ভারতের পাশে দাঁড়িয়ে পশ্চিমা দেশগুলোকে আক্রমণ চিনের! অবাক করা কর্মকাণ্ড বেজিংয়র

বাংলা হান্ট ডেস্ক: ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বিদেশে গম রপ্তানি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও, দেশের এহেন সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছে সাতটি পশ্চিমী দেশের সংগঠন জি-৭। তবে, উল্লেখযোগ্যভাবে এই বিষয়ে ভারতকে সমর্থন জানিয়েছে চিন। শুধু তাই নয়, ইতিমধ্যেই চিনের জাতীয় মুখপত্র গ্লোবাল টাইমসে বলা হয়েছে যে, এই অবস্থায় শুধুমাত্র ভারতকে দোষ দিলেই বিশ্বব্যাপী খাদ্য সঙ্কটের সমাধান হবে না। এমনকি, পশ্চিমী দেশগুলিকেও বিঁধতে দেখা যায় চিনকে।

গ্লোবাল টাইমসে বলা হয়েছে যে, “জি-৭ দেশগুলি ভারতকে অনুরোধ করছে গম রপ্তানি বন্ধ না করতে। কিন্তু, এমতাবস্থায় জি-৭ দেশগুলি নিজেরাই গম রপ্তানির পরিমাণ বাড়িয়ে খাদ্য সঙ্কট দূর করার কেন চেষ্টা করছে না?” শুধু তাই নয়, ওই সংশ্লিষ্ট পত্রিকাটির সম্পাদকীয় বিভাগে আরও লেখা হয়েছে যে, ভারতের তুলনায় অনেক বেশি পরিমাণে গম রপ্তানি করে আমেরিকা, কানাডা-সহ দেশগুলি। তাই খাদ্য সঙ্কট সমাধানে তাদেরই এবার এগিয়ে আসা উচিত।

পাশাপাশি, সেখানে আরও বলা হয় যে, এই সঙ্কটকালে যদি পশ্চিমী দেশগুলিই গম রপ্তানির পরিমাণ কমিয়ে দিতে পারে, তাহলে ভারতের দিকে কখনোই আঙুল তোলা উচিত নয় তাদের। তবে, এখানেই শেষ নয়, ওই পত্রিকা আরও জানিয়েছে যে, বিশ্বের দ্বিতীয় গম উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে বিবেচিত হয় ভারত। যদিও, বিপুল জনসংখ্যার কারণে দেশের মধ্যেই গমের প্রচুর চাহিদা পরিলক্ষিত হয়।

এমতাবস্থায়, নিজের দেশেই গমের চাহিদা মেটাতে কার্যত হিমশিম খেতে হচ্ছে ভারতকে। তাই গম রপ্তানি নিয়ে নয়াদিল্লিকে দোষারোপ করা আদৌ শোভা পায়না জি-৭ দেশগুলির। আর এভাবেই ভারতকে সমর্থন করেছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র চিন। পাশাপাশি চিনের পক্ষে জানানো হয়েছে, খাদ্য সঙ্কটের মোকাবিলা করতে জি-৭ দেশগুলি যদি কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করে, তাহলে সেটিকে স্বাগত জানাবে চিন। কিন্তু, ভারত-সহ অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলিকে যাতে অযথা দোষ দেওয়া না হয় সেদিকটিও বিবেচনা করার আর্জি জানিয়েছে জিনপিংয়ের দেশ।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রচণ্ড গরমে বিপুল ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে গম চাষ। এমতাবস্থায়, উৎপাদন এবং চাহিদার কথা মাথায় রেখেই একপ্রকার বাধ্য হয়ে গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কেন্দ্র। যদিও, ভারতের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে জি-৭-এর অন্যতম সদস্য জার্মানির কৃষিমন্ত্রী কেম ওজডেমির জানিয়েছেন যে, “সকলেই যদি রপ্তানি করা বন্ধ করে দেয়, তাহলে খাদ্য সঙ্কট আরও চরম আকার ধারণ করবে।”

0.71930300 1652533422 34

এদিকে, রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে চলা যুদ্ধের প্রভাবে ইতিমধ্যেই ব্যাপকহারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গমের চাষ। এমনকি, যুদ্ধের আবহে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভেও গমের চাষ করা সম্ভব হচ্ছে না। এমতাবস্থায়, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকেই খাদ্য সঙ্কটের জন্য কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ। তবে, এই পরিস্থিতিতে সকলকে রীতিমত চমকে দিয়ে ভারত সম্পর্কে জি-৭ দেশগুলির এহেন মন্তব্যের বিরোধিতা করে ভারতের পাশেই দাঁড়িয়েছে চিন।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর