বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আলো জ্বালানো থেকে শুরু করে রান্না, একটা সময় বাড়ির এসব কাজের জন্য কেরোসিনের ওপরই নির্ভর করতো সাধারণ মানুষ। তবে বর্তমানে সময় বদলেছে। দেশের অধিকাংশ বাড়িতেই বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছে গিয়েছে, সেই সঙ্গেই এসেছে রান্নার গ্যাসের কানেকশন। তাই ক্রমে কেরোসিনের ব্যবহারও হ্রাস পেয়েছে। তবে কেন্দ্রের (Central Government) দাবি, পশ্চিমবঙ্গে নাকি তা কমছে না। এদিকে কেরোসিনের ‘অপব্যবহার’ বন্ধ করার জন্য গত জুনেই রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়েছে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক।
রাজ্যের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ কেন্দ্রের (Central Government)!
রান্না এবং আলো জ্বালানোর জন্য কেন্দ্রের তরফ থেকে ভর্তুকিযুক্ত কেরোসিন (Kerosene) সরবরাহ করা হয়। এরপর গণবণ্টন ব্যবস্থার মাধ্যমে তা জনগণের কাছে পৌঁছে দেয় রাজ্য। তবে গত কয়েক বছরে এদেশে এলপিজি গ্যাস কানেকশন এবং বিদ্যুৎ সংযোগ বৃদ্ধি পাওয়ায় অন্যান্য রাজুগুলির তরফ থেকে কেন্দ্রের কাছে কেরোসিনের চাহিদা কমিয়ে দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গে সেই চাহিদা হ্রাস পায়নি। এরপর কেন্দ্র নিজেই তা কমিয়ে দেয়। এই নিয়ে জল গড়ায় আদালত অবধি।
ওয়েস্ট বেঙ্গল কেরোসিন এজেন্টস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের তরফ থেকে আদালতে যাওয়া হয়। এদিকে কেন্দ্রের (Central Government) দাবি, নানান রাজ্যে যে পরিমাণ কেরোসিন পাঠানো হয়, তার ৬৬.৩৮% পশ্চিমবঙ্গেই বিক্রি হয়। পেট্রোলিয়াম মন্ত্রকের হিসেব বলছে, ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরে পশ্চিমবঙ্গে সবচেয়ে বেশি ভর্তুকিযুক্ত কেরোসিন পাঠিয়েছে কেন্দ্র। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিহারের নাম। প্রথম স্থানে থাকা বাংলা যেখানে মোট কেরোসিনের ৬৬.৩৮% পেয়েছে, সেখানে বিহারের প্রাপ্য মাত্র ৬.০২%।
আরও পড়ুনঃ ‘এত সাহস! হাইকোর্টে এই ভাষায়…’! পুলিশের ভূমিকায় রেগে আগুন জাস্টিস ঘোষ! এবার কড়া নির্দেশ
কেন্দ্রের অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গে পেট্রল, ডিজেলের মতো জ্বালানির ক্ষেত্রে ‘ভেজাল’ হিসেবে কেরোসিনের ব্যবহার করা হয়। সম্প্রতি পেট্রোলিয়াম মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী সুরেশ গোপ সংসদে একটি লিখিত বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, গত আর্থিক বছরে ভারতের সব রাজ্য মিলিয়ে ১০,৬০,৫২৪ কিলোলিটার তেল পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি এসেছে বাংলায়। রাজ্যের (Government of West Bengal) তরফ থেকে এই কেরোসিন রেশন কার্ড গ্রাহকদের মধ্যে বিলি করার দাবি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সুরেশ বলেন, রাজ্যের খাদ্য দফতরের মাধ্যমে রেশন কার্ড রয়েছে এমন উপভোক্তাদেরই কেরোসিন দেওয়া হয়েছে। কেরোসিনের অপব্যবহার হচ্ছে কিনা অথবা অযোগ্যরা পাচ্ছেন কিনা সেটা রাজ্য এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ ও জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে নিয়মিত যাচাই করা হয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের রিপোর্টে এমনটাই দাবি করা হয়েছে বলে জানান পেট্রোলিয়াম মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী।
এদিকে ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন বঙ্গ বিজেপি। রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যের দাবি, কেন্দ্রের (Central Government) দেওয়া ভর্তুকিযুক্ত কেরোসিন বিপুল পরিমাণে এখান থেকে বাংলাদেশে পাচার করা হয়। তাঁর কথায়, ‘খোঁজ করলে বাড়িতে কেরোসিন ব্যবহার করে এমন পরিবার পাবেন না। অনেকে রেশন থেকে কেরোসিন নেনও না। তা সত্ত্বেও সব বিক্রি হয়ে যায়’।