বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দেশের বিচার ব্যবস্থার প্রতি গুরু দায়িত্ব থাকে একজন বিচারপতির। তাই এহেন দায়িত্বিশীল নাগরিক হিসাবে যে কোনোরকম দুর্নীতি থেকে দূরে থাকাই বাঞ্চনীয় তাঁর। তাই হোলির দিন দিল্লি হাই কোর্টের (High Court) বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বাড়ি থেকে পোড়া নোটের পাহাড় উদ্ধার হতেই শোরগোল পড়ে যায় দেশজুড়ে। ইতিমধ্যেই হাই কোর্টের বিচারপতি বর্মাকে নিয়ে নিজেদের সুপারিশপত্র কেন্দ্রের কাছে পাঠিয়েছিল কলেজিয়াম। তার ভিত্তিতেই এবার নগদকাণ্ডে বড় সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় সরকার।
হাইকোর্টের (High Court) জাস্টিস বর্মাকে নিয়ে বিরাট সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের
বাড়ি থেকে পাহাড় প্রমাণ টাকা উদ্ধার হওয়ার পর বিচারপতি বর্মাকে শাস্তি স্বরূপ বদলির নির্দেশ দেওয়া হবে নাকি তাঁর বিরুদ্ধে অন্য কোন পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা নিয়েই শুরু হয়েছিল জোর জল্পনা। হাই কোর্টের (High Court) ওই বিচারপতির ভবিষ্যৎ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম নিজেদের সুপারিশ দিলেও, এব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়ভার ছাড়া হয়েছিল কেন্দ্রের ওপরেই।
শুক্রবার বিচারপতি বর্মাকে দিল্লি হাই কোর্ট (High Court) থেকে এলাহাবাদ হাই কোর্টে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদি সরকার। জানা যাচ্ছে, এক থেকে দুই দিনের মধ্যেই এই বদলির প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে যাবে। অন্যদিকে শুক্রবারই বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের দাবি খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
সর্বোচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চের তরফে এই মামলায় জানানো হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের ইন হাউস কমিটি পুরো বিষয়টির তদন্ত করছে। তদন্তের পর ওই কমিটি যদি মনে করে কোথাও বেনিয়ম হয়েছে, তাহলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এখনই এ নিয়ে ভাবার সময় আসেনি বলে জানানো হয়।
আরও পড়ুন: ‘বছরে দু’বার করে আসব, পারলে আটকে দেখান’! অক্সফোর্ডে খোলা চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন মমতা
উল্লেখ্য,দোলের দিন আচমকা জাস্টিস বর্মার বাড়িতে আগুন লেগে গিয়েছিল। তখনই তাঁর বাড়ি থেকে পাহাড় প্রমাণ নগদ উদ্ধার করেন দমকল কর্মীরা। এমনকি বিচারপতির বাড়ির কাছের রাস্তা থেকেও পাঁচশো টাকার পোড়া নোট উদ্ধার হয়েছিল। তদন্ত চললেও এখনও পর্যন্ত ওই অর্থের উৎস জানা যায়নি।
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই গত ২০ ও ২৪ মার্চ দুটি আলাদা বৈঠক করে বিচারপতি বর্মাকে দিল্লি হাই কোর্ট থেকে এলাহাবাদ হাই কোর্টে পাঠানোর সুপারিশ করা হয়েছিল। কিন্তু এলাহাবাদ হাই কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশন তা মানতে চাননি। হাই কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অনিল তিওয়ারি সাফ জানিয়েছিলেন, বিচারপতি বর্মাকে কোনও আদালতেই বদলি করাই ঠিক হবে না।
এসবের মধ্যে বিচারপতি বর্মার চাকরি নিয়ে টানাটানি পড়ে যায়। তাঁকে সরাসরি নির্বাসন দেওয়া এবং তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করে তদন্ত করার দাবি ওঠে। এমনকি বিচারপতির বদলির বিরুদ্ধে চিঠি লিখে সরব হয়েছিলেন দেশের ছয় রাজ্যের বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান। তাঁদের স্পষ্ট দাবি ছিল বিচারপতি বর্মাকে সব কাজ থেকে সরাতে হবে। তবে অবশেষে শুক্রবার কেন্দ্রের তরফ থেকে তাঁকে এলাহাবাদ হাইকোর্টে বদলি করা হল।