এবার ঘুরবে ‘খেলা’! কয়লা পাচার মামলায় চরম পদক্ষেপ আদালতের, এক নির্দেশে ঘুম উড়ল সবার!

   

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিগত প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে কয়লা পাচার মামলা (Coal Smuggling Case) নিয়ে টানাপোড়েন চলছে। কিন্তু এখনও এই মামলার সেই কূলকিনারা হয়নি! মঙ্গলবার আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে (Asansol Special CBI Court) এই নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ভূমিকা। কবে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে? সিবিআই (CBI) আর কোনও চার্জশিট জমা দেবে কিনা? এমন একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়ে তদন্তকারী সংস্থা।

গতকাল বিচারপতি রাজেশ চক্রবর্তী স্পষ্ট জানিয়েছেন, বিচার আর দেরি করতে চায় না আদালত। গতকালের শুনানিতেই সকল অভিযুক্তকে আদালতে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে ৪৩ জনের মধ্যে ৪০ জন হাজির হলেও, বাকি ৩ জন এদিন আসেননি। এর মধ্যে বিনয় মিশ্র ফেরার এবং বাকি দু’জন শারীরিক অসুস্থতার কারণে আসতে পারেননি বলে জানান তাঁদের আইনজীবী।

সেকথা শোনার পর আগামী শুনানিতে দু’জনকে উপস্থিত থাকতেই হবে বলে জানান বিচারপতি রাজেশ চক্রবর্তী। দরকার হলে অ্যাম্বুলেন্স করে হলেও তাঁদের হাজির করাতে হবে বলে নির্দেশ দেন তিনি। অন্যদিকে বিনয়ের সম্বন্ধে সর্বশেষ কী আপডেট রয়েছে সেটাও গতকাল জানতে চায় আদালত। জবাবে সিবিআই জানায়, সে এখনও ফেরার।

আরও পড়ুনঃ বসিরহাটে তৃণমূলে তৃণমূলে লড়াই! খেলা ঘুরিয়ে দিল দলের লোকেরাই, চরম চাপে জোড়াফুল

এদিকে অভিযুক্তদের আইনজীবী আবার দাবি করেন, সিবিআইয়ের রিপোর্টের কপি তাঁদের দেওয়া হয়নি। সেই কারণে মামলার সম্বন্ধে তাঁরা কিছু বুঝতে পারছেন না। কেন্দ্রীয় এজেন্সির তরফ থেকে তখন জানানো হয়, এতজনকে ২৫,০০০ পাতার ‘হার্ড কপি’ দেওয়া অসম্ভব। সেকথা শুনে প্রত্যেক অভিযুক্তকে ‘সফট কপি’ দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক।

গতকালের শুনানিতে বিচারপতি রাজেশ চক্রবর্তী জানতে চান, তদন্তপ্রক্রিয়া কতদূর এগিয়েছে? জবাবে সিবিআই জানায়, এখনও একজন সরকারি আধিকারিককে জেরা করতে হবে। গত ১৬ এপ্রিল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এর অনুমতি চাওয়া হলেও এখনও অনুমতি মেলেনি বলে জানায় কেন্দ্রীয় এজেন্সি। একথা শুনে বিচারক সঙ্গে সঙ্গে বলেন, গত সাড়ে তিন বছর ধরে এই মামলা চলছে, তাহলে এত দেরিতে কেন জেরার অনুমতি চাওয়া হচ্ছে? কেন্দ্রীয় এজেন্সি আর কোনও চার্জশিট জমা দেবে কিনা তাও জানতে চায় আদালত। সিবিআই বলে, আর একটি চার্জশিট জমা করা হতে পারে।

Coal smuggling case

গতকাল বিচারপতি স্পষ্ট জানিয়েছে, সিবিআই আর কোনও চার্জশিট দিক বা না দিক দ্রুত চার্জ গঠন করে এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। আগামী ২১ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আগামী ৩ জুলাই চার্জ গঠন করার নির্দেশ দিন তিনি। মামলার পরবর্তী শুনানিও সেদিনই রয়েছে। আদালত বলে, এই মামলায় অনেক বয়স্ক অভিযুক্ত রয়েছেন। তাঁদের প্রত্যেকের বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে।

অন্যদিকে সিবিআইয়ের আইনজীবী রাকেশ সিং আবার কয়লা পাচার মামলার অন্যতম অভিযুক্ত অনুপ মাঝি ওরফে লালাকে জেরার অনুমতি দেওয়ার আবেদন জানান। কীভাবে, কখন জেরা করা হবে তা আদালতকে জানাতে বলেন বিচারপতি। এদিকে অনুপের আইনজীবী অভিষেক মুখোপাধ্যায় পাল্টা প্রশ্ন করেন, অনুপকে নিতুড়িয়ায় নিজ এলাকার মধ্যেই থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁকে বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। তাহলে তাঁকে যদি জেরার জন্য ডাকা হয় তিনি কীভাবে যাবেন? একথা শুনে বিচারপতি বলেন, সিবিআই যেদিন জেরার জন্য ডাকবে, সেদিন অনুপকে বেরনোর অনুমতি প্রদান করা হবে।

Sneha Paul
Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তরের পর সাংবাদিকতা শুরু। বিগত প্রায় ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর