বাংলা হান্ট ডেস্কঃ চীন (China) থেকে শুরু হওয়া মারক করোনাভাইরাস (coronavirus) ভারত সমেত বহু দেশে গিয়ে আছড়ে পড়েছে। শুধুমাত্র চীনেই এই ভাইরাসে ৪০০ এর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে, আর প্রায় ২১ হাজার মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। কেরলে এখনো পর্যন্ত তিনজনের মধ্যে এই ভাইরাস পাওয়া গেছে। বিশ্ব স্বাস্থ সংগঠনও এই ভাইরাস নিয়ে এমার্জেন্সি ঘোষণা করেছে। সব দেশই চীন আসা-যাওয়ার সমস্ত রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে।
তবে এটা এমন না যে, এই মহামারি আচমকা গোটা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। উল্লেখ্য, চীনের এক ডাক্তার করোনাভাইরাস নিয়ে সরকারকে অশনি সঙ্কেত দিয়েছিল। এর আগেই সেই ডাক্তারের আওয়াজ সবার কাছে পৌঁছে যেত, কিন্তু সরকার তাঁর কণ্ঠরোধ করে দেয়। ওই ডাক্তারের নাম হল লি বেনলিয়াং (Li Wenliang)।
লি বেনলিয়াং গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর এই ভাইরাসের কথা সরকারকে জানিয়েছিল। যেই মেডিকেল কলেজে সে পড়ত, সেখানকার অনলাইম অ্যালুমনি চ্যাট গ্রুপ WeChat এ বলেছিল যে, হাসপাতালে স্থানীয় মাছ বাজার থেকে সাতজন রোগী এসেছিল, তাঁদের মধ্যে সার্স এর মতো রোগের লক্ষণ পাওয়া গেছিল। এরপর তাঁদের হাসপাতালের আইসোলেশনে রাখা হয়েছিল।
লি জানায়, তদন্তের পর পাওয়া গেছিল যে তাঁরা করোনা ভাইরাসে আক্রন্ত। এটা ভাইরাসের একটা বড়সড় পরিবার। ২০০৩ সালে এই ভাইরাস প্রচুর মানুষের প্রাণ নিয়েছিল, আর চীনের সাথে এই ভাইরাসের সম্পর্ক অনেক পুরনো। ডাক্তার লি বলেন, ‘আমি আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠীদের এই ব্যাপারে অ্যালার্ট করতে চাইছিলাম।”
ডাক্তার লি এর ম্যসেজ ভাওরাল হওয়ার কিছু পরেই পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানোর অভিযোগ তোলে। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা শুধু ও একাই ছিল না। পুলিশ সমস্ত মেডিকেল আধিকারিকদের নিশানায় নিয়েছিল। সরকারের তরফ থেকে নোটিশ জারি করা হয়েছিল যে, কেউ এই ভাইরাস আর রোগীদের কোন তথ্য লিক করবে না। ডাক্তার লি কেও লিখিত ভাবে এই ব্যাপারে ক্ষমা চাইতে হয়, আর বলতে হয় যে সে এই নিয়ে আর কোন কথা বলবে না।
এরপর ২১ হাজারের পাশাপাশি মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যায়। সবথেকে বড় ব্যাপার হল, যেই ডাক্তার এই ভাইরাসের কথা সবার আগে জানিয়েছিল, সে নিজেও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। উনি নিজেই একটি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের কাছে এই কথা স্বীকার করে। ১০ জানুয়ারি বুহানের হাসপাতালে রোগীর চিকিৎসা করার সময় হঠাৎই ওনার জ্বর আসে। ১২ জানুয়ারি থেকে সে হাসপাতালে আছে আর বর্তমানে সে আইসিইউতে আছে। সেও যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে সেটা ১লা ফেব্রুয়ারি জানা যায়।