বাংলাহান্ট ডেস্ক : আইপ্যাককে ঘিরে আবারও বিতর্কের ঝড় উঠল তৃণমূলের অন্দরে। এবার বিতর্কের কেন্দ্রে মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। এদিন সকালে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের ফেসবুক এবং ট্যুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট হয় তৃণমূলের ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতির সমর্থণে একটি পোস্টার। এরপরই বিস্ফোরক অভিযোগ এনে সোচ্চার হন তিনি।
অভিযোগের তীর সরাসরি আইপ্যাকের দিকে রেখে তিনি দাবি করেন তিনি কিছুই জানেন না এই ব্যাপারে। তাঁকে না জানিয়েই তাঁর অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে এই পোস্ট করেছে আইপ্যাক। তিনি বলেন, ‘আমি হঠাৎ শুনলাম আমার ফেসবুক ও ট্যুইটার থেকে ওয়ান পার্সন ওয়ান পোস্টকে সমর্থন জানানো হয়েছে। আমাকে জিজ্ঞেস না করেই এই কাজ করেছে আইপ্যাক। আমার পেজ ওরা তৈরি করেছিল। এই ঘটনায় আমি স্তম্ভিত। এই ব্যাপারে আমি ওদের জিজ্ঞেস করব। এটা কোনো কর্মসূচি ভাগ করে নেওয়া নয়।’
পুরো ব্যাপারটি নিয়ে দলের সঙ্গে কথা বলে তবেই সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছিলেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনি জানান, দলের ঊর্ধ্বে তাঁর কোনো ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নেই। দল যা বলবে তাই ই হবে এক্ষেত্রে।
অন্যদিকে এই অভিযোগ উড়িয়ে পক্ষান্তরে তৃণমূল নেতৃত্বকেই চোর বলে দাগল আইপ্যাক। এদিন প্রশান্ত কিশোরের সংস্থার তরফে ট্যুইট করে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, তৃণমূল বা কোনো তৃণমূল নেতা নেত্রীর সামাজিক মাধ্যম সামলায় না আইপ্যাক। ট্যুইটটিতে বলা হয়, ‘আইপ্যাক তৃণমূল বা তৃণমূল নেতৃত্ব কারোরই কোনো ডিজিট্যাল সম্পত্তি সামলায় না। যদি কেউ এইরকম দাবি করে থাকেন তাহলে হয় তিনি ডাহা মিথ্যাবাদী না হয় অজ্ঞ। কীভাবে দলের এবং নেতাদের ডিজিট্যাল সম্পত্তি (অপ)ব্যবহার হচ্ছে তা খতিয়ে দেখুক তৃণমূল।’
I-PAC doesn’t handle any digital properties of @AITCofficial or any of its leaders. Anyone making such claim is either uninformed or is blatantly lying.
AITC should look into if and how their digital properties and/or that of their leaders are being “allegedly (mis)used”.
— I-PAC (@IndianPAC) February 11, 2022
সম্প্রতি দলের মধ্যে এক ব্যক্তি এক পদ নীতি অনুসরণের ডাক দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথা মত এই নীতিকে সমর্থন জানান একাধিক যুব নেতা। ট্যুইটারে ট্রেন্ডিং হতে শুরু করে এই সংক্রান্ত হ্যাশট্যাগ। কিন্তু তারপরই বিতর্কের কারণ হয়ে যায় এই নীতি। দেখা যায় কলকাতাতেই একাধিক নেতা একই সঙ্গে একাধিক পদ দখল করে রয়েছেন৷ জেলাস্তরে প্রশ্ন উঠতে থাকে তবে কি সব নিয়ম খালি জেলার জন্যই? সাত খুন মাফ কলকাতার? এরপরই এই সংক্রান্ত সমস্ত পোস্ট মুছে দেওয়ার নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের তরফে জানানো হয়, এরকম কোনো নীতি নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্তই সর্বোচ্চ। এরপরই আজ সকালে মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের স্যোশাল মিডিয়ায় পোস্ট হয় এই পোস্টার।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই চরমে আইপ্যাক-তৃণমূল বিবাদ। এর মধ্যেই তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা মেসেজের মাধ্যমে মমতাকে জানিয়েছিলেন আইপ্যাক কর্তা প্রশান্ত কিশোর। তবে এবারের এই বিতর্ক যে সম্পর্কের কফিনে শেষ পেরেক হতে চলেছে এমনটাই মত পর্যবেক্ষক মহলের।