদ্মশ্রী সম্মান ফিরিয়েছিলেন খ্যাতনামা শিল্পী। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে অপমান করার অভিযোগে কেন্দ্রকে কাঠগড়ায় তুলে বিতর্কও হয়েছিল।
বাপ্পি লাহিড়ী– সঙ্গীত জগতের জন্য ২০২২ তমসাচ্ছন্ন একটি বছর ছিল। এক মাসেই পরপর প্রয়াত হন লতা মঙ্গেশকর, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় এবং বাপ্পি লাহিড়ী। দীর্ঘ অসুস্থতার পর ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রয়াত হন ডিস্কো কিং। ‘গোল্ডেন ম্যান’ এর মৃত্যুতে শোকের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল গোটা দেশে।
কেকে– নব্বইয়ের দশকের অত্যন্ত জনপ্রিয় গায়ক কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ ওরফে কেকে। কলকাতায় শো করতে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। হাসপাতালে যাওয়ার আগেই সব শেষ। কেকের মৃত্যু মেনে নিতে পারেনি কেউই। সঙ্গীতপ্রেমীদের প্লেলিস্টে অধিকাংশটা জুড়েই থেকেছেন কেকে। তিনি এখনো আছেন এবং থাকবেনও।
তাবাসুম– গত ১৮ নভেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন প্রবীণ অভিনেত্রী তাবাসুম। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। ১৯৪৭ সালে ‘নার্গিস’ ছবিতে মাত্র তিন বছর বয়সে শিশুশিল্পী হিসাবে প্রথম অভিনয় করেন তিনি। সরগম, সংগ্রাম, দিদার, বৈজু বাওড়ার মতো ছবিতে তাঁর অভিনয় বিশেষ প্রশংসা পেয়েছিল। হিন্দি ক্লাসিক ‘মুঘল-এ-আজম’ ছবিতেও ছোট একটি চরিত্রে দেখা গিয়েছিল তাবাসুমকে।
বিক্রম গোখলে– ‘হাম দিল দে চুকে সনম’ ছবিতে ঐশ্বর্য রাই বচ্চনের বাবার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন বিক্রম গোখলে। দিল সে, ভুল ভুলাইয়া, দে দনা দন, হিচকি, নিকম্মা, মিশন মঙ্গল এর মতো একাধিক ছবিতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। ২৬ নভেম্বর প্রয়াত হন অভিনেতা।
রাজু শ্রীবাস্তব– দীর্ঘ অসুস্থতার পর ২১ সেপ্টেম্বর প্রয়াত হন কমেডি কিং রাজু শ্রীবাস্তব। দিল্লির এইমসে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
পল্লবী দে– বাংলা টেলিজগতের জনপ্রিয় অভিনেত্রী পল্লবীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছিল ১৫ মে। ঘটনায় গ্রেফতার হন তাঁর লিভ ইন সঙ্গী। বাংলা বিনোদন জগতে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল পল্লবীর মৃত্যুতে।
ঐন্দ্রিলা শর্মা– গত ১ লা নভেম্বর ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন ঐন্দ্রিলা। ২০ দিনের অসম লড়াইয়ের পর গত ২০ নভেম্বর মৃত্যুর কাছে হার মানেন বছর ২২ এর লড়াকু অভিনেত্রী। তাঁর মৃত্যুশোক আজও টাটকা সবার মনে।
তুনিশা শর্মা– গত ২৪ ডিসেম্বর মৃত্যু হয় অভিনেত্রী তুনিশা শর্মার। আলি বাবা: দাস্তান এ কাবুল নামে একটি সিরিয়ালের শুটিং করছিলেন তিনি। সেই সেটেরই মেকআপ রুমে আত্মহত্যা করেন তুনিশা।