কেবল অন্যদেশে নয়, এবার সূর্যতেও উঁকি মারবে চিন! আমেরিকাকে টেক্কা দিয়ে বানিয়ে ফেললো বিশ্বের বৃহত্তম সোলার টেলিস্কোপ

বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের বিশ্বে সকল শক্তির উৎস হল সূর্য। পাশাপাশি, সমগ্ৰ সৌরজগতও গঠিত হয়েছে সূর্যকে ঘিরেই। এদিকে, সূর্য সম্পর্কিত বিভিন্ন গবেষণায় বছরের পর বছর যাবৎ লিপ্ত রয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এমতাবস্থায়, এবার সূর্যের অন্দরে উঁকিঝুঁকি দিতে রীতিমতো প্রস্তুত চিন (China)। শুধু তাই নয়, ইতিমধ্যেই বিশ্বের বৃহত্তম সোলার টেলিস্কোপের সমষ্টি (Largest Array Of Telescopes) তৈরি করেছে তারা। এই টেলিস্কোপগুলি ৩.১৪ কিলোমিটার জুড়ে বিশাল বৃত্তের আকারে স্থাপন করা হয়েছে।

জানা গিয়েছে, এটি তৈরি করতে মোট ৩১৩ টি ডিশ (Dishes) ব্যবহার করা হয়েছে। পাশাপাশি, এটির নাম দেওয়া হয়েছে দাওচেং সোলার রেডিও টেলিস্কোপ (Daocheng Solar Radio Telescope, DSRT)। মূলত, টেলিস্কোপটির মাধ্যমে সূর্যের আচরণের পরিবর্তনের ক্রমাগত প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে। শুধু তাই নয়, এই বিশেষ টেলিস্কোপের সাহায্যে পুরো মহাবিশ্বের ওপর নজর রাখতে পারবে চিন। জানা গিয়েছে টেলিস্কোপটি ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে কাজ শুরু করতে পারে।

এই টেলিস্কোপে ৩১৩টি ডিশ বসানো হয়েছে: দাওচেং সোলার রেডিও টেলিস্কোপটিকে চিন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রান্তের সিচুয়ানে স্থাপন করেছে। এটিতে থাকা ৩১৩ টি ডিশের প্রত্যেকটি ১৯.৭ ফুট চওড়া। পাশাপাশি, এগুলিকে ৩.১৪ কিলোমিটার জুড়ে বৃত্তাকারভাবে স্থাপন করা হয়েছে। সর্বোপরি, এই টেলিস্কোপের বিশেষ বিষয় হল এটি সৌর ঝড় এবং করোনাল মাস ইজেকশনের (Coronal Mass Ejections) মত ঘটনা পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হবে।

কি কাজে লাগবে এই টেলিস্কোপ: এই প্রসঙ্গে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, সূর্যের পৃষ্ঠ থেকে বেরিয়ে আসা সবচেয়ে বিপজ্জনক বিস্ফোরণগুলির মধ্যে একটি হল করোনাল মাস ইজেকশন বা সিএমই। এতে ঘণ্টায় কয়েক মিলিয়ন মাইল বেগে মহাকাশে এক বিলিয়ন টন পর্যন্ত পদার্থ বাইরে বেরিয়ে আসতে পারে। এদিকে, এসব পদার্থ যদি পৃথিবীর দিকে চলে আসে, সেক্ষেত্রে পাওয়ার গ্রিড, টেলিকমিউনিকেশন, মহাকাশে প্রদক্ষিণকারী স্যাটেলাইট এবং মহাকাশচারীরাও বড়সর বিপদের সম্মুখীন হবেন। তবে, এই টেলিস্কোপকে কাজে লাগিয়ে আগে থেকেই এই বিপদের আঁচ পাওয়া সম্ভব হবে।

এখন বিপদ আগে থেকেই জানা যাবে: এই সোলার টেলিস্কোপটি প্রস্তুতকারী দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য তথা চিনা  বিজ্ঞানী উ লিন এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, “আমরা এখন বলতে পারি পৃথিবীর দিকে সৌর ঝড় আসবে কি না।” পাশাপাশি, তিনি আরও বলেন, “যদি সৌর ঝড় পৃথিবীর দিকে এসে আমাদের কাছে পৌঁছনোর মত ঘটনা কখনও ঘটে সেক্ষেত্রে আমরা আগে থেকেই এই ধরণের ভয়াবহ সৌর ঝড়ের বিষয়ে সতর্কতা জারি করতে পারব। এভাবেই এখন মহাকাশের আবহাওয়াও অনুমান করা যায়। যাতে ভবিষ্যতে মহাকাশে স্যাটেলাইটের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায়।”


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর