বাংলা হান্ট ডেস্ক: রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলা দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধে এবার বিচলিত হয়ে পড়ছে চিন। ইতিমধ্যেই এই যুদ্ধের কারণে চিন একাধিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। যা ভবিষ্যতে সেদেশের জন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে। এমতাবস্থায়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের এক মাসেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত কোনো ফলাফল নির্ধারিত হয়নি।
ভুল ভেবেছিলেন জিনপিং:
রাশিয়া যখন ইউক্রেন আক্রমণ করে, তখন ভ্লাদিমির পুতিনের মত চিনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংও আশা করেছিলেন যে রুশ সেনাবাহিনী কিছুদিনের মধ্যেই ইউক্রেন দখল করবে। কিন্তু তা হয়নি। বরং পশ্চিমী অস্ত্রের সাহায্যে ইউক্রেনের সৈন্যরা ক্রমাগত রাশিয়াকে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে ফেলেছে।
বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এসেছে ধাক্কা:
এই যুদ্ধে রাশিয়া যেভাবে আটকা পড়েছে, চিনও সেই একই আতঙ্ক অনুভব করছে। এর অনেক কারণও রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, চিন বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়িক দেশ। এদিকে, দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ বিশ্বের বাণিজ্যকে খারাপভাবে প্রভাবিত করেছে। জাহাজ চলাচল, স্থল পরিবহন, বিমান চলাচল, বন্দর থেকে শুরু করে সবকিছুই যুদ্ধের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছে বেইজিং-এও।
অর্থনীতিতে মারাত্মক আঘাত হানবে:
উপরন্তু, চিনের জ্বালানি নিরাপত্তা পরিকাঠামো অত্যন্ত দুর্বল এবং ভারতের মত এটি তার অর্থনীতি এগিয়ে নিয়ে যেতে আমদানি করা হাইড্রোকার্বনের উপর নির্ভর করে। এর সহজ অর্থ হল তেলের দাম ক্রমাগত বৃদ্ধি এই অর্থনীতিকেও প্রভাবিত করবে।
যদিও দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ নিয়ে আমেরিকার কোনো সমস্যা নেই। বিপরীতে, সেদেশ কেবল লাভবান হচ্ছে। জ্বালানি চাহিদার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোনো দেশের ওপর নির্ভরশীল নয় এবং যুদ্ধের কারণে তার অস্ত্র বাণিজ্য বেড়েই চলেছে।
তাইওয়ানকে চোখ রাঙানোর আগে ভাবতে হবে চিনকে:
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে কিয়েভ যেভাবে রুশ সেনাবাহিনীকে জেরবার করেছে, তাতে চিনও শিক্ষা নিয়েছে। ন্যাটো এবং আমেরিকা হয়তো সরাসরি তাদের সৈন্য পাঠায়নি, কিন্তু তারা অস্ত্র ও প্রযুক্তির সাহায্যে ইউক্রেনকে সাহায্য করছে। এমতাবস্থায় চিন যদি তাইওয়ানে হামলার চেষ্টা করে, তাহলে তার অবস্থাও রাশিয়ার মতো হতে পারে। কারণ সেই পরিস্থিতিতে তাইওয়ানকে সমর্থন করবে আমেরিকা।
এতে চিনের উদ্বেগও বাড়বে:
এই যুদ্ধে একটা বিষয়ও সামনে এসেছে যে, পশ্চিমী দেশগুলির আধুনিক অস্ত্রের সামনে রাশিয়ার অস্ত্র খুব একটা টিকতে পারছে না। এমন পরিস্থিতিতে ভারতের মতো চিনকেও চিন্তিত হতে হবে, কারণ তার প্রতিরক্ষা বহরে রয়েছে রাশিয়ান ডিজাইনের প্ল্যাটফর্ম।
এদিকে, সামগ্রিকভাবে, ইউক্রেনের সাথে রাশিয়ার সাম্প্রতিক যুদ্ধ চিনের অর্থনীতি, তার কৌশল এবং তাইওয়ানের মতো দেশগুলির দিকে চোখ বন্ধ করার মানসিকতাকে প্রভাবিত করবে। এমতাবস্থায়, শি জিনপিংকে অনেক ভেবেচিন্তে কাজ করতে হবে। অন্যদিকে, তাঁরাও নিশ্চয়ই চাইছেন এই যুদ্ধের ওপর অচিরেই সমাপ্তি নেমে আসুক।