বাংলা হান্ট ডেস্ক: ভোটে জেতার পর থেকেই একেবারে অ্যাকশন মুডে রয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বৃহস্পতিবার বিকেলে আরো একবার তারই প্রমাণ পাওয়া গেল রাজ্যের মন্ত্রী-আমলাদের নিয়ে করা এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে। এদিনের ওই বৈঠকে একেবারে রণং দেহি মূর্তিতে ধরা দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
কিন্তু হঠাৎ কেন এমন নিজের মন্ত্রী-আমলাদের ওপরেই চটলেন মুখ্যমন্ত্রী? জানা যাচ্ছে ইদানিং শহরের একাধিক জায়গায় সরকারি জমি, রাস্তাঘাট জবরদখল করে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে ভিন রাজ্যের বাসিন্দাদের। আর এই খবর কানে আসতেই এদিন মেজাজ হারিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই এদিনের বৈঠকে একেবারে স্পষ্ট কথায় মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন এক-শ্রেণীর নেতা আর পুরসভার কিছু কর্মীসহ বেশ কয়েকজন অফিসার টাকা নিয়ে রাজ্যের মধ্যেই বাইরের লোক বসাচ্ছেন।
কিছু আমলারাও এই কাজে জড়িত রয়েছেন বলে তাঁর অভিযোগ। সূত্রের খবর এখানে বাইরের লোক বলতে মুখ্যমন্ত্রী বোঝাতে চেয়েছেন ভিন্ন রাজ্যের লোকদের। আর এর ফলে রাজ্যের আইডেনটিটি নষ্ট হচ্ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কারণ বাংলার রাস্তাঘাট জবরদখল করে যারা বসে পড়ছেন তারা কেউই বাংলার মানুষ নন।
যার ফলে বাংলা জুড়ে জবরদখল চালাচ্ছে ভিন রাজ্যের অবাঙালি মানুষরা। শুধু তাই নয় তারা বৈধ নিয়মকানুন মেনেও থাকছেন না বলে অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। জানা যাচ্ছে এদিনের এই রুদ্ধদ্বার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি সুজিত বসু (Sujit Bose) সহ আরও অনেকের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। এই কথা প্রসঙ্গে এদিন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের থেকেও কৈফিয়ত চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: ভোটে জিতেও শান্তি নেই! শপথ গ্রহণের আগে এ কেমন চিঠি এল সায়ন্তিকার নামে?
এই ব্যাপারে যে তাদের ব্যর্থতা রয়েছে তাও খোলাখুলি বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর এদিন বৈঠক চলাকালীন তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকেও নিশানা করেছেন।এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘নতুন করে যাদের বসানো হচ্ছে তারা সব বাইরের লোক। প্রথমে একটা চাল লাগাচ্ছে। তার পর চারটে হকার বসিয়ে দিচ্ছে। একটা ভেন্ডারের ৬টা দোকান। দখল করে নিচ্ছে বাংলাটাকে।’
এর ফলে রাজ্যের রাজস্বের ব্যাপক ক্ষতির কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন,রাজ্যের রাজস্ব থেকে পাঁচটা রাজ্যের লোক এর খরচ বইতে হচ্ছে। তাই এদিনের বৈঠকে পুরমন্ত্রী হাকিমের দিকে তাকিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘ এসবের জন্য তোমরা দায়ী’। তবে যত দ্রুত সম্ভব এই সমস্যার নিষ্পত্তি চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আর তার জন্য কলকাতা,হাওড়া সহ বিধাননগর পুরসভাকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সেই সাথে তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন আগে থেকে ঢাকঢোল পিটিয়ে নয়, বাংলা থেকে এই জবরদখল উচ্ছেদ অভিযান শুরু করতে হবে পরিকল্পনা মাফিকভাবে।