বাংলাহান্ট ডেস্ক : হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশের (Bangladesh) ভারত বিরোধিতা এবং পাকিস্তান ঘনিষ্ঠতায় সিঁদুরে মেঘ দেখেছিল ওয়াকিবহাল মহল। এবার জানা গেল, আসল ‘মাথা’ পাকিস্তান নয়, বরং আড়ালে নিরপেক্ষতার মুখোশ বজায় রেখে নিঃশব্দে নিজের চাল চালছে চিন। বাংলাদেশের (Bangladesh) বিভিন্ন ইসলামি সংগঠন এবং বিএনপি নেতাদের ঘন ঘন চিন সফর থেকে এমনই আশঙ্কা করছেন ভারতের কূটনীতিক এবং গোয়েন্দারা।
বাংলাদেশের (Bangladesh) সঙ্গে আদানপ্রদান বাড়াচ্ছে চিন
উল্লেখ্য, গত বছর বড়দিনের আগেই বাংলাদেশের (Bangladesh) নতুন রাষ্ট্রদূত নাজমুল ইসলাম চিনের বিদেশ মন্ত্রকের এশীয় বিষয়ক বিভাগের প্রধান নিউ জিনসং এর সঙ্গে চিনে বৈঠক করেন। চলতি বছরেই চিন এবং বাংলাদেশের (Bangladesh) মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী। সেই উপলক্ষে এই বছরকে ‘চিন বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে আদানপ্রদানের বছর’ নাম দেওয়া হয়েছে। সংষ্কৃতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যের মতো ক্ষেত্রগুলিতে তরুণদের মধ্যে আদানপ্রদান বাড়ানোর কৌশল নিয়েছে চিন।
আড়ালে থেকে চাল চালছে চিন: চিনের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ঢাকার সঙ্গে শীর্ষ স্তরে আদানপ্রদানে তৈরি রয়েছে বেজিং। এসব দেখেশুনেই ভারতের কূটনীতিকরা মনে করছেন, বাংলাদেশে (Bangladesh) ভারত বিরোধী মনোভাব তৈরি হলেও চিন বিরোধী প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে না মানুষের মধ্যে। আর এই সুযোগটা কাজে লাগিয়েই বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তার করতে সচেষ্ট চিন। এ বিষয়ে এক কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা কর্তা বলেন, বাংলাদেশ (Bangladesh) নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সামর্থ্য পাকিস্তানের নেই। চিন আড়ালে থেকে সেই কাজটা করছে।
আরো পড়ুন : প্যারাশুট হাওয়ায় জড়িয়ে আছড়ে পড়লেন ভারতীয় নৌ সেনার দুই অফিসার! তারপরে যা হল….
বেড়েছে বাংলাদেশ চিন ঘনিষ্ঠতা: কূটনীতিকরা মনে করছেন, গত মাসেই ঢাকায় চিন দূতাবাসে জামায়তে ইসলামী, হেফাজত-ই-ইসলাম, খিলাফত মজলিস, নিজাম-ই-ইসলাম এর মতো পার্টির প্রতিনিধিরা হাজির হয়েছিলেন। এই সংগঠনগুলির একটি দল এবার চিন সফরেও যাচ্ছে বলে খবর। তার আগে আবার বিএনপির চারজন শীর্ষ নেতাও চিন সফরে গিয়েছিলেন। বিদেশ মন্ত্রকের এক কূটনীতিকের মতে, নিরপেক্ষতা দেখিয়ে গোপনে সক্রিয় রয়েছে চিন।
আরো পড়ুন : ‘পেঁপে দিয়ে চেপে’ নয়, হকিস্টিকে ভর করে আসছে নতুন গল্প, দীপান্বিতার নায়ক এই হ্যান্ডসাম হিরো!
আসলে কূটনীতিকরা মনে করছেন, বাংলাদেশের (Bangladesh) উপরে ৬০০ কোটি ডলারের বিপুল ঋণের বোঝা চেপে রয়েছে। হাসিনা সরকারের পতনের ঠিক আগেই তিনি চিন সফরে গিয়েছিলেন। সেখানে এই ঋণের একাংশ অনুদান হিসেবে চেয়েছিলেন হাসিনা। প্রাথমিক ভাবে মাত্র ১৩ কোটি ডলার আর্থিক অনুদান হিসেবে দিতে রাজি হয়েছিল চিন। কিন্তু হাসিনা সরকারের পতনের পর তা আটকে যায়। এই ঋণকেই বাংলাদেশে নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে চিন কাজে লাগাবে বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা। উপরন্তু বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং চিনের বিদেশ মন্ত্রকের বৈঠকের পর চিনের তরফে জানানো হয়, বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পে এবার সহযোগিতা বাড়াতে চায় তারা। কূটনীতিকদের মতে, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতিই হতে চলেছে বাংলাদেশের।