ভারতে তৃতীয়বারের জন্য আসছে মোদী সরকার! এক্সিট পোলের ফলাফল সামনে আসতেই মুখ খুলল চিন

বাংলা হান্ট ডেস্ক: চিনের (China) সরকারি সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস এক্সিট পোলের পরিসংখ্যান অনুযায়ী তৃতীয়বারের জন্য ভারতে (India) মোদী সরকার গঠনের সম্ভাবনার বিষয়ে এবার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। উল্লেখ্য যে, গ্লোবাল টাইমসকে চিনা কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কমিউনিস্ট পার্টির কৌশলীরা যা প্রকাশ্যে বলতে পারেন না, তাঁরা প্রায়ই সরকারি মিডিয়ার মাধ্যমে বলে থাকেন। এমন পরিস্থিতিতে গ্লোবাল টাইমসের মতামতকেও চিনা কমিউনিস্ট পার্টির সাথে যুক্ত করে বিবেচনা করা হয়। গ্লোবাল টাইমস এক নিবন্ধে লিখেছে, “এক্সিট পোল দেখায় যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টানা তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসতে পারেন। এমন পরিস্থিতিতে চিনা বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে মোদীর সামগ্রিক দেশীয় ও বিদেশি নীতি ধারাবাহিকভাবে অব্যাহত থাকবে। কারণ ভারত অর্থনৈতিক বৃদ্ধির প্রচারে তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।”

গ্লোবাল টাইমস ভারত-চিন বন্ধুত্বের সম্ভাবনা প্রকাশ করেছে: গ্লোবাল টাইমস আরও লিখেছে, “বিশ্লেষকরা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে সুস্থ ও স্থিতিশীল উন্নয়নের পথে ফিরিয়ে আনতে, মতভেদ দূর করতে করতে এবং উন্মুক্ত যোগাযোগ বজায় রাখতে চিনের সাথে ভারতের সহযোগিতার গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছেন। গত ১৯ এপ্রিল শুরু হওয়া লোকসভা নির্বাচন গত শনিবার শেষ হয়েছে। ভারতীয় মিডিয়া রবিবার জানিয়েছে যে, ভারতের ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সকে ১২ টি এক্সিট পোলে বড় বিজয়ের পূর্বাভাস দিয়েছে।”

ভারতের বিদেশনীতি আরও শক্তিশালী হবে: চিনা গণমাধ্যম লিখেছে, “বিশ্লেষকরা বলেছেন যে মোদী যদি জয়ী হন, সেক্ষেত্রে তাঁকে তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর পরে দ্বিতীয় ভারতীয় নেতা করে তুলবে। মোদীর সামগ্রিক দেশীয় ও বিদেশি নীতিগুলি শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা প্রত্যাশিত রয়েছে। যেখানে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।” এদিকে, সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজি ইনস্টিটিউটের গবেষণা বিভাগের নির্দেশক কিয়ান ফেং রবিবার গ্লোবাল টাইমসকে জানিয়েছেন যে, মোদী দেশীয় ও বিদেশি নীতির যে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন তা অনুসরণ করতে থাকবেন এবং কয়েক বছরের মধ্যেই ভারত আমেরিকা এবং চিনের পর তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত করার ক্ষেত্রে অগ্রগতি বজায় রাখবে।

China opened its mouth as soon as the results of the exit poll came out.

ভারতের বিশ্বব্যাপী প্রভাবও বাড়বে: কিয়ান বলেন, এছাড়াও, মোদীর কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গিতে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে ভারতের বিশ্বব্যাপী প্রভাব বাড়ানোর জন্য অবিরত অনুসন্ধান অন্তর্ভুক্ত থাকবে। ভারতকে একটি নেতৃস্থানীয় শক্তিতে পরিণত করার প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সঙ্গতি রেখে, মোদী সরকার চিন-ভারত সম্পর্কের বিষয়ে আরও এগিয়ে যাবে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন মোদীর তৃতীয় মেয়াদে চিন ও ভারতের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়বে এমন সম্ভাবনা নেই।

আরও পড়ুন: এবার থেকে অন্ধ্রপ্রদেশের রাজধানী নয় হায়দ্রাবাদ! সরকারি সম্পত্তি দখলের নির্দেশ তেলেঙ্গানা সরকারের

ভারত-চিন সম্পর্কের উন্নতির প্রয়োজনীয়তা ব্যক্ত করেছেন: ফুদান ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের ডেপুটি ডিরেক্টর লিন মিনওয়াং রবিবার গ্লোবাল টাইমসকে বলেন, “চিনের সঙ্গে জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো আমেরিকার সহযোগী দেশসহ একাধিক দেশের মধ্যে সম্পর্ক এখন উন্নত হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারত হয়ত প্রশ্ন তুলতে পারে চিন-ভারত সম্পর্কের কোনো উন্নতি বা ইতিবাচক দিক কেন পরিলক্ষিত হচ্ছে না।” এপ্রিল মাসে আমেরিকান ম্যাগাজিন নিউজউইকের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে মোদী বলেছিলেন যে চিনের সাথে সম্পর্ক ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং অর্থবহ। তিনি বলেছিলেন, ভারত ও চিনকে “সীমান্তে দীর্ঘস্থায়ী পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান করতে হবে। যাতে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অস্বাভাবিকতা পেছনে ফেলে দেওয়া যায়।”

আরও পড়ুন: একতরফা হবে ম্যাচ! T20 বিশ্বকাপে টিম ইন্ডিয়ার এই ৩ খেলোয়াড়ই হেলায় হারিয়ে দেবেন পাকিস্তানকে

মতভেদ নিরসনের আহ্বান জানিয়েছেন: মোদী আরও বলেন, ভারত ও চিনের মধ্যে স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক শুধু দুই দেশের জন্য নয়, সমগ্র অঞ্চল ও বিশ্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী মোদীর পরবর্তী মেয়াদে ভারত যদি চিনের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে পারে, তাহলে তা দুই দেশের সম্পর্কের উন্নতির পথ প্রশস্ত করতে পারে। তাঁদের মতে, ভারত-চিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখা এবং আলোচনা ও যোগাযোগের মাধ্যমে পার্থক্য সমাধানে চিনকে সহযোগিতা করা প্রয়োজন। যাতে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের সুস্থ ও স্থিতিশীল উন্নয়ন নিশ্চিত করা যায়।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর