শিক্ষক নয়, প্রাথমিক স্কুলে অঙ্ক-ইংরেজির ক্লাস নেবেন সিভিক ভলান্টিয়াররা! আজব সিদ্ধান্তে শোরগোল

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) ইস্যুতে কঙ্কালসার দশা রাজ্যের। বিগত কিছুমাস ধরে আদালতের নির্দেশে একের পর এক চাকরি গিয়েছে শয়ে শয়ে ভুয়ো শিক্ষকদের। অন্যদিকে, সম্প্রতি গ্রুপ-সি এর দুর্নীতিতে চাকরি গেছে করণিকদেরও। বন্ধ হয়েছে স্কুলে আসা। সবমিলিয়ে এই চাকরি বাতিলে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে স্কুলগুলি। জনবল সংকটে ধুকছে সেগুলি। একদিকে শুন্য হচ্ছে পদ, আর অন্যদিকে আদালতে একাধিক মামলা হওয়ার দরুণ আটকে রয়েছে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া।

উল্লেখ্য, শিক্ষকের অভাবের জেরে সরকারি নির্দেশে শুধুমাত্র বাঁকুড়া (Bankura) জেলাতেই আটশোর অধিক স্কুল গেটে তালা ঝোলাতে বাধ্য। এই মহাসংকট পরিস্থিতিতে মুশকিল আসান করতে আজব এক সিদ্ধান্ত বাঁকুড়া জেলা পুলিশের। সেই জেলায় প্রাইমারি স্কুলে (Primary School) অঙ্ক-ইংরেজির ক্লাস নেবেন সিভিক ভলান্টিয়াররা (Civic volunteers)। এমনই বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করল বাঁকুড়া জেলা পুলিশ (District Police)।

বাঁকুড়া জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, খুদে পড়ুয়াদের অসুবিধার কথা মাথায় রেখে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে তারা। এই ‘অঙ্কুর’ প্রকল্পে জেলার জঙ্গলমহলের ৫টি থানার প্রতিটি অঞ্চলে একটি করে, পাশাপাশি বাকি অন্যান্য থানাগুলিতেও একটি করে শিক্ষাকেন্দ্র চালু হবে। এইভাবে এই কর্মসূচীর আওতায় মোট ১২৪ টি শিক্ষাকেন্দ্র শুরুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিক্ষাকেন্দ্রে প্রাথমিক স্তরের পড়ুয়াদের নিয়মিত অঙ্ক ও ইংরেজি শেখাবেন সংশ্লিষ্ট এলাকার সিভিক ভলান্টিয়াররা।

CivicMamata 1608659883475 1608659905429 1626663616527

বাঁকুড়া পুলিশের নেওয়া এই সিদ্ধান্তে শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা রাজ্যে। এই পরিকল্পনার তীব্র বিরোধিতা করে স্থানীয় সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডাঃ সুভাষ সরকার বলেন, ”সিভিক ভলান্টিয়াররা বাচ্চাদের অঙ্ক-ইংরাজি শেখাবে এটা একবিংশ শতাব্দীতে পশ্চিমবাংলার লজ্জা। সারা রাজ্য জুড়ে শিক্ষকের অভাব, স্কুল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। শিক্ষক নিয়োগ করতে পারছেন না। নিয়োগের ক্ষেত্রেও দুর্নীতি। এমন অবস্থা হলে সরকার চালানোর দরকার নেই, ছেড়ে দিন। তাইবলে কাউকে ভুল শেখানোর অধিকার নেই।”

প্রসঙ্গত, শুধু সুভাষবাবুই নন, জেলা পুলিশের নেওয়া এই সিদ্ধান্তে তীব্র সমালোচনার ঝড় উঠেছে সর্বত্র। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী টুইট করে বলেন, “সরকারি স্কুলে যাতে আর কেউ ভর্তি না হয় তাই শিক্ষার মান নামানোর ছক”। অন্যদিকে, সত্যিই কী এতটাই শোচনীয় রাজ্যের দশা যে শেষমেশ শিক্ষকদের বদলে সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে শিক্ষাদান করতে হচ্ছে? এই প্রশ্নই উঠছে জনমানসে।


Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর