ঘনঘন লোডশেডিং, দেউলিয়া একাধিক ব্যাঙ্ক ও সংস্থা! এবার কী শ্রীলঙ্কার মতো পরিণতি চীনের?

বাংলাহান্ট ডেস্ক : গভীর সংকটের মুখে চীনের (China) অর্থনীতি। বড়সড় প্রভাব পড়েছে দেশের জিডিপি বৃদ্ধির হারে। প্রবল সমস্যার মুখে দাঁড়িয়ে চীনের রিয়েল এস্টেট সেক্টর। ধুঁকছে ব্যাংকিং সেক্টরও। কয়লা ঘাটতির জেরে দফায় দফায় চলছে লোডশেডিং। এর ফলে ধাক্কা খাচ্ছে উৎপাদন শিল্প।

গত কয়েক দশকে চীনের আর্থিক বৃদ্ধির হার সারা পৃথিবীর কাছে ছিল এক চমকপ্রদ ঘটনা। যে হারে গত দু’দশকে চীনে জিডিপি বৃদ্ধি হয়েছে, তা অনেক দেশের কাছেই নজরকাড়া ছিল। কিন্তু বিশেষজ্ঞ মহল ধারণা করছেন ২০২২ সাল থেকে চীনের অর্থনীতি ধুঁকতে শুরু করেছে। চীনের অন্তর্বর্তী অনেক তথ্যই বহির্বিশ্বের কাছে প্রকাশ্যে আসেনা। কিন্তু আন্দাজ করলে বোঝাই যাচ্ছে চীনের অর্থনীতির সূর্য অস্তমিত হওয়ার পথে।

গত ১০ মাসে চীন দেশে সম্পত্তির মূল্য কমেছে। এর পাশাপাশি চীনে দেখা দিয়েছে তীব্র কয়লা সংকট। বেশ কিছু ছোট ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার পথে। বিশেষজ্ঞরা অনেকেই মনে করছেন এবার হয়তো চীন “দ্বিতীয় শ্রীলঙ্কা” হওয়ার পথে এগোচ্ছে। কিন্তু কেন এমন ধারণা করা হচ্ছে?

রিয়েল এস্টেট সেক্টরে সংকট : রিয়েল এস্টেট সংস্থাগুলির ঋণ নির্ভরতা কমাতে চীন সরকার থ্রি রেড লাইন নামে তিনটি নীতি প্রবর্তন করেন। রিয়েল এস্টেট কোম্পানি এভরগ্রান্ড এই নীতি উত্তীর্ণ হতে পারেনি। এর ফলে ঋণ পেতে সমস্যার মুখে পড়ে সংস্থা। চীনের রিয়েল এস্টেট সেক্টরে এই কোম্পানির অবদান ১২ %। সেক্ষেত্রে যদি এই কোম্পানি দেউলিয়া হয়ে যায় তাহলে তার বড় প্রভাব পড়বে চীনা অর্থনীতিতে। সিমেন্ট, ইস্পাত সহ বিভিন্ন সেক্টরে এর প্রভাব পড়বে।

বিদ্যুৎ সংকট : চীনে মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে কয়লার ঘাটতি। কয়লার ঘাটতির জেরে বিস্তীর্ণ এলাকা ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎহীন করে রাখতে হচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে শিল্পক্ষেত্রেও। পর্যাপ্ত বিদ্যুতের অভাবে উৎপাদন শিল্প ধাক্কা খাচ্ছে। যদি উৎপাদন কমে যায় তাহলে তা সারা বিশ্বের চেইন সাপ্লাই কে প্রভাবিত করতে পারে।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাংকিং সেক্টর : চীনের ব্যাংকিং সেক্টর খুব একটা ভালো জায়গায় নেই। কিছু ক্ষুদ্র ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার পথে। হেনান প্রদেশের কিছু ছোট ব্যাংক ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আমানতকারীরা তাদের টাকা ফেরত পেতে আন্দোলন চালাচ্ছেন।

আর্থিক বৃদ্ধির স্তব্ধতা : ২০২২ সালের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে চীনা অর্থনীতির হার নেমে এসেছে ০.৪ শতাংশে। এর থেকে আন্দাজ, স্থানীয় রাজ্যগুলি থেকে আয় প্রায় ছয় ট্রিলিয়ন ইউনান হ্রাস পেয়েছে চীনের। এছাড়াও চীন বেশ কিছু আফ্রিকা ও এশিয়ার দেশকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছে। সেই সমস্ত দেশগুলি আর্থিকভাবে দুর্বল হওয়া ঠিক কতটা পরিমাণ ঋণ শোধ করতে পারবে তাও প্রশ্ন চিহ্নের মধ্যে।

এই সকল পরিস্থিতি মিশিয়ে এক অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়তে চলেছে চীন। চীনের উৎপাদন শিল্প ধাক্কা খেলে তার প্রভাব পড়বে বিশ্বজুড়ে। এখন কি হয় সেই দিকে তাকিয়ে অর্থনীতি মহল।

Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর