ভারত করবে “বেজিং কিলার” K-4 ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা? চিন্তায় উড়ল ঘুম, লুকিয়ে নজর চিনের গুপ্তচর জাহাজের

বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সামনে এসেছে। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, বঙ্গোপসাগরে এরিয়া ওয়ার্নিং জারি করেছে ভারত (India)। এই এরিয়া ওয়ার্নিং প্রায় ১,৬৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ। ওই সতর্কতায় ৩ ও ৪ এপ্রিল নো ফ্লাই জোন ঘোষণা করা হয়েছে। এমতাবস্থায়, ভারত সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণ করা K-4 পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এটিকে “বেজিং কিলার মিসাইলও” বলা হয়। এর রেঞ্জ ৪,০০০ কিলোমিটারেরও বেশি।
এই মিসাইলটি প্রচলিত ওয়ারহেড দিয়ে পারমাণবিক হামলা চালাতেও সক্ষম। এছাড়াও আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ভারত এই এলাকায় সতর্কতা ঘোষণা করার সাথে সাথে একটি চিনা গুপ্তচর জাহাজ Yuan Wang 03-কে ভারত মহাসাগরের দিকে আসতে দেখা যায়। এই জাহাজটি শীঘ্রই মালাক্কা প্রণালী অতিক্রম করে বঙ্গোপসাগরে প্রবেশ করবে।

চিনা গুপ্তচর জাহাজ ক্ষেপণাস্ত্রের তথ্য চুরি করতে পারে: প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, Yuan Wang 03 হল চিনের স্যাটেলাইট এবং মিসাইল ট্র্যাকিং জাহাজ। এটি Yuan Wang সিরিজের সবচেয়ে আধুনিক জাহাজ। শত্রুদেশের মিসাইল ট্র্যাক করার জন্য এটি একাধিক শক্তিশালী অ্যান্টেনা দিয়ে সজ্জিত। এই অ্যান্টেনাগুলি ক্ষেপণাস্ত্রের রেঞ্জ, তার টার্গেট, ক্ষেপণাস্ত্রের প্রকৃতির মতো অনেক তথ্য চুরি করতে পারে। এছাড়াও এই জাহাজ মহাকাশে উপস্থিত স্যাটেলাইটগুলিকেও পর্যবেক্ষণ করতে পারে। এটি চিনকে শত্রুদের অস্ত্র ও নজরদারি সরঞ্জামের গুপ্তচরবৃত্তি করতে সাহায্য করে।

জানিয়ে রাখি, চিন ইতিমধ্যে ভারত মহাসাগরে তাদের ২ টি গুপ্তচর জাহাজ মোতায়েন করেছে। এই জাহাজগুলি মলদ্বীপকে তাদের ঘাঁটি বানিয়ে আশপাশের এলাকায় গুপ্তচরবৃত্তি করছে। চিন এই শ্রেণির ৯ টি জাহাজ তৈরি করেছে। প্রায় ১০০ মিটার দীর্ঘ এই জাহাজ ২০১৬ সালে চিনের স্টেট ওশনিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (SOA) বহরে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।

আরও পড়ুন: শিরে সংক্রান্তি! ভারত, ইরান, আফগানিস্তানের মাঝে বিশ্রী ভাবে ফাঁসল পাকিস্তান! সংকটে অস্তিত্ব

K-4 মিসাইল কতটা শক্তিশালী: জানিয়ে রাখি যে, K-4 হল ভারতের সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপিত পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র। এটি অরিহন্ত ক্লাসের পারমাণবিক সাবমেরিন সজ্জিত করার জন্য DRDO দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রের সর্বোচ্চ রেঞ্জ প্রায় ৪,০০০ কিলোমিটার। ভারত বর্তমানে দু’টি অরিহন্ত শ্রেণির সাবমেরিন পরিচালনা করছে। উল্লেখ্য যে, ভারতের পারমাণবিক সাবমেরিনের জন্য অস্ত্রের প্রয়োজন হলে K-4 ক্ষেপণাস্ত্রের বিকাশ শুরু হয়েছিল। প্রথমে অগ্নি-3 ক্ষেপণাস্ত্রকে কম্প্যাক্ট করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু এই কাজে অসুবিধার পরে, K-4 ক্ষেপণাস্ত্রের বিকাশ শুরু হয়।

আরও পড়ুন: এবার পাকিস্তানি JF-17 ফাইটার জেটের ইঞ্জিন বানাবে ভারত, ৫,২৫০ কোটির চুক্তি পেল HAL

ভারতের পারমাণবিক সাবমেরিনের দিকে কি নজর রাখছে চিন: ভারতের পারমাণবিক সাবমেরিন INS অরিহন্তের দিকে নজর রাখছে চিন। তারা এই সাবমেরিনের সিগনেচার ধরার চেষ্টা করছে। একবার সাবমেরিনের সিগনেচার ধরা গেলেই এটি দ্বিতীয়বার শনাক্ত করা সহজ হয়ে যায়। ভারত যদি K-4 ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করে তবে এটি শুধুমাত্র দু’টি অরিহন্ত ক্লাসের সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণ করা হবে। এমন পরিস্থিতিতে চিনা গুপ্তচর জাহাজের পক্ষে সাবমেরিন শনাক্ত করা সহজ হয়ে উঠবে।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর