তিব্বত নিয়ে চিনকে প্রত্যাঘাত আমেরিকার! ক্ষততে এবার নুন ছেটাল ভারতও, ছটফট করছে বেজিং

   

বাংলা হান্ট ডেস্ক: তিব্বতের (Tibet) প্রসঙ্গে আমেরিকার (America) পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ চিন (China)। এদিকে, ইতিমধ্যেই আমেরিকা চিনকে তীব্রভাবে জখম করেছে। আর এই জখম আরও গভীর হয়েছে যখন প্রধানমন্ত্রী মোদী (Narendra Modi) সেই ক্ষততে কার্যত লবণ ছিটিয়েছেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী মোদীর একটি ছবি সামনে এসেছে। ওই ছবি দেখে পুরোপুরি হতবাক হবে চিন। জানিয়ে রাখি যে, আমেরিকা ইতিমধ্যেই চিনের অনুরোধ উপেক্ষা করেছে। চিন বারবার বলেছিল যে, আমেরিকান প্রতিনিধিদলের তিব্বতে দলাই লামার সাথে দেখা করা উচিত নয়। কিন্তু আমেরিকা চিনের কথা শোনেনি। বরং, আমেরিকান প্রতিনিধিদল চিনের আবেদন ও সতর্কতা উপেক্ষা করেছে।

পরপর আঘাত পাচ্ছে চিন: প্রথমেই চলুন জেনে নিই আমেরিকা কিভাবে চিনকে দু’বার আঘাত করেছে। মূলত, আমেরিকা এখন চিনকে বিচ্ছিন্ন করতে ব্যস্ত রয়েছে। শুধু তাই নয়, আমেরিকা প্রকাশ্যে তিব্বতের পক্ষে খেলছে। তারা এটাই দেখাতে চায় যে, আমেরিকা তিব্বতের জনগণের পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও, আমেরিকা এটাও চায় যে তিব্বতে চিনের কোনো হস্তক্ষেপ যেন না থাকে। এই কারণে আমেরিকা “তিব্বত নীতি ও সহায়তা আইন ২০২০” পাস করেছে। এটি তিব্বত সম্পর্কে আমেরিকার সেই সরকারী নীতি যেখানে বলা হয়েছে দলাই লামার উত্তরাধিকার একটি সম্পূর্ণরূপে ধর্মীয় বিষয়। যা শুধুমাত্র দলাই লামা এবং তার অনুসারীরাই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এখন, এটি শুধু জো বাইডেনের স্বাক্ষরের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। আর এইভাবেই তিব্বত ইস্যুতে আমেরিকা তার অবস্থান স্পষ্ট করেছে।

China received shock from America and India on Tibet issue.

আমেরিকা গভীর ক্ষত দিয়েছে: এদিকে, চিন বারবার আমেরিকাকে সতর্ক করে দিয়েছিল এটা না করতে। এই তিব্বত বিলের বিরোধিতা করতে থাকে চিন। এমনকি চিন জো বাইডেনকে এটিতে স্বাক্ষর না করার জন্য অনুরোধ করেছিল। চিন বলেছে যে, তিব্বত তার অভ্যন্তরীণ সমস্যা এবং সেখানে হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে আমেরিকাকে তারা ধমকও দিয়েছিল। কিন্তু, চিনের এসব হুমকি আমেরিকার ওপর কোনো প্রভাব ফেলেনি। এদিকে, আমেরিকা তখনই চিনকে আরেকটি আঘাত দেয়। মূলত, দ্বিতীয় আঘাতটি ছিল ধর্মশালায় দালাই লামার সঙ্গে আমেরিকান প্রতিনিধিদলের বৈঠক। চিন বারবার সতর্ক করেছিল যে, আমেরিকান প্রতিনিধিদলটি যেন দালাই লামার সাথে দেখা না করে। কিন্তু, সেই দাবি মেনে নেয়নি আমেরিকা। ম্যাককলের নেতৃত্বে ওই প্রতিনিধিদল বুধবার ধর্মশালায় দালাই লামার সঙ্গে দেখা করে। ম্যাককল ছাড়াও, ওই গ্রুপে আরও ছয়জন বিশিষ্ট সদস্য অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তাঁরা হলেন ন্যান্সি পেলোসি, ম্যারিওনেট মিলার, গ্রেগরি মিক্স, নিকোল ম্যালিওটাকিস, জিম ম্যাকগভর্ন এবং অ্যামি বেরা।

আরও পড়ুন: ট্রেনের ওয়েটিং লিস্টের ঝামেলা থেকে এবার মিলবে মুক্তি! দুর্ধর্ষ প্ল্যান তৈরি ভারতীয় রেলের, সামনে এল তথ্য

এইভাবে ক্ষতে নুন দিলেন মোদী: আমেরিকার এই দুই আঘাতের যন্ত্রণায় চিনের হাহাকারের মাঝেই বড় ঝটকা দিয়েছেন মোদী। মূলত, ধর্মশালায় তিব্বতের আধ্যাত্মিক গুরু দলাই লামার সঙ্গে দেখা করার পর আমেরিকান প্রতিনিধিদল সরাসরি দিল্লি পৌঁছে যায়। গত বৃহস্পতিবার তাঁরা প্রধানমন্ত্রী মোদীর সাথে দেখা করেন। তারপরেই প্রকাশ্যে এসেছে মোদী ও আমেরিকান প্রতিনিধিদলের বৈঠকের ছবি। এই ছবি দেখার পর চিন ধাক্কা খাবেই। এর কারণ হল, তিব্বত নিয়ে ভারতের অবস্থান আমেরিকার মতোই। ভারতও তিব্বতের স্বাধীনতার পক্ষে রয়েছে।

আরও পড়ুন: সুপার এইটের প্রথম ম্যাচ জিতেও নেই স্বস্তি! এইভাবে ভারতের সমস্যা বাড়াচ্ছে অস্ট্রেলিয়া, রয়েছে বিরাট “প্যাঁচ”

তিব্বত নিয়ে চিন ক্ষেপে গেল কেন: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি, চিন তিব্বতকে তার অংশ বলে মনে করে। কিন্তু, তিব্বতের মানুষ বছরের পর বছর ধরে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখে আসছেন। এমতাবস্থায়, বিলটি পাস করে আমেরিকা চিনকে এই বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছে যে তারাও তিব্বতের স্বাধীনতার পক্ষে। আমেরিকা এবং ভারত উভয়ই বিশ্বাস করে যে তিব্বতি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার রয়েছে এবং তাঁদের স্বাধীনভাবে ধর্ম পালন করার অনুমতি দেওয়া উচিত। যদিও, চিন চায় তার অনুমতি ছাড়া তিব্বতে একটি পাতাও নড়বে না। শুধু তাই নয়, চিন দলাই লামাকে বিশ্বাসঘাতক ও বিচ্ছিন্নতাবাদী বলেও মনে করে।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর