বাংলাহান্ট ডেস্ক : দীর্ঘদিন ধরেই ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা পাচ্ছেন না শ্রমিকরা। ১০০ দিনের কাজের টাকা পাওয়াকে কেন্দ্র করে কেন্দ্র আর রাজ্য বারবার সংঘাতে জড়িয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার আবাস যোজনার টাকা থেকে শুরু করে ১০০ দিনের কাজের জন্য নির্ধারিত টাকা কোনটাই ঠিকমতো দিচ্ছে না এমন অভিযোগ তুলে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যে চিঠিও পাঠিয়েছেন। কিন্তু এবার বর্ধমানে এসে কেন্দ্রীয় অর্থপ্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধুরি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন।
পঙ্কজ চৌধুরীর কথায়, এখনো পর্যন্ত রাজ্যের পক্ষ থেকে ১০০ দিনের কাজের জন্য কোন অডিট রিপোর্টই পাঠানো হয়নি। পাশাপাশি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পুঙ্খানুপুঙ্খ অডিট রিপোর্ট পাঠালেই একশো দিনের কাজের জন্য বরাদ্দ টাকা এবং প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা কেন্দ্রের তরফে দিয়ে দেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। যদিও, পঙ্কজ চৌধুরি কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া অন্য কোনও রাজ্য ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’র নাম বদল করেনি।’
সূত্রের খবর, গত ২৬ ডিসেম্বর থেকে ১০০ দিনের কাজে মজুরি বাবদ বকেয়া আছে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকারও বেশি। শুধু তাই নয়, এখনও পর্যন্ত ২০২১ সালের ১৪ অগস্ট থেকে ইমারতি দ্রব্যের টাকাও কেন্দ্রের তরফে রাজ্যের হাতে আসেনি। সবমিলিয়ে কেন্দ্রের কাছ থেকে রাজ্যসরকার প্রায় ৭৩০০ কোটি টাকা পাবে বলেই জানা গিয়েছে।আর এই বিপুল পরিমাণ বকেয়ার জেরে বহু বৈধ জব কার্ডধারী তাদের প্রাপ্য মজুরিটুকুও পাননি।
এদিকে, ১০০ দিনের কাজের প্রাপ্ত বকেয়াকে কেন্দ্র করে যখন কেন্দ্র ও রাজ্য তরজা তুঙ্গে, ঠিক তখনই রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য মুখ খোলেন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, ‘সমস্ত নথি এবং তথ্যপ্রমাণ কেন্দ্রকে দেওয়া হয় এবং হয়েছে।’ পাশাপাশি, বর্তমানে রাজ্যের বিরুদ্ধে উঠে আসা অভিযোগ সম্পর্কে আগে কথা বলা হয় নি কেন সেই প্রসঙ্গেও প্রশ্ন তোলেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী চন্দ্রিমা। সেই সঙ্গে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তার মন্তব্য, “প্রত্যেকবার এসে নতুন নতুন কথা বলবেন, আর মানুষকে বিপদে ফেলবেন!” বর্তমান পরিস্থিতিতে এই বিপুল বকেয়া কবে মিটবে এবং ১০০ দিনের কাজের সঙ্গে জড়িত শ্রমিকরা কবে তাদের প্রাপ্যটুকু পান সেটাই এখন দেখার বিষয়।