বাংলাহান্ট ডেস্ক: বাংলা ছবির সোনালি সময় আর প্রতিভাবান পরিচালকদের কথা উঠলেই ঋতুপর্ণ ঘোষের (Rituparno Ghosh) নাম আসবে অবধারিতভাবে। বাংলা ইন্ডাস্ট্রিকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তাঁর হাত ধরে অন্য ধারার ছবির সঙ্গে পরিচিত হয়েছিল দর্শক। মিঠুন চক্রবর্তী, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, চিরঞ্জিত চক্রবর্তীদের (Chiranjit Chakraborty) মতো মেনস্ট্রিম ছবির নায়কদের দিয়ে তিনি করিয়েছিলেন চোখের বালি, নৌকাডুবি, বাড়িওয়ালি, তিতলির মতো ছবি। আজ ৩০ মে ঋতুপর্ণ ঘোষের মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁকে স্মরণ করলেন তাঁর ছবির নায়ক চিরঞ্জিত।
ঋতুপর্ণর সঙ্গে একটি মাত্র ছবি, বাড়িওয়ালি করেছিলেন চিরঞ্জিত। এক সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে অভিনেতা জানান, আরো কয়েকটি ছবি একসঙ্গে করার কথা ছিল তাঁদের। গল্প শুনিয়েছিলেন ঋতুপর্ণ। কিন্তু কোনো কারণবশত সেই ছবিগুলো আর করা হয়নি তাঁদের।
চিরঞ্জিত বলেন, তাঁর পরিচালিত ‘ভয়’ ছবিটি দেখে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন ঋতুপর্ণ। নিজের ভাললাগার কথা জানিয়েছিলেন। যোগাযোগ থেকেই পরে বন্ধুত্ব হয়। চেনাজানা ঋতুপর্ণর বাইরে অনেক কথা সাক্ষাৎকারে শেয়ার করেছেন চিরঞ্জিত। তিনিই জানান, শেষের দিকে তাঁদের মধ্যে যোগাযোগ ছিল ঠিকই। কিন্তু বন্ধুত্বটা ততটা ছিল না আর। এর কারণ কী?
সূত্রপাত হয় বাড়িওয়ালি ছবিটি দিয়ে। ঋতুপর্ণ ঘোষ পরিচালিত এই ছবিটি বেশ বিতর্কিত। আসলে এই ছবিতে কিরণ খের অভিনীত চরিত্রটির জন্য ডাবিং করেছিলেন অভিনেত্রী রীতা কয়রাল। কিন্তু ছবিটি যেহেতু জাতীয় পুরস্কারের জন্য গিয়েছিল তাই বলা হয়েছিল কিরণ নিজেই ডাবিং করেছেন।
অন্যদিকে চিরঞ্জিত জানান, তিনি নিজেও ডাবিং করেছিলেন ছবিতে। কিন্তু তাঁর থেকে এনওসি চেয়ে নিয়ে তাঁর ডাবিং বাদ দিয়ে সব্যসাচী চক্রবর্তীকে দিয়ে করান ঋতুপর্ণ। অভিনেতা বলেন, তাঁকে সে সময়ে অনেকেই বারণ করেছিল রাজি হতে। এমনকি সব্যসাচী নিজেও বলেছিলেন। কিন্তু ছবির স্বার্থে হ্যাঁ করে দেন চিরঞ্জিত। জাতীয় পুরস্কার জেতার সুযোগ হাতছাড়া হয় তাঁর।
চিরঞ্জিত বলেন, ঋতুপর্ণর প্রতি তাঁর কোনো অভিযোগ নেই। তিনি তাঁর গুণমুগ্ধ। কিন্তু ওই ছবিটার পর থেকেই তাঁদের বন্ধুত্ব ফিকে হতে শুরু করে। যোগাযোগ থাকলেও ওই টানটা আর ছিল না। পরবর্তীকালে চিরঞ্জিতের বাড়ির বারান্দায় শুটিংও করেছেন ঋতুপর্ণ। কিন্তু তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্বটা আর আগের মতো ছিল না।