বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দেশজুড়ে একাধিক রাজ্যের পাশাপাশি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতেও কেরোসিন তেলের বরাদ্দ বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। জানা যাচ্ছে, রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মিলিয়ে দেশের প্রায় অর্ধেক এলাকার জন্য কেরোসিনের বরাদ্দ দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে নয়া দিল্লি। এখনও পর্যন্ত সারা দেশের মোট ১৯ টি রাজ্যের রেশন গ্রাহকদের কেরোসিন দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। যার মধ্যে অন্যতম পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal)। তবে দেশের বাকি রাজ্য এবং আটটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এখনও রেশনের বরাদ্দ কেরোসিন পায় না।
রেশনের জন্য বরাদ্দ কেরোসিন পাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal)?
যেসমস্ত রাজ্যকে এখনও কেরোসিন তেল দেওয়া হচ্ছে তাদের বরাদ্দ অনেকটাই কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। গত বছরের শেষের দিকেই পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) জন্য কেরোসিন তেলের বরাদ্দ কমিয়ে অর্ধেক করা হয়েছিল। যা এই বছরও অব্যাহত রয়েছে। জানুয়ার, ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ এই তিন মাসের জন্য পশ্চিমবঙ্গে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক মোট ৫৮ হাজার ৯৬৮ কিলোলিটার কেরোসিন তেল বরাদ্দ করেছে। আগে এই বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ১ লক্ষ ৭৬ হাজার কিলোলিটার।
জানলে অবাক হবেন, এখন গোটা দেশের নিরিখে মোট বরাদ্দের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ কেরোসিন পাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal)। সব রাজ্য মিলিয়ে মার্চ মাস পর্যন্ত কেন্দ্রের তরফে বরাদ্দ করা হচ্ছে মোট ৮৫ হাজার ৮৮৪ কিলোলিটার কেরোসিন। পশ্চিমবঙ্গের পর সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পেয়েছে বিহার। ৬ হাজার ৩৮৪ কিলোলিটার।
প্রসঙ্গত, সরকারি প্রকল্পে বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে একাধিকবার সরব হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই অবস্থায় পশ্চিমবঙ্গের জন্য সবচেয়ে বেশি পরিমাণ কেরোসিন বরাদ্দ করায় চর্চা শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে। তবে জানা যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গকে এত কেরোসিন কেন্দ্র দিচ্ছে বাধ্য হয়েই।
আরও পড়ুন: স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী প্রস্তাব দিলে? এবার রাজনীতিতে যোগ দিচ্ছেন এই জনপ্রিয় নায়িকা?
এক মামলার পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টের সর্বশেষ নির্দেশ অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে আলোচনার করে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রককে বাংলার জন্য কেরোসিন বরাদ্দ করতে বলা হয়েছিল। সেইসাথে জানানো হয়েছিল, যতদিন না কেন্দ্রীয় সরকার পশ্চিমবঙ্গের জন্য বরাদ্দ নিয়ে নির্দিষ্ট নীতি তৈরি করবে ততদিন এটা চলবে। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কেন্দ্রীয় সরকার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করেছিল। এই পরিস্থিতিতে বাংলার জন্য বরাদ্দ কমানো হলেও অন্যান্য রাজ্যের থেকে থেকে বেশি রাখতে বাধ্য হয়েছে কেন্দ্র।
কেরোসিনের কোটা পুরোপুরি ছেড়ে দেওয়ার জন্য সব রাজ্যকেই প্রস্তাব দিয়েছিল কেন্দ্র। অনেক রাজ্য এই প্রস্তাবে রাজিও হয়ে যায়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ কোটা ছাড়া তো দূর তার পরিমাণ কমাতেও রাজি হয়নি। কিন্তু যেভাবে লাগাতার কেরোসিন তেলের দাম বেড়েছে, তাতে রাজ্যে কেরোসিন তেলের চাহিদা আগের থেকে অনেক কমে গিয়েছে। এরফলে বরাদ্দ ছাঁটাই করতেও সুবিধা হয়েছে নতুন দিল্লির। কেরোসিন ডিলার সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অশোক গুপ্ত এপ্রসঙ্গে জানিয়েছেন, এখন রাজ্যের রেশন গ্রাহকদের জন্য মাথাপিছু বরাদ্দ একশো মিলিলিটারেরও কম।