বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আফগানিস্তানে তালিবান ক্ষমতা দখলের পরে যে দুই সরকার সরাসরি তালিবানকে মান্যতা দেওয়ার কথা জানিয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম হল চীন। কার্যত পাকিস্তানের পরেই তালিবানের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে তারা। কিন্তু চীনের রণনীতি এবার সমালোচিত হতে শুরু করল তাদের নিজের দেশেই। একদিকে সরকার যখন চীনা নাগরিককে বোঝানোর চেষ্টা করে চলেছে কুড়ি বছর আগের তালিবান এবং এখনকার তালিবান মোটেই এক নয়, তখনই অন্যদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদে মুখর হচ্ছেন নাগরিকরা।
উল্লেখ্য চীনের সংবাদমাধ্যমের দ্বারাও মারাত্মকভাবে চেষ্টা চালানো হচ্ছে সরকারের বার্তা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার। কিছুদিন আগেই চীনা মুখপত্র দ্য পিপলস ডেইলি ৬০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও পোস্ট করে সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে। কারণ এই ভিডিওতে দেখানো হয়েছিল আফগানিস্তানে গৃহযুদ্ধের পর শরণার্থী শিবিরে বসবাসরত শিক্ষার্থীদের দ্বারাই জন্ম হয় তালিবানের। তাদের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের যোগের কথা সম্পূর্ণ এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে এই ভিডিওতে। এও দাবি করা হয় যে তালিবানরা গরীব মানুষের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে এবং গত কুড়ি বছর ধরে আমেরিকার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে আসছে তারা। আমেরিকা যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ একথাও বারবার প্রমাণ করার চেষ্টা করছে সংবাদ মাধ্যমগুলি। কিন্তু এই ভিডিওটি রীতিমতো সমালোচিত হতে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যার জেরে শেষ পর্যন্ত ভিডিওটি ডিলিটও করতে হয়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, চীনে রীতিমতো আলোড়ন তুলেছে আফগানিস্তানের চলচ্চিত্র নির্মাতা সাহরা করিমীর ভিডিওটিও। এই মহিলা পরিচালক আবেদন জানিয়েছিলেন সমস্ত রাষ্ট্রনায়কদের কাছে। চীনা সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভিডিওটি সামনে আসতেই চীনা সরকারের বিপক্ষে সরব হন অনেকেই। এক মহিলা নেটিজেন লেখেন, “আপনারা আফগান জনগণের কণ্ঠ দমন করার চেষ্টা করছেন।” কার্যত একদিকে যখন চীনা সংবাদমাধ্যম প্রমাণ করার চেষ্টা করে চলেছে, আফগানিস্তানে সমস্ত কিছু স্বাভাবিক। আগের মতো তারা আর নারী অত্যাচার করবে না, নারীদের শিক্ষা এবং কর্মসংস্থানে কোন বাধা দান করবে না। তখনই এর বিরুদ্ধে সরব হয়ে উঠেছেন চীনা নাগরিকরা।
বেজিং দীর্ঘকাল ধরেই তালিবানকে পূর্ব তুর্কিস্তান ইসলামী আন্দোলনের সাথে যুক্ত করেছে। জিনজিয়াংয়ে সন্ত্রাসী হামলার পিছনেও তাদের এই বয়ানের ভূমিকা আছে বলেই মনে করেন অনেকে। সেখান থেকে হঠাৎ চীনের দৃষ্টিভঙ্গি বদল মেনে নিতে পারছেন না অনেকেই। চীনের সোশ্যাল মিডিয়া সাইট ওয়াইবোতেও যথেষ্ট আলোচনা চলছে এই বিষয়ে।