বাংলাহান্ট ডেস্ক : আবারও বড় পদক্ষেপ ভারত সরকারের (Government of India)। হিন্দির পাশাপাশি বাংলা, তামিল-সহ আরও ছ’টি ভাষায় ডাক্তারি ও ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াতে উদ্যোগী হয়েছে সরকার, এমনই জানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। গতকাল দেশে ডাক্তারি পাঠ্যক্রমের প্রথম হিন্দিতে অনূদিত বইয়ের উদ্বোধন করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। মধ্যপ্রদেশের (Madhyapradesh) ভোপালে সেই অনুষ্ঠানে গিয়ে তিনি দাবি করেন, ইতিমধ্যেই ১০টি রাজ্য তামিল, তেলুগু, মরাঠি, বাংলা, মালয়ালম ও গুজরাতি ভাষায় ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের বই অনুবাদের কাজ শুরু করা হয়েছে। এদিন শাহ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মালয়ালম, গুজরাতি, বাংলার মতো আঞ্চলিক ভাষায় মেডিক্যাল ও ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানোর ডাক দেন। শিবরাজ সিংহ চৌহানের নেতৃত্বে মধ্যপ্রদেশ সরকার তাঁর ইচ্ছা প্রথম পূরণ করেছে। ইতিহাসে আজকের দিনটি সোনার অক্ষরে লেখা থাকবে।’
এ দিন এমবিবিএস প্রথম বর্ষের অ্যানাটমি, মেডিক্যাল বায়োকেমিস্ট্রি ও মেডিক্যাল ফিজ়িয়োলজির হিন্দিতে অনুবাদ করা বই উদ্বোধন করেন অমিত শাহ। মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান জানান, বিভিন্ন পারিভাষিক শব্দ বইয়ে ইংরেজি উচ্চারণ অনুসরণ করেই হিন্দিতে লেখা হয়েছে। অর্থাৎ কিডনি বোঝাতে দেবনাগরী অক্ষরে লেখা আছে ‘কিডনি’।
সে রাজ্যের ডাক্তারি-শিক্ষামন্ত্রী বিশ্বাস সারঙ্গ জানান, ৯৭ জন বিশেষজ্ঞ গত ২৩২ দিন ধরে গান্ধী মেডিক্যাল কলেজে জাতীয় শিক্ষানীতির অনুসরণে বইগুলি অনুবাদের কাজ করেছেন। সেই অনুবাদকদের এক জন দাবি করেন, খুবই সহজ-সরল ভাষায় লেখা হয়েছে। বোঝানোর জন্য অতিরিক্ত ছবি, চার্ট প্রভৃতিরও ব্যবহার করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে শিবরাজ জানান, অন্য রাজ্যের পড়ুয়ারা যাতে তাঁদের অনূদিত বইগুলি থেকে উপকৃত হতে পারেন, সে জন্য সমস্ত মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি দেখা করবেন। অমিত শাহ জানান, ‘দেশের ছাত্রছাত্রীদের আর ইংরেজি ভাষাটা না-জানা নিয়ে হীনম্মন্যতা থাকবেনা। তাঁরা নিজের ভাষায় গর্বের সঙ্গে পড়াশোনা করতে পারবেন।’ তবে হিন্দিতে অনূদিত বইয়ের উপরে নির্ভর করে পড়াশোনা করতে গিয়ে পড়ুয়াদের চিকিৎসাবিদ্যা অর্জনের পরিসর কতটা সীমাবদ্ধ হয়ে যাবে, তা নিয়েও কিন্তু প্রশ্ন উঠছে।
এ দিন ডাক্তারি পাঠ্যক্রমের বইয়ের উদ্বোধনের মঞ্চে চলে আসে ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার প্রসঙ্গও। জানা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারের সমস্ত প্রতিষ্ঠানে প্রযুক্তিগত ও অন্যান্য পড়াশোনা ইংরেজির বদলে হিন্দিতে চালু করা-সহ বেশ কিছু সুপারিশ করেছে সরকারি ভাষা সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটি। সারা বাংলা সেভ এডুকেশন কমিটির সম্পাদক এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক তরুণকান্তি নস্করের দাবি, ঘুরিয়ে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার জন্যই অন্য ভারতীয় ভাষার কথা বলা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘বাংলা, হিন্দি বা ভারতীয় কোনও ভাষায় ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া ভারতীয় ছাত্রদের পক্ষে এখনই সম্ভব নয়। এর ফলে ভারতীয় পড়ুয়ারা কেবল কারিগরিবিদ্যার বিশাল জ্ঞানভান্ডার থেকে শুধু বঞ্চিতই হবেন না, উচ্চতর শিক্ষার ক্ষেত্রেও বাধা তৈরি হবে।’