বাংলা হান্ট ডেস্ক: ক্রমশ পরিস্থিতি শোচনীয় হচ্ছে চিনের (China)। কারণ, সেদেশের রিয়েল এস্টেট সঙ্কট রীতিমতো আতঙ্কিত করে তুলছে। ইতিমধ্যেই জানা গিয়েছে যে, দেশের সবথেকে বড় প্রাইভেট প্রোপার্টি ডেভেলপার কোম্পানি কান্ট্রি গার্ডেনও বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে ঋণখেলাপি হয়েছে। এই কোম্পানির বৈদেশিক ঋণ রয়েছে ১১ বিলিয়ন ডলার এবং অভ্যন্তরীণ ঋণের পরিমাণ হল ৬ বিলিয়ন ডলার। এদিকে, এইভাবে ওই কোম্পানি ডিফল্ট হওয়ার পর চিনের সমস্যা বেড়েছে।
এর কারণ হল, রিয়েল এস্টেট চীনের অর্থনীতির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জুড়ে রিয়েছে। এমতাবস্থায়, রিয়েল এস্টেট কোম্পানিগুলি ডুবে যাওয়ার কারণে ব্যাঙ্কগুলির অবস্থারও অবনতি হতে পারে। যার জেরে দেশের সমগ্র অর্থনীতি ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হতে পারে। উল্লেখ্য যে, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে চিনের অর্থনীতির গ্রোথ ৪.৯ শতাংশ ছিল। যা দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের ৬.৩ শতাংশের তুলনায় কম ছিল।
এদিকে, চিন সরকার হাউসিং ডিমান্ড বাড়াতে বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু বাড়ি বিক্রি গত বছরের তুলনায় অনেক কম রয়েছে। চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে দেশে প্রোপার্টি ইনভেস্টমেন্ট কমেছে ৯.১ শতাংশ। গত আগস্টে, কান্ট্রি গার্ডেন বছরের প্রথমার্ধের পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছিল। সেই সময়ের মধ্যে, কোম্পানিটি ৬.৭ বিলিয়ন ডলারের রেকর্ড ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এমতাবস্থায়, কোম্পানির ডিফল্ট নিশ্চিত হলে বিদেশি ঋণগ্রহীতারা পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার জন্য আর্থিক উপদেষ্টাদের সাথে আলোচনা শুরু করতে পারে। পাশাপাশি, কোম্পানির ঋণ বিবেচনার এই প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ সময় লাগতে পারে।
আরও পড়ুন: ভিখারি পাকিস্তানের সবথেকে ধনী ব্যক্তির মেয়ে, যার সম্পত্তির পরিমাণ চমকে দেবে আম্বানিকেও
কিভাবে সঙ্কট শুরু হয়: ২০২১ সালে, কান্ট্রি গার্ডেনের প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানি এভারগ্রান্ড ডিফল্ট করেছিল। যার মাধ্যমে চিনে রিয়েল এস্টেট সঙ্কটের সূচনা হয়। ওই প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। ২০২০ সালে, চিন সরকার রিয়েল এস্টেট কোম্পানিগুলির নেওয়া ঋণের সীমা সংক্রান্ত নিয়ম তৈরি করে। যার ফলে রিয়েল এস্টেট শিল্প পুরোপুরি টলে গিয়েছিল। এভারগ্রান্ড একসময় চিনের টপ সেলিং ডেভেলপার কোম্পানি ছিল। বর্তমানে এটিরও ৩০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ঋণ রয়েছে। যা বিশ্বের যেকোনো রিয়েল এস্টেট কোম্পানির সর্বোচ্চ ঋণ। পাশাপাশি, দেশের একাধিক রিয়েল এস্টেট কোম্পানি ঋণখেলাপি হয়েছে। যার জেরে ওই দেশে বহু প্রকল্প ঝুলে আছে।
আরও পড়ুন: বন্ধুকে ২,০০০ টাকা ধার দিতে গিয়ে ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে ঢুকল ৭৫৩ কোটি, তারপরে যা ঘটল জানলে চমকে উঠবেন
এদিকে, রিয়েল এস্টেট ছাড়াও, চিনের অর্থনীতি আরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে লড়াই করছে। দেশের অর্থনীতির বৃদ্ধি হ্রাস হওয়ার পাশাপাশি স্থানীয় সরকারের ঋণ বাড়ছে এবং বেকারত্ব চরমে পৌঁছেছে। মন্দার ভয়ে মানুষ খরচ এড়িয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে, বিদেশি কোম্পানিগুলি চিন থেকে মুখ ফেরাচ্ছে পাশাপাশি, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা অর্থ তুলে নিচ্ছে। এছাড়াও, আমেরিকার সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা পরিস্থিতি আরও জটিল করেছে।