আজ মহাকাশে ইতিহাস গড়ল ভারত। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO সোমবার দুপুর ২ঃ৪৩ এ চন্দ্রযান-২ কে সফল ভাবে লঞ্চ করে। এর আগে চন্দ্রযান-২ (Chandrayaan-2) কে ১৫ জুলাই লঞ্চ করার কথা ছিল, কিন্তু শেষ মুহুরতে কিছু খামতি থাকার জন্য লঞ্চিং পিছিয়ে দেওয়া হয়। আপনাদের জানিয়ে রাখি, চন্দ্রযান-২ আগামী ৬ সেপ্টেম্বর চাঁদে অবতরণ করবে।
চন্দ্রযান-২ এর লঞ্চিং শ্রীহরিকোটা এর সতীশ ধবন মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র থেকে করা হয়েছে। ৪৮ দিন পর চন্দ্রযান-২ চাঁদে অবতরণ করবে। এই মিশনে ভারত ওই চার দেশের সাথে তালিকায় নাম তুলে দিলো, যারা এর আগে চাঁদে সফট ল্যান্ডিং করেছিল। সফট ল্যান্ডিং করা একদমই সহজ নয়, এর আগে আমেরিকা, রাশিয়া, আর চীন এই কাজ করে দেখিয়েছিল।
চন্দ্রযান-২ ৪৮ দিন পর চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করবে। এর আগে কোন দেশই চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করেছিল না। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে চন্দ্রযান-২ সফল ভাবে অবতরণ করার পর ভারত এই খেতাব অর্জন করা প্রথম দেশ হয়ে যাবে। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অন্ধকার অনেক বেশি। সেখানে সূর্যের আলো পৌঁছায় না। আর এই কারণেই কোন দেশ এখনো সেখানে অবতরণ করার সাহস দেখায় নি।
চাঁদের ওই এলাকায় তাপমাত্রাও অনেক কম, আর ওই মেরুতে বরফ এবং জল পাওয়ার প্রবনতা আরও বেড়ে যায়। এর আগে চন্দ্রযান-১ ও চাঁদে জলের সন্ধান পেয়েছিল। আর চন্দ্রযান-১ এই জলের সন্ধান করে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল।
চন্দ্রযান-২ কে বানাতে ৯৭৮ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। চন্দ্রযান-২ সম্পূর্ণ ভাবে স্বদেশী টেকনলজি তে তৈরি। এর প্রধান উদ্দেশ্য চাঁদে জলের মাত্রা অনুসন্ধান করা। চাঁদে থাকা খনিজ পদার্থ আর রাসায়নিক উপাদানের খোঁজ করা এবং চাঁদের আবহাওয়া সমন্ধ্যে তথ্য সংগ্রহ করাও এর কাজ। চন্দ্রযান-২ এ অনেক প্রকারের ক্যামেরা আর র্যাডার লাগানো আছে, এর ফলে এই যান চাঁদ সমন্ধ্যে গভীর ভাবে অধ্যায়ন করতে পারবে।
চন্দ্রযান-২ কে বাহুবলি রকেট দ্বারা চাঁদে পাঠানো হয়েছে। ওই রকেটের নাম GSLV Mk 3। এই রকেটকে বাহুবলি রকেটের নামে জানা যায়। এই রকেট সবথেকে ক্ষমতাশীল রকেট গুলোর মধ্যে একটি। এই রকেট ৪৪ মিটার লম্বা আর এর ওজন ৬৪০ টন।
চন্দ্রযান-২ এর ওজন ৩৮০০ কিলো। এটিকে তৈরি করতে খরচ লেগেছে ৬০৩ কোটি টাকা। চন্দ্রযান-২ এ ১৩ টি পোলার্ড আছে। তাঁর মধ্যে ভারতের ৫, ইউরোপের ৩, আমেরিকার ২ আর বুল গেরিয়ার ১ টি পোলার্ড আছে।চন্দ্রযান-২ এ ৩ টি মডিউল আছে। তিনটি মডিউল গুলি হল অরবিটার, ল্যান্ডার আর রোভার। ল্যান্ডারের নাম ইসরোর জনক ডক্টর বিক্রম এ সারাভাই এর নামে রাখা হয়েছে। যেই সময় চন্দ্রযান-২ কে লঞ্চ করা হয়, তখন ইসরোর ২৫০ এর বেশি বিজ্ঞানী কন্ট্রোল সেন্টারে এই মিশনের উপর নজর লাগিয়ে বসেছিল
https://youtu.be/QrzlhHxJLM0