ওয়েব ডেস্কঃ এই সময় গোটা বিশ্ব কোরনা ভাইরাসের (Coronavirus) প্রকোপে সর্বশান্ত। কিছু কিছু দেশ তো একেবারে ধ্বংসের মুখে। আর সেই দেশ গুলোর মধ্যে আমেরিকা, ইতালি, স্পেন (Spain), জার্মানি আর ইরানের অবস্থা সবথেকে খারাপ। আমেরিকায় এখনো পর্যন্ত ১,২৩,৭৮০ জন আক্রান্ত হয়েছে। ইতালিতে ৯২,৪৭২ জন আক্রান্ত হয়েছে। আরেকদিকে স্পেনে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে ৭৩,২৩৫ এ পৌঁছে গেছে।
কিন্তু এর মধ্যে করোনা ভাইরাস সবার আগে পাওয়া চীনে (China) পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। চীনের হবেই আর বুহান (Wuhan) শহর থেকে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। আর এবার গোটা বিশ্বের নজর চীনের দিকে আছে। সবাই এখন এটাই জানতে চায় যে, চীন কি করে এত তাড়াতাড়ি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হল? এর সাথে বিশ্ব এটাও জানতে চায় যে, চীন তাঁদের কিভাবে সাহায্য করতে পারবে? করোনা ভাইরাসের ফায়দা তোলার জন্য চীন এবার সাহায্যের নামে ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে।
চীনে সাহায্যের নামে ব্যবসা সর্বপ্রথম স্পেনের সাথে শুরু করেছে। চীন স্পেনকে মেডিকেল উপকরণ বিক্রি করছে। চীন স্পেনকে ৩৪৫৬ কোটি টাকার মেডিকেল উপকরণ বিক্রি করেছে। আর ওই উপকরণের মধ্যে বেশিরভাগই অযোগ্য বলে জানা গিয়েছে। বিদেশ মামলায় বিশেষজ্ঞ গর্ডন চাং জানিয়েছে, ‘চীনের নিজেদের টাকা, মেডিকেল উপকরণ আর ডাক্তার এবং প্যারা মেডিকেল স্টাফের ব্যবহার বিশ্বকে এটা দেখাতে করছে যে, আমেরিকা করোনা ভাইরাসকে নিজেদের দেশে রুখতে ব্যর্থ, আর তাঁরা আমেরিকার ঘনিষ্ঠ দেশগুলোর সাহায্য করছে। এই সময় স্পেন, ইতালি, ফ্রান্সের মতো আমেরিকার ঘনিষ্ঠ দেশ গুলো সাহায্যের জন্য চীনের দিকে চেয়ে আছে।”
আটলান্টিক কাউন্সিল অফ ইউরেশিয়া সেন্টারে সিনিয়ার ফেলো দিমিত্রি বেচেব জানাচ্ছেন, চীন বৈশ্বিক মহামারীর এই সুযোগকে বেকার যেতে দিতে চায়না। উনি জানাচ্ছেন, চীনের উপর এই মহামারী তৈরি করা আর এটিকে ছড়িয়ে দেওয়া নিয়ে অনেক অভিযোগ উঠেছে। আর সেই কারণে ওঁরা এখন নিজেদের প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদল আর লাভ কামানর জন্য তৎপর।
বর্তমান সময়ে এটার জন্য এর থেকে ভালো সময় আর হতে পারেনা। প্রতিটি দেশে চীনের মেডিকেল উপকরণ আর ডাক্তারদের দল মানুষকে এই মারক ভাইরাসকে বাঁচাতে দেখা যাচ্ছে। চীন আমাদের এটা দেখাতে চাইছে যে, তাঁরা গোটা বিশ্বে কিভাবে মহামারীর সাথে যুদ্ধ করছে।
ফক্স নিউজ অনুজাউ, চাং বলছেন, ‘চীন বিশ্বকে এটা দেখাতে চাইছে যে তাঁরা মেডিকেল উপকরণ দান করছে। কিন্তু আসলে এটা হচ্ছে না। ওঁরা যেসব উপকরণ দানে দিচ্ছে সেগুলো বেকার, আর ভালো উপকরণ গুলো ওঁরা বিশ্বের কাছে মোটা টাকায় বিক্রি করে দিচ্ছে।”
স্পেনের স্বাস্থ মন্ত্রী বুধবার জানিয়েছেন যে, স্পেন চীনের থেকে ৩৪৫৬ কোটি টাকার ৯৫০ টি ভেন্টিলেটর, ৫৫ লক্ষ টেস্টিং কিট, ১.১ কোটি গ্লাভস আর ৫০ কোটির বেশি মাস্ক কিনেছে। মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, চীন থেকে স্পেনে মেডিকেল উপকরণ পৌঁছানর পরেই অযোগ্য ৯০০০ করোনা টেস্ট কিট স্পেন চীনকে ফেরত দিয়ে দিয়েছে। এরপর চীন এটাও স্বীকার করে যে, তাঁরা যেসমস্ত টেস্ট কিট স্পেনকে দিয়েছিল তাঁরা সেগুলো Bioeasy নামের একটি কোম্পানির থেকে কিনেছিল।
অবাক করা কথা হল, ওই কোম্পানির কাছে এখনো পর্যন্ত করোনার টেস্ট কিট বানানোর লাইসেন্স নেই। এরকম উপকরণের উপর পয়সা আর সময় বরবাদ করা স্পেনের ধ্বংসের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। আপানদের জানিয়ে দিই, পজেটিভ মামলা বাড়ার কারণে দুই সপ্তাহ আগেই স্পেনে লকডাউন ঘোষণা হয়েছিল।