বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন আরফিন সুলতানা চাকরির আশায় দ্বারস্থ হয়েছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের (Firhad Hakim)। মাঝে কেটে গিয়েছে চার মাস। ক্যালেন্ডারের তারিখ বদলালেও বদলায়নি আফরিনের জীবন। আশ্বাস পরিণত হয়নি বাস্তবে। সেই ক্ষোভ থেকেই আনন্দবাজার অনলাইনের মুখোমুখি হয়ে সেরিব্রাল পলসি আক্রান্ত আরফিন বললেন, ‘ভোটের প্রচারের জন্যই আমায় ডেকেছিলেন’।
ফিরহাদ হাকিমের (Firhad Hakim) বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ
মা অসুস্থ, শরীরে বাসা বেঁধেছে মারণ রোগ ক্যান্সার। আফরিন নিজেও সেরিব্রাল পলসিতে ভুগছেন বহুদিন ধরে। এখন তাঁর বয়স ৩৯ বছর। আফরিনের কথা জড়িয়ে যায়, দুপা হাঁটতে গেলেও কিছু ধরতে হয় তাঁকে। দুজনেরই চিকিৎসার জন্যই বিপুল খরচ হয় তাঁদের। জীবনযুদ্ধের এই লড়াইয়ে বেঁচে থাকতে আরফিনের প্রয়োজন একটা চাকরির।
তাই সাহায্য চেয়েই তিনি দ্বারস্থ হয়েছিলেন কলকাতার মেয়রের (Firhad Hakim)। চার মাস আগেই ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে ফোন করেছিলেন আফরিন। যেকোনো একটা চাকরির খোঁজে সপ্তাহের পর সপ্তাহ ফোন করেছিলেন তিনি। তাঁর জড়ানো কথা বুঝতে না পেরে সোজা বাড়িতে গাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে আফরিনকে নিজের দপ্তরে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন ফিরহাদ (Firhad Hakim)। কিন্তু এতদিন পর চাকরি না পেয়েও আফরিনের অভিযোগ সবটাই ছিল ভোট প্রচারের কৌশল। তবে আশ্বাস মিললেও চাকরি মেলেনি। তবুও বছর শেষে চলতি সপ্তাহে আরও একবার ফোন করার কথা জানিয়েছেন আফরিন।
এখানে বলে রাখি ২০১১ সালের সেন্সাস অনুযায়ী সারাদেশে প্রায় ২.২১ শতাংশ প্রতিবন্ধী মানুষ রয়েছেন। সরকারি চাকরিতে প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষণের ব্যবস্থাও রয়েছে। অন্যদিকে রাজ্য সরকারও এই সমস্ত প্রতিবন্ধীদের পাশে দাঁড়াতে তাদের ১০০০ টাকা করে ভাতা দিয়ে থাকে। কিন্তু সমাজে এখনও একটা ট্যাবু রয়ে গিয়েছে প্রতিবন্ধীদের নিয়ে। যা এখনও দূর করা যায় যায়নি।
আরও পড়ুন: ঘুষ নিতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ল ED অফিসার! এবার বড় নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট
তাই বেসরকারি চাকরিতে এখনও প্রতিবন্ধীদের সুযোগ প্রায় নেই বললেই চলে। তবে এই জীবন যুদ্ধে আফরিন এখনও হেরে যাননি। দাঁতে দাঁত চেপে লড়াইয়ে নেমেছেন তিনি। তবে আরেফিনের অভিযোগ পেয়ে কি প্রতিক্রিয়া ফিরহাদের? মেয়র জানিয়েছেন তিনি ভাতার ব্যবস্থাও করিয়ে দিয়েছেন। তবে সেই সাথে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন বিশেষভাবে সক্ষম মানুষদের চাকরি দেওয়ার ক্ষমতা তার নেই।
তবে মেয়র জানিয়েছেন, ‘উনি সাধারণ মানুষ হিসেবে এই প্রত্যাশা রাখতেই পারেন। তবে আমার সীমাবদ্ধতা আছে। আমি তো কাউকে এইভাবে চাকরি পাইয়ে দিতে পারি না। তবে আমি ওনাকে বলেছি প্রতিবন্ধী কোটায় অ্যাপ্লাই করলে উনি চাকরি পেয়ে যেতে পারেন। কিন্তু মেয়রের কথা শুনে প্রতিক্রিয়ায় আফরিন পাল্টা প্রশ্ন করেছেন, ‘কেন প্রতিযোগীদের সাহায্য করা যায় না? ওরাই তো সব থেকে দুর্বল। আমাদের তো সবচেয়ে বেশি সাহায্য দরকার।’ তাই শেষে আরফিনের আফসোস, ‘ভোটের প্রচারের জন্যই হয়তো তখন ডেকেছিলেন। কিন্তু সামনেই তো ভোট তাই যদি এরকম করা হয় তাহলে আমরা ভোট দেবো কি করে?’