বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বর্তমান সময়ে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল সরকারের (Trinamool Congress) বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগে (Corruption Allegations) সরব রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। একাধিক সময়ে কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে নালিশ ঠুকেছেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা। সেই দুর্নীতির অভিযোগ সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে গত একবছরে শুধুমাত্র গ্রামোন্নয়ন প্রকল্পগুলির কাজ পর্যালোচনা করতে রাজ্যে এসেছে ৭১টি কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দল।
সংখ্যাটা চমকে দেওয়ার মতো হলেও এটাই সত্যি। অন্যদিকে, নবান্ন (Nabanna) সূত্রে খবর গুচ্ছ-গুচ্ছ কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দল (Central Team) বাংলায় এসে অভিযোগ খতিয়ে দেখার পর বড়সড় কোনো দুর্নীতি চিহ্নিত করতে পারেনি। নবান্ন সূত্রে দাবি, কোনো কেন্দ্রীয় দলের রিপোর্টেই শেষ পর্যন্ত দুর্নীতির উল্লেখ দেখাতে পারেননি তারা।
জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারকে জমা দেওয়া কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দলের একাধিক রিপোর্টে পদ্ধতিগত কিছু ত্রুটি ছাড়া উল্লেখযোগ্য কিছুই চিহ্নিত করতে পারেননি তারা। তাহলে কেন্দ্রের আবাস যোজনা এবং ১০০ দিনের কাজ এই দুই প্রকল্পে রাজ্যের প্রাপ্য ১৫ হাজার কোটি টাকা কেন এখনও আটকে রাখছে কেন্দ্র? তবে কী এর পেছনে শুধুমাত্রই রাজনৈতিক স্বার্থ! বিভিন্ন মহল থেকে কিন্তু এই প্রশ্নই উঠে আসছে।
প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগে নবান্নের কর্তাদের করা প্রশ্নে রীতিমতো নাজেহাল হন কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের সচিব শৈলেন্দ্র সিং। নবান্নের পদস্থ আমলাদের একের পর এক তীক্ষ্ণ প্রশ্ন নাস্তানাবুদ হয়েছে কার্যত মুখে কুলুপ আটেন কেন্দ্রের প্রতিনিধিরা। নবান্ন সূত্রে খবর, ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের পর ‘১০০ দিনের কাজ’ প্রকল্পে কেন্দ্র আর কোনও টাকা বাংলায় পাঠায়নি। সেই থেকে এই খাতে বকেয়া প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা।
অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ১১ লক্ষ ৩৬ হাজার ৪৮৮টি বাড়ির জন্য কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের মোট প্রাপ্য ৮ হাজার ১৮২ কোটি ৭১ লক্ষ টাকা। রাজ্যের অভিযোগ, কেন্দ্র সরকারের হাজারো নিয়ম-বিধি সঠিকভাবে মানার পরও উদেশ্যমাফিক বাংলার বিপুল পরিমান পাওনা আটকে রাখা হচ্ছে। এই বিষয়ে পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, ‘কেন্দ্রের পরামর্শ অক্ষরে অক্ষরে পালন করে অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট পাঠিয়েছি। তার পরেও নানা অজুহাতে দল পাঠানো চলছে। কিন্তু টাকা পাঠানোর নামগন্ধ নেই। সব কিছুর একটা সীমা আছে। শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে বাংলার মানুষকে বঞ্চিত করার কোনও মানে হয় না। অবিলম্বে আমাদের বকেয়া মিটিয়ে দেওয়া উচিত কেন্দ্রের।’
জানিয়ে রাখি, গত একবছরে বাংলায় জাতীয় পর্যায়ের পর্যবেক্ষকদের (এনএলএম) ৫১টি দল এসেছে। বর্তমানে মুর্শিদাবাদ, দুই দিনাজপুর এবং কোচবিহারে পর্যবেক্ষণ চালাচ্ছে আরও তিনটি দল। গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের ১৭টি প্রতিনিধি দল রাজ্যে এসেছে। সব মিলিয়ে একবছরে বাংলায় ৭১টি পর্যবেক্ষণ দল। অন্যদিকে, স্বচ্ছ ভারত মিশন বা নির্মল বাংলা প্রকল্পে রাজ্যকে ক্লিনচিট দিয়েছে দিল্লি। এরপরেও নানা কারণ দেখিয়ে রাজ্যের পাওনা টাকা আটকে রাখাকে নিছক অজুহাত বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।