বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নারদ কান্ড নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। ২০১৬ সালে নারোদা স্টিং ফুটেজে পরপর টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল তৃণমূলের একাধিক হেভিওয়েট নেতাদের। সেই ফুটেজ সামনে আসার পর গ্রেপ্তার হন মদন মিত্রর মত দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতারা। যদিও তারপর থেকে ক্রমাগত ঢিমেতালেই চলছিল অনুসন্ধান পর্ব। কিন্তু এদিন মদন মিত্র, শোভন চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং ফিরহাদ হাকিমের গ্রেপ্তারিকে ঘিরে তেরা একবার রাজ্য রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এলো নারদ স্টিং অপারেশন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া চালানোর জন্য গত ৭ মে সিবিআইকে অনুমতি দেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। সেই সূত্র ধরেই গ্রেফতার করা হলো এই চার হেভিওয়েটকে। এদিন শুরু থেকেই অবশ্য গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে বিজেপির প্রতিহিংসার রাজনীতিকেই কারণ হিসেবে দেখিয়েছে তৃণমূল। রাজ্যের নেতা-মন্ত্রীদের গ্রেপ্তারের কথা শুনেই সোজা নিজাম প্যালেসে ছুটে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে ১৫ তলায় সিবিআইয়ের অফিসের সামনে কার্যত ধর্নায় বসেন তিনি।
এভাবে গ্রেপ্তার অনৈতিক, নোটিশ ছাড়া এভাবে কাউকে গ্রেফতার করা যায় না এটাই ছিল তাঁর দাবি। আর সেই সূত্র ধরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাকেও গ্রেপ্তার করার দাবি জানান। এর পরেই নিজাম প্যালেসের সামনে শুরু হয় তৃণমূল সমর্থকদের জমায়েত। কার্যত সিবিআইয়ের আধিকারিকদের উদ্দেশ্যে ইটবৃষ্টি করতে থাকেন বেশ কয়েকজন তৃণমূল সমর্থক। পরিস্থিতি এই মুহূর্তে প্রায় রণক্ষেত্রে চেহারা নিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কোনোভাবেই আদালতে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় গ্রেপ্তার হওয়া নেতা-মন্ত্রীদের। সেই কারণেই এবার ভার্চুয়াল পদ্ধতির আশ্রয় নিল ব্যাঙ্কশাল কোর্ট। জানানো হয়েছে, আদালতে গিয়ে কাগজপত্র জমা দেবেন আইনজীবীরা। অন্যদিকে নিজাম প্যালেসে বসেই ভার্চুয়াল শুনানিতে অংশ গ্রহণ করবেন ফিরহাদ, শোভন, সুব্রত এবং মদন মিত্ররা।
অন্যদিকে নিজাম প্যালেসের নিচে এই মুহূর্তে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে পরিস্থিতি। বেলা একটা নাগাদ এজিসি বোসের রোডের উড়ালপুলের তলায় জমা হন প্রায় কয়েকশো তৃণমূল কর্মী সমর্থক। কেন্দ্রীয় জাওয়ানদের উদ্দেশ্যে ইট কাচের বোতল ইত্যাদি ছুড়তে থাকেন তারা। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য লাঠিচার্জও করতে হয় পুলিশকে। আহত হন অনেক সাংবাদিকও। রাজ্য পুলিশ ঘটনা সামাল দিতে হিমশিম খেয়ে যায়। ভিতরে তখন রয়েছে বিপুল কেন্দ্রীয় বাহিনী। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য এদিন সকালে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে বাড়ি ঘেরাও করে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় পরিবহন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, বিধায়ক মদন মিত্র এবং প্রাক্তন কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। বেলা একটা নাগাদ পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হলেও এই মুহূর্তে তা কিছুটা প্রশমিত। যদিও এখনও রয়েছে নিজাম প্যালেসের সামনে তৃণমূল কর্মীদের জমায়েত। নারদ কান্ড নিয়ে এই মুহূর্তে ফের একবার রাজ্য রাজনীতিতে উত্তেজনা চরমে। যদিও একদিক থেকে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সহ আরো অনেকেই দাবি করেছেন, এই পুরো ঘটনাই আসলে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এছাড়া মুকুল রায় এবং শুভেন্দু অধিকারীর গ্রপ্তারি না হওয়া নিয়েও সরব হয়েছেন তারা। তবে আগামী কয়েকদিন এ ঘটনা যে রীতিমতো পরিস্থিতি তৈরি করবে তা বলাই বাহুল্য।
‘ভারত আজ পর্যন্ত অলিম্পিকে সোনা পায়নি …’ ভরা মঞ্চে বেফাঁস মমতা