বাংলাহান্ট ডেস্ক : পুরুলিয়ার প্রশাসনিক বৈঠক থেকে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মীদের কড়া ধমক দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার ওই বৈঠকের মঞ্চ থেকেই সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং কাজে গাফিলতির অভিযোগের প্রেক্ষিতেও ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেল তাঁকে।
এদিনের এই সভায় অভিযোগ ওঠে এলাকার ইঁটভাটার শুল্ক আদায় নিয়ে বড়সড় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে স্থানীয় প্রশাসনকে। শুল্কের একটা বড়সড় অংশ ঢুকে যাচ্ছে কাটমানি হিসেবে। হুড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এই প্রসঙ্গে অভিযোগ তোলেন, ‘ইঁটভাটার শুল্ক আদায় হলেও তা জমা পড়ে না সরকারের খাতায়। ২৫ হাজার টাকা আদায় হলে ১০ হাজার টাকা জমা পড়ে সরকারের কাছে। বাকিটা বিশেষ কিছু মানুষের পকেটে ঢুকে যায়। ‘
এহেন অভিযোগ শোনা মাত্রই কার্যতই রাগে গর্জে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলা শাসকদের উদ্দ্যেশ্য করে তিনি বলেন, ‘ডিএম তুমি শুনতে পাচ্ছে? এটা তৃণমূল করেনি। প্রশাসনের নীচুতলায় যারা শুল্ক আদায় করে তারা সেই টাকা সরকারের ঘরে জমা দেয় না। কিছুটা দেয়। বাকীটা নিজেরা খেয়ে নেয়। কী জেলা চালাচ্ছো তুমি! এতদিন ধরে আছো! আমার ধারনাটাই বদলে গেল। এতকিছু দিচ্ছি মানুষকে। অথছ কিছু লোক এত লোভী কেন! আমার পার্টির লোক হলে টেনে চারটে থাপ্পড় মারতাম। এদের আমি সব সময় শাসন করি।’
এছাড়াও সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ যাঁরা লেখাপড়া জানেন তাঁদের নিয়ে তো সমস্যা নেই। তাঁরা নিজেদের কাজ নিজেরা করে নিতে পারে। কিন্তু যাঁরা লেখাপড়া জানেন না, সেই গরীব মানুষরা কী করবেন? তাঁদের সাহায্য না করলে কীকরে চলবে?’ এই প্রসঙ্গে ভূমি সংস্কার দপ্তরের বিরুদ্ধে ওঠা একের পর এক হেনস্তার অভিযোগ তুলে আনেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি আরও বলেন, ‘বলরামপুর বিএলআরও অফিসের সামনে ২টি দোকান আছে। সেখান থেকেই বিএলআরও অফিস চলে। জমি সংক্রান্ত কোনও কাজে গেলে মানুষকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় সেই দোকানে। অফিসের লোকেরা মানুষকে বলে দিচ্ছেন ওই দোকানে গিয়ে জেনে আসতে হবে। ওই দোকানে গরীব আদিবাসীদের জানানো হয় জমির মিউটেশন ও অন্যান্য কাজ করতে অতিরিক্ত কত টাকা লাগবে।’ এহেন সমস্যার সমাধানে আগামী ৩ মাসের মধ্যে দুয়ারে সরকার প্রকল্পের মাধ্যমে সকলের জমিতেই মিউটেশন করিয়ে দেওয়া হবে বলেই আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।