বাংলাহান্ট ডেস্ক : মোবাইল ফোন কিনে দেওয়ার জন্য নিত্য অশান্তি করতেন স্ত্রী। সংসারে রোজ লেগেই থাকত ঝামেলা। ঘরে শান্তি ফেরাতে বহু কষ্টে স্ত্রীকে দামি স্মার্ট ফোন কিনেও দেন রঙ মিস্ত্রী স্বামী। কিন্তু তারপর শান্তি তো দূর, ঘরছাড়া হলেন স্ত্রীও। প্রেমিকের সঙ্গে স্ত্রী পগার পাড় হওয়ার পর আপাতত দুই সন্তানকে নিয়ে আতান্তরে স্বামী।চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে চুঁচুড়ার রবীন্দ্রনগর এলাকায়। রবীন্দ্রনগরের কালিতলার বাসিন্দা নিতাই দে। পেশায় রঙ মিস্ত্রী তিনি। একটি রঙের কারখানায় কাজ করে যৎসামান্য উপার্জন দিয়েও কোনো অভাব না রাখার চেষ্টাই করতেন তিনি সংসারে। কিন্তু স্ত্রী সুমিকে খুশি করা ছিল একপ্রকার অসাধ্য।
স্ত্রীর বায়নাক্কা মেনে একের পর এক জিনিস এনে দিলেও ক্রমাগত বাড়তে থাকত দাবিদাওয়ার তালিকা। সম্প্রতি একটি দামি মোবাইল ফোনের জন্য স্বামীর কাছে ঘ্যানঘ্যান করতে শুরু করেন সুমি। সংসারে এই নিয়ে নিত্য অশান্তিও হতে থাকে। শেষ মেষ নিজের সামর্থ্যের বাইরে গিয়েও স্ত্রীকে খুশি করতে মোবাইলটি কিনে দেন নিতাই। কিন্তু তাতে হল উলটো ফলই। প্রেম দিবসে প্রেমিকের হাত ধরে ঘর ছাড়লেন সুমি।
জানা যাচ্ছে, ১৪ বছরের বিবাহিত জীবন ওই দম্পতির। একটি ৫ বছর বয়সি মেয়ে এবং ১২ বছরের ছেলেও রয়েছে তাঁদের। বিয়ের শুরু শুরুর দিকে ভালোই কাটছিল সবকিছু। কিন্তু বছর দুয়েক আগেই বদলে যায় সবকিছু। পরিবার সূত্রে খবর, বছর দুয়েক আগে বাড়ির সামনের একটি ঝালাই দোকানের কর্মচারী বাপি বড়ালের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান সুমি। দ্রুতই সে কথা জানাজানি হয় বাড়িতে৷ তা নিয়ে চলতে থাকে নিত্য অশান্তি। কিন্তু স্ত্রীর কথা ভেবেই খুব একটা কড়া হতে পারেননি নিতাই।
সেই সুযোগকেই কাজে লাগান সুমি। বাড়ির পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হতেই স্বামীর উপর মোবাইলের দাবিতে চাপ দিতে শুরু করেন তিনি। বহু কষ্টে নিতাই এনেও দেন সেই মোবাইল। কিন্তু মোবাইল হাতে পাওয়ার পরই দেখা যায় সারাদিন কারণে সঙ্গে কথা বলায় ব্যস্ত থাকেন ওই মহিলা। এরপরই ১৪ ফেব্রুয়ারি মেয়েকে পড়াতে নিয়ে যাচ্ছেন বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি তিনি।
স্ত্রীকে ফেরত পেতে থানার দ্বারস্থও হয়েছেন নিতাই। তিনি জানিয়েছেন, ‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে এর দিন সন্ধ্যে বেলায় মেয়েকে পড়াতে নিয়ে যাচ্ছে বলে বেরোয়। ফেরার পথে বাপি ওকে ফোন করে ডাকে এলাকার একজনের বাড়িতে৷ সেটা দেখে আমি সুমিকে বকাবকি করি। সেই যে বাড়ি থেকে বেরোলো তারপর আর বাড়ি ফেরেনি। এর মধ্যে একদিন ফোন করে ছেলেমেয়ের কথা জিজ্ঞেস করে। তারপর আর কোনো যোগাযোগ করেনি।’ দত্তপুকুরব বাপির কোনো এক আত্মীয়ের বাড়িতেই তাঁরা রয়েছেন বলেও জানান নিতাই। তিনি আরও বলেন, ‘১৬ তারিখ চুঁচুড়া থানায় মিসিং ডায়রি করেছি। ছেলে মেয়ে কান্নাকাটি করছে। আমি চাই সুমি ফিরে আসুক।’ নাতি নাতনীদের মুখ চেয়ে ঘরে ফিরুক বৌমা, এমনটাই দাবি শ্বাশুড়ি জয়া দেরও।