বাংলাহান্ট ডেস্ক: হিজাব বিতর্কে (Karnataka Hijab Row) ফের যোগ হল নয়া মাত্রা। কর্ণাটক হাইকোর্টের তরফে বলা হয়েছিল, হিজাব পরা মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে কিনা এবং এটি একটি ধর্মীয় অনুশীলনের একটি অপরিহার্য অংশ কিনা তা বিবেচনা করা হচ্ছে। হাইকোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চের তরফে এও জানানো হয় যে হিজাব পরার বিষয়টি যতদিন বিচারাধীন থাকবে, ততদিন কোনও শিক্ষার্থীকে ধর্মীয় পোষাক পরার জন্য জোর করা যাবে না। পরে এই মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে যায়। এবার সেই মামলা ঘিরেই নতুন করে বিতর্ক দেখা দিল।
হিজাব মামলায় সুপ্রিম কোর্টের দু’জন বিচারপতি ভিন্ন রায় দিলেন। দু’জনেই আলাদা আলাদা রায় দেওয়ায় মামলাটি উচ্চতর ডিভিশন বেঞ্চে পাঠানো হল। এই মামলায় কর্ণাটক হাইকোর্টের রায়কে সঠিক আখ্যা দিলেন বিচারপতি হেমন্ত গুপ্ত। অন্যদিকে, এর বিরুদ্ধে রায় দিলেন বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া। হিজাব পরায় কর্ণাটক সরকারের নিষেধাজ্ঞা খারিজ করার সপক্ষে রায় দেন তিনি।
সুধাংশু ধুলিয়া এদিন বলেন, “কে হিজাব পরবে আর কে পরবে না, এটা একটা ব্যক্তিগত পছন্দের বিষয়। গ্রামীণ ভারতে একটি বাচ্চা মেয়েকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। সেই কথা মাথায় রেখেই প্রশ্ন করছি, আমরা কেন তার জীবনটাকে আরও কঠিন বানাচ্ছি?” দু’জন বিচারপতি ভিন্ন রায় দেওয়ার ফলে এই মামলাটি এবার সুপ্রিম কোর্টের উচ্চতর বেঞ্চে পাঠিয়ে দেওয়া হল। সেখানে এই মামলাটি শুনবেন ৩ জন বিচারপতির একটি ডিভিশন বেঞ্চ। তবে হিজাব মামলা প্রথমে শুনবেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি।
প্রসঙ্গত, গত ১০ ফেব্রুয়ারি কর্ণাটক হাইকোর্ট রায় দেয়, কোনও শিক্ষার্থীকে ধর্মীয় পোশাক পরার জন্য কোনওভাবেই জোর করা উচিত নয়। হাইকোর্টের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হন পড়ুয়ারা। মুসলিম মেয়েদের মৌলিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে, এই মর্মে করা হয় আবেদন। একইসঙ্গে হাইকোর্টের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ চাওয়া হয়।
উল্লেখ্য, কর্ণাটক হাইকোর্ট তার রায়তে জানিয়েছিল, হিজাব ইসলামের অপরিহার্য অঙ্গ নয়। স্কুল-কলেজ ক্যাম্পাসে হিজাব নিষিদ্ধ নয়, কিন্তু ক্লাসরুমে এবং ক্লাস চলাকালীন পরা যাবে না হিজাব। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চাইলে এই নিয়ে বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে আইন অনুযায়ী। শুধু ইসলাম নয়, সব ধর্মের পড়ুয়াদের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য এটা। ফ্রান্সে যেমন প্রকাশ্যে হিজাব পরা নিষিদ্ধ।
এই ঘটনার সূত্রপাত হয় উদিপির এক কলেজে মাথা ঢেকে ক্লাসে আসা নিয়ে। ছাত্রীদের জানিয়ে দেওয়া হয়, সরকারি নির্দেশে হিজাব পরে ক্লাসে আসা যাবে না। কলেজের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পথে নেমে প্রতিবাদ করেন মুসলিম পড়ুয়ারা। রীতিমতো উত্তাল হয় দেশ। মামলাটি কর্ণাটক হাইকোর্টে ওঠে।