বাংলা হান্ট ডেস্ক: একটা সময় ছিল যখন আমেরিকার (America) সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করত রাশিয়া (Russia)। কিন্তু এখন আমেরিকা মহাকাশে চিনের (China) সাথে প্রতিযোগিতার সম্মুখীন। এমন পরিস্থিতিতে, গত রবিবার চাইনিজ অ্যাকাডেমি অফ ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে চিনের চাঁদের অনুসন্ধান কর্মসূচির প্রধান ডিজাইনার উ ওয়েরেন, আগামী ১৫ বছরের পরিকল্পনার রূপরেখা দিয়েছেন। তিনি বলেন, চাঁদ ও গ্রহ অনুসন্ধানে চিনের সক্ষমতা বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। উল্লেখ্য যে, উও চিনের ডিপ স্পেস এক্সপ্লোরেশন ল্যাবরেটরির প্রধান বিজ্ঞানী এবং পরিচালক।
পাশাপাশি, উ তার বক্তৃতায় চন্দ্রযান মিশনের সফল অবতরণের জন্য ভারতকে অভিনন্দনও জানিয়েছেন। এছাড়াও, তিনি রাশিয়ার লুনা-২৫ মহাকাশযানের ব্যর্থতার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। এরপর তিনি বলেন, মহাকাশে চিনের প্রবেশ বন্ধ করতে আমেরিকা ও পশ্চিমী দেশগুলি একসঙ্গে কাজ করছে। এদিকে, তিনি আমেরিকার আর্টেমিস প্রকল্পের কথা উল্লেখ করেছেন, যার লক্ষ্য মানুষকে চাঁদে নিয়ে যাওয়া এবং সেখানে একটি ঘাঁটি স্থাপন করা। তিনি বলেন, এতে ৩০ টি দেশ অন্তর্ভুক্ত হলেও চিন বাদ পড়েছে।
চিনের সাফল্য: উ বলেন যে, চিনের গভীর মহাকাশ অনুসন্ধান মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমী দেশ দ্বারা অবরুদ্ধ করা হচ্ছে, যার কারণে তারা গুরুতর চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন। চিপ শিল্পের সাথেও ঠিক একই জিনিস ঘটছে। তিনি আরও বলেন যে, গভীর মহাকাশ অনুসন্ধান আজ প্রযুক্তিগত প্রতিযোগিতার একটি নতুন সীমানায় পরিণত হয়েছে। তাঁর মতে, চিন সাফল্যও অর্জন করছে। যার মধ্যে রয়েছে ২০১৯ সালে চিনের Chang’e-4 দ্বারা চাঁদের অন্ধকার দিকে প্রথম সফট ল্যান্ডিং, ২০২০ সালে চন্দ্রের স্যাম্পেল ফিরিয়ে আনা এবং মহাকাশযান Tianwen-1-কে মঙ্গলে পৌঁছে দেওয়া।
আরও পড়ুন: উৎসবের মরশুমে বড় চমক! হয়ে গেল DA বৃদ্ধির ঘোষণা, এই কর্মচারীদের খুলল ভাগ্য
চিনের পরবর্তী পরিকল্পনা: উ জানান, এখন চিন Chang’e-6, 7 এবং 8 উৎক্ষেপণ করবে। পাশাপাশি, নতুন গ্রহের এক্সপ্লোরেশন মিশন পরিচালনা করবে এবং আগামী ১৫ বছরে দেশের স্পেস লঞ্চের ক্ষমতা বাড়াবে। এদিকে, Chang’e-6, ২০২৪ সালে উৎক্ষেপণের জন্য নির্ধারিত, যা চাঁদের অন্ধকার দিক থেকে বিশ্বের প্রথম নমুনা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবে। পাশাপাশি, ২০২৬ সালের Chang’e-7 মিশনের লক্ষ্য হল চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করা এবং চাঁদের সম্পদ ও পরিবেশের সার্ভে করা। এছাড়াও, Chang’e-8-এর মাধ্যমে চাঁদের সম্পদকে কাজে লাগানোর মিশন চালাবে চিন।
আরও পড়ুন: বিক্রি করেন গরুর দুধ ও গোবর! এখন কোটি টাকার বাংলো বানালেন এই কৃষক, চমকে দেবে আয়ের অঙ্ক
এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, পৃথিবীর যেমন একটি মহাকাশ স্টেশন রয়েছে ঠিক সেইরকমই চিন চাঁদে একটি স্টেশন (ILRS) তৈরি করতে চায়। বিভিন্ন দেশ এর সাথে জড়িত। এদিকে, আজারবাইজান হল ILRS প্রোগ্রামে যোগদানকারী নতুন সদস্য। পাকিস্তানও এতে অংশ নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। ২০৩০ সালের মধ্যে চাঁদে মানুষ পাঠানোর লক্ষ্যে সফল হওয়ার পরিকল্পনা করছে চিন। এছাড়া চীন তিয়ানওয়েন-২ এর মাধ্যমে উল্কাপিন্ড এবং তিয়ানওয়েন-৩ এর মাধ্যমে মঙ্গলের নমুনা ফিরিয়ে আনতে চায়।