‘KFC-র চপ বিক্রি নিয়ে তো কোনও কটাক্ষ হয় না!’, বললেন ‘চপশিল্প’ গবেষণার মাস্টারমাইণ্ড অধ্যাপক

বাংলাহান্ট ডেস্ক : ‘চপশিল্প’ (Chop Shilpo) নিয়ে গবেষণা করে রাতারাতি বেশ পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছেন মালদহের (Maldah) কণা সরকার (Kana Sarkar)। রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের (Raiganj College) স্নাতকোত্তরের ওই ছাত্রীর গবেষণার বিষয় নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গেছে রাজ্য জুড়ে।

জানা গিয়েছে, রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোলের স্নাতকোত্তরের (PG in Geography) চতুর্থ সেমিস্টারের ছাত্রী তিনি। তাঁর বিষয় ‘আর্বান জিওগ্রাফি’ (Urban Geography)। এই বিষয়েই গ্রামীন চপশিল্পের উপর গবেষণা করেছেন তিনি। তবে কণার থেকেও এই গবেষণার পিছনে অন্যতম অবদান রয়েছে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তাপস পালের (Dr. Tapas Pal)। গবেষণার বিষয়টি তাঁরই মস্তিষ্কপ্রসূত বলে জানিয়েছেন তিনি।

সব ছেড়ে হঠাৎ চপশিল্পই কেন? এই প্রশ্নের উত্তরে তাপসবাবু বলেন, ‘কণাকে অনেকেই কটাক্ষ করছে। প্রথমেই বলি ও একজন নিষ্পাপ ছাত্রী। আমিই ওকে এই বিষয়ে গবেষণা করতে বলি। চপ বিক্রির মধ্যে দিয়েও একটি পরিবার বা সমাজের কি কোনও উন্নতি হয় না? এটাই ছিল গবেষণার মূল বিষয়। চপ বিক্রির ক্ষেত্রে মহিলারা কতটা স্বনির্ভর, এতে সাধারণ মানুষের কতটা লাভ হয় তাও ছিল খতিয়ে দেখা হয়েছে। এই গবেষণা হয়েছে মালদার গাজল ১, ২ এবং করকোচ গ্রামকে কেন্দ্র করে।’

ড. তাপস পাল আরও বলেন, ‘এই গবেষণায় দেখা গিয়েছে চপ বিক্রি করে মহিলাদের গড় আয় মাসে প্রায় ৯ হাজার টাকা। পুরুষদের ক্ষেত্রে আয় একটু বেশি। পুরুষরা ১৫ হাজার টাকা বা তার থেকে সামান্য বেশি রোজগার করতে পারে।’ ২০১৮ সালের হওয়া একটি গবেষণার তথ্য তুলে তিনি বলেন, ‘দেশে ৮৩ শতাংশ আন অর্গানাইজড ইকোনমিক সেক্টর এবং ১৭ শতাংশ অর্গানাইজড ইকনোমিক সেক্টর। আমি এর আগে সেলুন, ঠেলাওয়ালাদের উপরে গবেষণা করেছি। প্রান্তিক মানুষদের নিয়ে কাজ এই প্রথমবার করিনি আমি।’

এই অধ্যাপক বলেন, ‘ফুড ইন্ডাস্টি তো আছেই। কেএফসি যা বিক্রি করে সেটাও তো চপই। সেটা নিয়ে তো কোনও সমালোচনা হচ্ছে না। তাহলে প্রান্তিক এলাকায় যাঁরা চপ বিক্রি করছেন তাঁদের নিয়ে গবেষণা করলেই যত আপত্তি?’

তাপসবাবু বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণা কথাটি কিন্তু লেখা হয়নি গবেষণাপত্রতে। বিশ্ববিদ্যালয়ে যে কপি জমা দেওয়া হয়েছে সেখানে একথা লেখা হয়নি। ব্যক্তিগত কপিতে যা কিছু লেখা যেতে পারে। মুখ্যমন্ত্রী কিন্তু এখন আমাদের আচার্য সেটাও মাথায় রাখতে হবে।’ তবে কণা সরকারের এই গবেষণা নিয়ে সমালোচনা করছেন অনেকেই। একাংশ আবার দাবি করছেন এর পিছনে মুখ্যমন্ত্রীরই প্রচ্ছন্ন মদত রয়েছে বলে।

Sudipto

সম্পর্কিত খবর