নিউজিল্যান্ড নাকি দক্ষিণ আফ্রিকা? চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে টিম ইন্ডিয়ার জন্য বেশি বিপজ্জনক কে?

বাংলা হান্ট ডেস্ক: ইতিমধ্যেই অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে পৌঁছে গিয়েছে টিম ইন্ডিয়া (Champions Trophy-India)। এমতাবস্থায়, আগামী ৯ মার্চ দুবাইতে ফাইনালে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যে খেলতে নামবে ভারতীয় দল। তবে, ফাইনালের মঞ্চে এখনও ভারতীয় দলের প্রতিপক্ষ কে হবে তা নির্ধারিত হয়নি। তবে এটা নিশ্চিত যে, রোহিত বাহিনীকে নিউজিল্যান্ড বা দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবেন। আগামী ৫ মার্চ লাহোরে সম্পন্ন হতে চলা দ্বিতীয় সেমিফাইনালের পরে, ওই দলগুলির মধ্যে কোনটি ভারতের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দুবাই যাবে তা স্পষ্ট হবে। এমতাবস্থায় প্রশ্ন উঠছে, এই দুই দলের মধ্যে কে ভারতীয় দলের জন্য বেশি বিপজ্জনক প্রমাণিত হতে পারেন? বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপিত করছি।

ফাইনালে পৌঁছে গিয়েছে ভারত (Champions Trophy-India):

ভারতের “স্বপ্ন” ভেঙে দিতে পারে নিউজিল্যান্ড: প্রথমত, নিউজিল্যান্ডের কথা বলা যাক। এই টুর্নামেন্টে নিউজিল্যান্ড ইতিমধ্যেই একবার টিম ইন্ডিয়ার (Champions Trophy-India) মুখোমুখি হয়েছে। তবে, ওই দল ফাইনালে উঠলে বড় সমস্যা তৈরি হতে পারে টিম ইন্ডিয়ার জন্য। কারণ দুবাইতে এই টুর্নামেন্টে একবার ভারতীয় দলের মুখোমুখি হয়েছে কিউইরা। তাই, ওই দলের সেখানকার কন্ডিশনে খেলার ধারণা রয়েছে। যেকারণে তারা ফাইনালে উঠলে আরও ভালো পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নিয়ে ৯ মার্চ ভারতকে বিপদে ফেলতে পারে।

আরও একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হল কিউই দল ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির অন্যতম শক্তিশালী প্রতিযোগী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ওই দলে ভারসাম্যও যথেষ্ট রয়েছে। এছাড়াও, নিউজিল্যান্ড দলে ফাস্ট বোলার ও স্পিনারদের রয়েছে ভালো মিশ্রণ। মিচেল স্যান্টনার এবং মাইকেল ব্রেসওয়েল এমন ২ খেলোয়াড় যারা স্পিন বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিংও ভালো করেন। এদিকে, ম্যাট হেনরি এবং উইলিয়াম ও’রকের মতো ২ জন চমৎকার প্রধান ফাস্ট বোলার রয়েছে। দলের সব ব্যাটাররাও এখন ফর্মে আছেন। শুধু তাই নয়, কিউই দল তার ফিল্ডিংয়ের মাধ্যমে উইকেট নেওয়া এবং রান বাঁচানোর জন্যও পরিচিত। গ্রুপ পর্বে ওই দলের খেলোয়াড়রা তা করেও দেখিয়েছেন।

Champions Trophy-India recent update.

অন্যদিকে, ICC টুর্নামেন্টে এর আগে বেশ কয়েকবার ভারতকে (Champions Trophy-India) হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড। এই দলটি ২০১৯ সালের ODI বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল এবং ২০২১ সালের T20 বিশ্বকাপে ভারতকে টুর্নামেন্ট থেকে বাদ দিয়েছিল। অপরদিকে, ২০২৩ সালের ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে, কিউই দল ভারতের স্বপ্নকে ভেঙে দিয়েছিল। এর বাইরে যদি আমরা পরিসংখ্যানের কথা বলি, ICC টুর্নামেন্টের ২০ টি ম্যাচের মধ্যে নিউজিল্যান্ড জিতেছে ১২ টি ম্যাচে। যেখানে ভারত মাত্র ৬ টি ম্যাচে জয়লাভ করতে সক্ষম হয়েছে। অপরদিকে, ২ টি ম্যাচে কোনও ফলাফল নির্ধারিত হয়নি। তাই, এহেন পরিসংখ্যান থেকে এটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে কিউই দলটি অত্যন্ত শক্তিশালী এবং তারা ভারতের ওপর যথেষ্ট চাপ তৈরি করতে পারে।

আরও পড়ুন: চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে ভারতের কাছে হারের “ধাক্কা”, ODI ক্রিকেট থেকে অবসর স্টিভ স্মিথের

দক্ষিণ আফ্রিকা দল কতটা বিপজ্জনক: এবারে আসি দক্ষিণ আফ্রিকার প্রসঙ্গে। এই দলটি সাম্প্রতিক সময়ে ICC টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছে। দক্ষিণ আফ্রিকা ২০২৩ সালের ODI বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে পৌঁছে যায় এবং ২৯২৪ সালের T20 বিশ্বকাপের ফাইনালেও পৌঁছেছিল। এছাড়াও, এই দলটি ২৯২৫ সালের ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের জন্যও যোগ্যতা অর্জন করেছে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকা দল বড় এবং টেনশনের ম্যাচে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার জন্য পরিচিত। ২০২৪ সালের T20 বিশ্বকাপ এবং ২০২৩ সালের ODI বিশ্বকাপ এর সাম্প্রতিক উদাহরণ। T20 বিশ্বকাপের ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকা দল ৩০ বলে ৩০ রান করতে না পেরে ভারতের কাছে হেরে যায়।

আরও পড়ুন: সোনা-রুপো কিংবা হিরে নয়! এই জিনিসটির জন্যই চিন-আমেরিকার সাথে প্রতিযোগিতায় নেমেছে ভারত

তবে, এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে, এখনও পর্যন্ত তারা পাকিস্তানে তাদের সমস্ত ম্যাচ খেলেছে। কিন্তু ফাইনালটি দুবাইতে সম্পন্ন হবে। যেখানে ওই দলের খেলোয়াড়রা সাম্প্রতিক পিচ এবং অবস্থা সম্পর্কে অবগত নয়। এতে ভারত লাভবান হতে পারে। এছাড়াও, দক্ষিণ আফ্রিকা দলে স্পিন বোলারের অভাব রয়েছে। যা ভারতের (Champions Trophy-India) জন্য আরেকটি সুবিধা হতে পারে। পরিসংখ্যানের কথা বললে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে এখনও পর্যন্ত ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে ৪ টি ম্যাচ হয়েছে এবং সবকটিতেই ভারত জিতেছে। ICC ODI বিশ্বকাপে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে ৬ টি ম্যাচ হয়েছে। এই ৬ টি ম্যাচের মধ্যে ভারত জিতেছে ৩ টিতে, আর দক্ষিণ আফ্রিকা ৩ টিতে জয়ী হয়েছে। সামগ্রিকভাবে দেখতে গেলে, ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের চেয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা ভারতের জন্য একটি ভালো বিকল্প হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর