বাংলাহান্ট ডেস্ক: ধীরে ধীরে এশিয়ার প্রায় সব দেশের সঙ্গেই বিবাদে জড়াচ্ছে চিন (China)। দক্ষিণ চিন সাগর নিয়ে ইতিমধ্যেই বিবাদ চলছে ফিলিপিন্স এবং চিনের মধ্যে। এ বার সেই তালিকা নাম লেখাল মালয়েশিয়াও। চিনের বিরুদ্ধে সরাসরি হুঙ্কার দিল তারা। মালয়েশিয়া জানিয়েছে, দক্ষিণ চিন সাগরে তাদের কাজে চিন বাধা দিলে নিজেদের আত্মরক্ষা করবে তারা। সম্প্রতি চিন দক্ষিণ চিন সাগরে চলা মালয়েশিয়ার শক্তি প্রকল্পগুলির বিরোধীতা করেছিল।
চিনের এই বিরোধীতার পরেই এমন বিবৃতি দিল মালয়েশিয়া। প্রধানমন্ত্রী আনওয়ার ইব্রাহিম জানিয়েছেন, দক্ষিণ চিন সাগরে চলা তাদের কাজে আপত্তি জানিয়েছে চিন। মালয়েশিয়ার শক্তি সংস্থা পেট্রোনাসের বেশ কয়েকটি প্রকল্প চলছে দক্ষিণ সাগরে। কিন্তু এটি মালয়েশিয়ার জলসীমাতেই চলছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ফলে চিনের সেখানে আপত্তি করার কথা নয়।
কিন্তু মালয়েশিয়ার জলসীমায় চলা প্রকল্পগুলি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে চিন। সেই কারণেই এ বার চিনকে একহাত নিলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনওয়ার ইব্রাহিম। তিনি আরও জানিয়েছেন, এ বিষয়ে চিনের সঙ্গে আলোচনায় যেতে রাজি তিনি। কিন্তু তাঁর এই পদক্ষেপের বিরোধীতা করেছে বিরোধী পক্ষের নেতৃত্ব। তাদের বক্তব্য, চিনের সঙ্গে বৈঠকে যেতে রাজি হয়ে আনওয়ার মালয়েশিয়ার সর্বভৌমত্বের ক্ষতি করছেন।
বিরোধী নেতৃত্বের বিবৃতির পর মালয়েশিয়ার বিদেশ মন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতি জারি করা হয়। সেখানে বলা হয়েছে, দক্ষিণ চিন সাগরে চলা সমস্ত বিবাদ শান্তিপূর্ণভাবে মিটিয়ে নিতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। দেশের সর্বভৌমত্ব রক্ষা করেই এই পদক্ষেপ করতে চাইছেন তিনি। এর আগে একাধিক দেশের প্রধানরা দাবি করেছেন, চিন পুরো দক্ষিণ চিন সাগরের দখল নিতে চাইছে। উল্লেখ্য, এই সমুদ্র দিয়ে বছরে প্রায় ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের ব্যবসা হয়।
মালয়েশিয়া এবং চিনের পাশাপাশি ব্রুনেই, ফিলিপিন্স, তাইওয়ান এবং ভিয়েতনামও এই সমুদ্রে তাদের ভাগ চাইছে। অন্যদিকে, দক্ষিণ চিন সাগরে মালয়েশিয়ার এক্সক্লুসিভ অর্থনৈতিক জোনে তেল ও গ্যাসের কারবার চালায় পেট্রোনাস। গত কয়েক বছরে একাধিক চিনা জাহাজের পেট্রোনাসের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে। চিনের দাবি, তাদের মানচিত্রে ভূমির পাশাপাশি দক্ষিণে ১৫০০ কিলোমিটার জলসীমাও তাদের। কিন্তু এর ফলে বাকি দেশগুলি দক্ষিণ চিন সাগর থেকে তাদের অধিকার হারিয়ে ফেলছে। ২০১৬ সালে একটি আন্তর্জাতিক আদালতও চিনের দাবি খারিজ করে দিয়েছিল।