বাংলাহান্ট ডেস্ক : বহু স্মৃতি বিজড়িত কলকাতার কফি হাউস (Coffee House)। পাঁজরে পাঁজরে কতই না অজানা গল্প নিয়ে আজও মাথা তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে ইন্ডিয়ান কফি হাউস (Coffee House)। প্রবীণ থেকে নবীন, প্রজন্মের পর প্রজন্মের আড্ডা বসেছে কফি হাউসে। কিন্তু প্রতিদিন এই কফি হাউসেই এমন একজন ব্যক্তি আসেন যাঁর স্মৃতিতে রয়েছে দেশের স্বাধীনতা থেকে শুরু করে নেতাজি, স্বামী বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো মনীষীরা। তিনি কফি হাউসের (Coffee House) প্রবীণ সদস্য অমর মল্লিক।
৯০ পেরিয়েও কফি হাউসে (Coffee House) আসেন অমর মল্লিক
মাত্র ১৫ বছর বয়সে দেশকে স্বাধীন হতে দেখেছেন তিনি। বর্তমানে তাঁর বয়স ৯২। প্রায় ৭১ বছর ধরে কফি হাউসে আসছেন অমর মল্লিক। এখনো এই বয়সেও নিয়মিত তাঁর কফি হাউসে (Coffee House) আসা চাই। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অবশ্য পরিবর্তন হয়েছে অনেক কিছুই। তাঁর সমবয়সীরা কেউই আর ইহজগতে নেই। আগে যেখানে বাড়ি থেকে কফি হাউস (Coffee House) লাগত পায়ে হেঁটে দশ মিনিট, তা এখন লাগে আধ ঘন্টা। তবুও এই জায়গাকে ভুলতে পারেননি অমর মল্লিক।
আরো পড়ুন : Deepika Padukone: অব্যাহত রইল উৎসব, গণেশ চতুর্থীর পরদিনই মা হলেন দীপিকা পাডুকোন
স্বাধীনতা থেকে নকশাল আন্দোলনের সাক্ষী কফি হাউস
রতু সরকার লেনের বাসিন্দা অমর মল্লিকের পরিবারে রয়েছেন ছেলে, নাতি এবং নাতির ছেলে। স্মৃতি হাতড়ে সংবাদ মাধ্যমকে তিনি জানান, আগে মাত্র দেড় টাকায় এক কাপ কফি পাওয়া যেত। নকশাল আন্দোলনের সময়ে ভোজালি হাতে এক যুবক ঢুকে পড়েছিলেন কফি হাউসে। ভারত যখন স্বাধীন হয় তখন অমর মল্লিক ১৫ বছরের তরুণ। প্রবীণ মানুষটির কথায়, ওই অনুভূতির সঙ্গে আর কোনো কিছুর তুলনা চলে না।
আরো পড়ুন : Dev: ‘CM এর নাম পাল্টে MP’, কুণালের কটাক্ষে পালটা দেব লিখলেন, ‘যাচাই না করে মন্তব্য না করাই ভালো’
স্মৃতিতে রয়েছেন নেতাজি-বিবেকানন্দ
৯০ পেরোনো অমর মল্লিকের স্মৃতিতে উজ্জ্বল নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, স্বামী বিবেকানন্দ। বাবার কোলে চেপে গিয়েছিলেন নেতাজির বাড়িতে। সে সময় শিকাগো থেকে ফিরেছেন স্বামী বিবেকানন্দ। বিদেশে হিন্দু ধর্মের বীজ অঙ্কুরিত করে নিজের দেশে এসেই উগ্র সংষ্কারবাদীদের তোপের মুখে পড়েছিলেন তিনি। অমর মল্লিক জানান, তাঁর ঠাকুরদার মামা গোপাললাল শীল নাকি সে সময়ে চন্দননগরের বাড়িতে দীর্ঘদিন লুকিয়ে রেখেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দকে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষ যাত্রার স্মৃতিও আজো টাটকা তাঁর মনে।
সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথায় আরো একটি ঘটনা জানান অমর মল্লিক। এক সময় তিনি ছিলেন বেঙ্গল ব্যাডমিন্টন অ্যাসোসিয়েশনের সহকারী সম্পাদক ছিলেন তিনি। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সে সময়ে তরুণ ব্যাডমিন্টন শিক্ষার্থীরা অনুশীলন করতেন। এতে নাকি একবার ইলেকট্রিক বিল মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। সেই ইলেকট্রিক বিল নিয়েই তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন অমর মল্লিক। মুখ্যমন্ত্রীর মাত্র দুটি কথায় সেই বিল আর দিতে হয়নি তাঁদের।