সরাসরি রাজ্যকে আর টাকা দেবে না কেন্দ্র! সরকারি প্রকল্পের জন্য এবার চালু হচ্ছে নতুন ব্যবস্থা

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে (Governemnet Scheme) বাংলার মানুষের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার অভিযোগ নতুন নয়। আবাস যোজনা থেকে শুরু করে ১০০ দিনের কাজ কিংবা গ্রামীণ সড়ক যোজনা সহ নানা প্রকল্পে বাংলার প্রাপ্য টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। বারবার এই অভিযোগ করেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। তাই পশ্চিমবঙ্গবাসীর প্রাপ্য সেই টাকা নিজের কোষাগার থেকেই দিয়েছে রাজ্য সরকার।

সরাসরি রাজ্যকে আর সরকারি প্রকল্পের (Governemnet Scheme) টাকা দেবে না কেন্দ্র

বছর ঘুরলেই অর্থাৎ ২০২৬ সালে রাজ্যে রয়েছে বিধানসভা নির্বাচন। তাই এই ভোট প্রাপ্তির আশায় নির্বাচনকে সামনে রেখেই এবার আবাস যোজনা এবং ১০০ দিনের প্রকল্পে বাংলার বরাদ্দ অর্থ দিতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার। এবার তার জন্য এক নতুন ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে তারা। যার ফলে এবার থেকে কেন্দ্রের অর্থ সাহায্যে চলা প্রকল্পের (Governemnet Scheme) টাকা সরাসরি আর রাজ্যের হাতে পাঠাতে হবে না। কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের দেওয়া ওই টাকা সরাসরি জমা হবে উপভোক্তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অথবা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অ্যাকাউন্টে।

সারাদেশে এক দেশ, এক ভোট এবং এক দেশ এক রেশন চালু করতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। সূত্রের খবর এবার এই সরকারি প্রকল্পগুলির জন্য এক অ্যাকাউন্ট ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে কে কেন্দ্রীয় সরকার। আর এমনটা চালু হলে এবার থেকে কেন্দ্রের অর্থ সাহায্যে চলা প্রকল্পগুলির (Governemnet Scheme) অর্থ আর রাজ্যের হাতে পাঠাবে না মোদী সরকার। আর এই নিয়ে এবার নতুন করে সংঘাতে নেমেছে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের অভিযোগ এমনিতেই বিভিন্ন প্রকল্পে বাংলার বরাদ্দের টাকা কেন্দ্র আটকে রেখেছে। তার ওপর নতুন করে এই এক অ্যাকাউন্ট ব্যবস্থা চালু করা হলে দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর মূলে আঘাত লাগবে। আর এই ব্যবস্থা চালু হলে কেন্দ্রীয় সরকারের কোন প্রকল্পের টাকাতে রাজ্যের আর কোন নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। এমনকি কোন প্রকল্পের রাজ্য সরকার অর্থ বরাদ্দ করলেও তার ওপর চলবে কেন্দ্রের নজরদারি। আর এই নজরদারি অপছন্দ নবান্নের।  তাই রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এপ্রসঙ্গে বলেছেন, ‘১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনার মত প্রকল্পের টাকা কেন্দ্র আটকে রাখার জেরে রাজ্য নিজেদের অর্থে প্রকল্প গুলি চালাচ্ছে।’

আরও পড়ুন: ডিভোর্স হলেও সন্তান বাঁচতে পারবেন মায়ের পরিচয়ে! যা বলল হাইকোর্ট…

সরকারি প্রকল্পে টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার যদি এই নতুন নিয়ম চালু করে তাহলে ভবিষ্যতে কেন্দ্র রাজ্যের সম্পর্ক আরও তিক্ত হবে  বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এতদিন কেন্দ্রীয় সরকার কয়েকটি ধাপে নিজের বরাদ্দ রাজ্য সরকারকে দিত। রাজ্য সরকার সেই টাকা খরচ করার পর ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট পাঠানোর পরেই মিলত পরের কিস্তির টাকা। নতুন ব্যবস্থা চালু হলে সেইসব কাজ রাজ্যকে আর করতে হবে না। কারণ রিজার্ভ ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলা হবে। এতে করে সাধারণ মানুষ জানতে পারবেন কোন টাকা কেন্দ্র দিচ্ছে।

West Bengal

নতুন পদ্ধতিতে টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে একটা সমস্যাও আছে। যেসমস্ত প্রকল্পে রাজ্যের টাকা দেওয়ার কথা রয়েছে সে সমস্ত প্রকল্পে যদি রাজ্য সরকার টাকা না দেয় তাহলে কি হবে? এক্ষেত্রে রাজ্য ওই প্রকল্পে টাকা বরাদ্দ নাও করতে পারে বরং তারা নিজেরাই নতুন প্রকল্প চালু করে সেই টাকা বাংলার মানুষ জনকে দিতে পারে। এক্ষেত্রে একটু হলেও চাপে পড়তে পারে কেন্দ্র। এ প্রসঙ্গে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানিয়েছেন।, ‘ইউসি দেওয়ার পরেই ওরা টাকা দেয়। কেন্দ্র তো আমাদের প্রাপ্য টাকাই দিচ্ছে না। সেগুলি তো বিয়ন্ড টাইম হয়ে গিয়েছে। এখন রাজনৈতিক গিমিক করছে।’ অন্যদিকে রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যের অভিযোগ, ‘কেন্দ্রের বঞ্চনা তৃণমূলের রাজনৈতিক শ্লোগান ছাড়া কিছু না।’

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর