বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একুশের নির্বাচনে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়ে জয় হাসিল করে নিয়েছিল বিজেপির সবথেকে দরিদ্র প্রার্থী চন্দনা বাউরি (Chandana Bauri)। বাঁকুড়ার শালতোড়ায় প্রতিদ্বন্দ্বী হেভিওয়েট তৃণমূল প্রার্থীকে হারিয়ে প্রথমবার বিধানসভায় গিয়েছিল সামান্য এক রাজমিস্ত্রীর সহধর্মিণী। ভোটে জয়ের পর এলাকার গরিব মানুষের পাশে দাঁড়ানোর দৃঢ় সংকল্প নিয়েছিলেন তিনি। আর সেই উদ্দেশ্যে নিজের কর্তব্য পালন করে চলেছেন বর্তমান রাজ্য রাজনীতিতে সবথেকে চর্চিত মুখ চন্দনা বাউরি।
সম্প্রতি নিজের মাইনে দেখে অবাক হয়েছিলেন চন্দনা। আসলে তিনি জানতেনই না যে বিধায়কদের কত টাকা বেতন হয়। এক সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথোপকথনে বিধায়ক চন্দনা বাউড়ি জানালেন, বিধায়ক হিসেবে মাসে কত টাকা মাইনে পাবেন তা এখনও পর্যন্ত তিনি জানেন না। সাংবাদিকের কাছে ঘুরিয়েই তিনি প্রশ্ন করেন, ‘কত টাকা মাইনে পাব?’ সাংবাদিক জানান- মাসে প্রায় ৮২ হাজার টাকা পান একজন বিধায়ক। তবে শপথ নেওয়ার দিন থেকে শুরু করে যদি জুন মাসের মধ্যে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়ে যায়, তাহলে প্রায় ১ লক্ষেরও বেশি টাকা পাবেন তিনি। আর তা শুনেই আকাশ থেকে পড়েন চন্দনা বাউড়ি।
তবে এত টাকা মাইনে পাওয়ার কথা শুনেও মানুষের কথাই চিন্তা করে গেলেন চন্দনা বাউড়ি। নিজের জন্য একটা গাড়ি কেনার ইচ্ছাও প্রকাশ করলেন না তিনি। তাঁর কথায়, ‘কি করব তা এখন ভাবতে পারছি না। তবে মানুষের যাতে ভালো হয়, এমন কিছু করব। অত টাকা তো আর আমাদের লাগবে না, তাই মানুষের কাজে লাগাব। আমার গাড়ির দরকার নেই। অনেক দাম। স্বামীর মোটর সাইকেল আছে তো, ওতেই হয়ে যাবে’।
এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই চারিদিকে চন্দনার প্রশংসা হতে থাকে আর এরই মধ্যে আরও একটি প্রশংসনীয় কাজ করে ফেললেন শালতোড়ার এই বিধায়ক। সম্প্রতি তিনি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে কয়েকটি ছবি পোস্ট করেন। সেখানে তাঁকে গরিব-দুঃস্থদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করতে দেখা যাচ্ছে। চন্দনা নিজের ফেসবুকে লেখেন, ‘কলকাতা রাজারহাট নিউটাউন থেকে সমাজসেবী সম্প্রদায় মানুষ আমাকে বেশ কিছু সামগ্রী দিয়ে যায় সেগুলো দরিদ্র মানুষের হাতে তুলে দিতে বলে তাই আজ আমি আমার গ্রামসহ আর কিছু পাশাপাশি গ্রামে ৬০ টি পরিবারের হাতে চাল,ডাল ও কিছু বস্ত্র সহ বিভিন্ন সামগ্রী আমার গ্রামের মানুষের হাতে আমি তুলে দিই!”
চন্দনা বিধায়ক হওয়ার পর থেকেই গোটা বাংলায় বেশ পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছেন। গোটা রাজ্য থেকেই বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন তাঁর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। চন্দনা নিজের এক্তিয়ার অনুযায়ী যা করার করছেন, পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর সাহায্য নিয়ে এলাকার মানুষের দুয়ারে পৌঁছে যাচ্ছেন। এলাকাবাসীও তাঁদের নতুন বিধায়কের কাজে খুবই সন্তুষ্ট। তাঁদের মতে, ‘এর আগে অনেকে বিধায়ক হয়েছে, কিন্তু এভাবে আমাদের পাশে কেউ দাঁড়ায়নি। চন্দনা আমাদের ঘরের বড় মেয়ের মতো দায়িত্ব পালন করছে। আমরা ওকে পেয়ে খুব খুশি।